Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Government Schools

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সরকারি স্কুলের সাফল্য কি পাঠ্যক্রমের বদলেই 

রাজ্য জুড়ে সরকারি স্কুলের সংখ্যা হল ১৪৫টি। এর মধ্যে ৩৯টি স্কুল পুরনো। এর বাইরে রয়েছে সরকার পোষিত ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুল।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪ ০৭:৩৪
Share: Save:

তা হলে কি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি? মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, জয়েন্ট এন্ট্রান্স এবং ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে মেধা তালিকায় এ বার সরকারি স্কুলগুলির পড়ুয়াদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। সম্প্রতি হিন্দু স্কুলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, জয়েন্ট এন্ট্রান্স এবং নিটে মেধা তালিকায় থাকা পড়ুয়াদের নিয়ে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। সেখানে উপস্থিত শিক্ষকেরা জানালেন, সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পাঠ্যক্রম এবং প্রশ্নপত্রের খুব বেশি তফাত থাকছে না এখন। স্কুলগুলিও মেধাবী পড়ুয়াদের পাশে থাকছে। এর ফলেই এসেছে সাফল্য।

হিন্দু স্কুলের পড়ুয়া অর্ঘ্যদীপ দত্ত এ বার নিটে পূর্ণ নম্বর ৭২০ পেয়ে প্রথম হয়েছেন। অর্ঘ্যদীপ বলেন, ‘‘নিটের প্রস্তুতি নিতে গিয়েই উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতির প্রায় ৯০ শতাংশ হয়ে গিয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম ও প্রশ্নপত্র যদি সর্বভারতীয় প্রশ্নপত্রের থেকে পুরো আলাদা হত, তা হলে প্রস্তুতি আলাদা নিতে হত। সেটা হয়নি।’’ অর্ঘ্যদীপ শুধু নিটেই প্রথম হননি, উচ্চ মাধ্যমিকেও অষ্টম স্থান অধিকার করেছেন।

রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম, জয়েন্ট অ্যাডভান্সে মেধা তালিকায় ৪৮৯ স্থানে রয়েছেন বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র কিংশুক পাত্র। শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে তিনি পেয়েছেন ৬৭০ নম্বর। কিংশুক বলেন, ‘‘নিট বা জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মতো সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর করতে যে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেই প্রস্তুতিতেই উচ্চ মাধ্যমিকের সাফল্য এসেছে। খুব বেশি আলাদা খাটতে হয়নি।’’

লালবাগের সরকারি স্কুল নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশনের ছাত্র রূপায়ণ মণ্ডল নিটে পূর্ণ নম্বর ৭২০ পেয়েছেন। রূপায়ণ বলেন, ‘‘সিবিএসই পাঠ্যক্রমের সঙ্গে নিটের পাঠ্যক্রমের মিল রয়েছে বেশি। তাই যাঁরা নিটে সাফল্য পেতে চান, তাঁরা সিবিএসই বোর্ডে একাদশ-দ্বাদশ পড়েন। তবে আমাদের রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠ্যক্রম পড়ে নিটের প্রস্তুতির অসুবিধা হয়নি। আগে উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রমের সঙ্গে নিট বা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার পাঠ্যক্রম ও প্রশ্নের পার্থক্য বেশি ছিল। এখন এই পার্থক্য কমছে।’’ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা পাঠ্যক্রম অনেক পরিবর্তন করছি। সিমেস্টার পদ্ধতি চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের বোর্ডের পড়ুয়ারা আরও ভাল করবেন।’’

রাজ্য জুড়ে সরকারি স্কুলের সংখ্যা হল ১৪৫টি। এর মধ্যে ৩৯টি স্কুল পুরনো। এর বাইরে রয়েছে সরকার পোষিত ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুল। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘বহু সরকারি স্কুলে এখন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকাটাই বড় সমস্যা। তবু নানা অসুবিধার মধ্যেই চেষ্টা করছি পড়ুয়াদের ভাল ফল করানোর। এ বারের ভাল ফল কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। স্কুলের মান বাড়ছে বলেই ভাল ফল হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE