Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

কার ‘মন’ পেতে চান যাদবপুরের মনোজিৎ, প্রশ্ন পোস্ট ঘিরে

কে এই মনোজিৎ মণ্ডল? ইদানীং শাসকদলের ঘনিষ্ঠ এই শিক্ষকের ‘উত্থান’ই বা কী ভাবে হল? অভিযোগ, প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের পিছনে অন্যতম হাত এই মনোজিতের।

ফেসবুকে মনোজিৎ মণ্ডলের পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছবি: এপি।

ফেসবুকে মনোজিৎ মণ্ডলের পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছবি: এপি।

মধুমিতা দত্ত
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৬
Share: Save:

ফেসবুকে একটি পোস্ট লিখে যাদবপুর বিতর্কে নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তোলার চেষ্টা করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক মনোজিৎ মণ্ডল। ওই পোস্টে তিনি ঘুরিয়ে কটাক্ষ করেছেন শঙ্খ ঘোষ এবং সুকান্ত চৌধুরীকে। কারণ তাঁরা এবং বিশিষ্ট আরও কয়েকজন যাদবপুরের ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রবেশিকা পরীক্ষা রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। মনোজিৎবাবু বিষয়টিকে ‘ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি’ এবং ‘চৌধুরী ডাইন্যাস্টি’ বলে মন্তব্য করেন।

কে এই মনোজিৎ মণ্ডল? ইদানীং শাসকদলের ঘনিষ্ঠ এই শিক্ষকের ‘উত্থান’ই বা কী ভাবে হল? অভিযোগ, প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের পিছনে অন্যতম হাত এই মনোজিতের। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি। যে উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

তাঁর এই ফেসবুক পোস্টটি যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত তা মনোজিৎবাবু নিজেই কবুল করেছেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘ওটা খুবই ক্যজুয়াল পলিটিক্যাল কমেন্ট। কারও নাম ওখানে করা হয়নি।’’ কিন্তু তাঁর ওই পোস্টের লক্ষ্য যে শঙ্খবাবু এবং সুকান্তবাবুর মতো অধ্যাপকেরা, তা কি তিনি অস্বীকার করতে পারেন? প্রশ্ন এড়িয়ে মনোজিৎবাবুর মন্তব্য, ‘‘ওঁদের জ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে লাগলে খুশি হব।’’

মনোজিৎবাবুর ‘জ্ঞান’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কাজে’ কতটা লাগছে? সূত্রের খবর, কর্মসমিতির বৈঠকে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের উদ্দেশে রীতিমতো গলা চড়িয়ে কথা বলেন তিনি। তৃণমূল জমানায় তিনিই নাকি যাদবপুরের সব চেয়ে ‘প্রভাবশালী’ শিক্ষক নেতা। তৃণমূলের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার একটি গোষ্ঠীর মাথা তিনি। ঘটনাচক্রে তাঁর স্ত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার একটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রিয় বান্ধবী’ হিসেবে ইতিমধ্যেই নানা কারণে বিতর্কিত।

যাদবপুরের শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের অনেকেরই দাবি, প্রবেশিকা বন্ধে শিক্ষামন্ত্রীর ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার মূল কারিগর মনোজিৎবাবুই। কর্মসমিতির বৈঠকে তিনি নাকি জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটুটে প্রবেশিকা পরীক্ষার কথা বলা নেই। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অ্যাডভোকেট জেনারেলের দ্বারস্থ হন।

মনোজিৎবাবুর অবশ্য বক্তব্য, প্রবেশিকা তুলে দেওয়ায় তাঁর ভূমিকা নেই। তাঁর দাবি, স্ট্যাটিউটে প্রবেশিকা পরীক্ষার কথা বলা নেই। কিন্তু অন্য পদ্ধতির কথা বলা আছে। সে বিষয়েই কর্মসমিতির বৈঠকে তিনি সওয়াল করেছিলেন বলে তাঁর দাবি।

তবে, পড়ুয়াদের চোখে তাঁর ভূমিকা যে খুব ‘ইতিবাচক’ নয়, তার প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক একটি ঘটনায়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের প্রতিবাদে পড়ুয়াদের মিছিল যাচ্ছিল ক্যাম্পাসের গাঁধী ভবনের সামনে দিয়ে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মনোজিৎবাবু। তাঁকে দেখে স্লোগান ওঠে— ‘ভর্তি নিয়ে গন্ডগোল/দায়ী মনোজিৎ মণ্ডল’।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy