মাত্র দু’জন মহিলা সাব ইনস্পেক্টর। তাঁদের এক জন রয়েছেন দীর্ঘদিনের ছুটিতে। এ ছাড়া আছেন ছ’জন মহিলা কনস্টেবল আর পাঁচ জন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার।
শিয়ালদহের মতো এত ব্যস্ত স্টেশনে মহিলাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব এই সাত মহিলা পুলিশ এবং পাঁচ মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের কাঁধে। এর ফলে যাত্রী এবং সামগ্রিক নিরাপত্তার নজরদারিতে বড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে, মানছেন রেল পুলিশের আধিকারিকেরা।
মহিলা পুলিশকর্মীর অভাব রয়েছে হাওড়া স্টেশনেও। এক জন মহিলা ইনস্পেক্টর, চার জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর, ১১ জন কনস্টেবল এবং ১০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন হাওড়া স্টেশনে মহিলা নিরাপত্তার দায়িত্বে। পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, মহিলা পুলিশের অভাব সেখানে শিয়ালদহের মতো নয়।
শিয়ালদহ স্টেশনে মহিলা পুলিশকর্মীর অভাব বোঝা যায়, যাত্রীদের অভিযোগ শুনলেই। তাঁদের অভিযোগ, স্টেশনের মহিলা সহায়তা কেন্দ্রে গেলে কোনও সাহায্য মেলে না। বেশির ভাগ সময় ওই সহায়তা কেন্দ্রে তালা ঝোলে। মহিলা পুলিশকর্মী পর্যাপ্ত না থাকায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অসুবিধার সন্মুখীন হতে হয় বলে দাবি করছেন যাত্রীরা। মহুয়া মজুমদার নামে এক যাত্রী জানান, দিন কয়েক আগে কল্যাণী লোকাল থেকে শিয়ালদহে নেমে এক মহিলা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য মহিলা পুলিশের খোঁজ করা হয়। কিন্তু কারও দেখা পাওয়া যায় না। মহুয়াদেবী বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত আমরা ওঁকে মহিলা সহায়তা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, সহায়তা কেন্দ্রের তালা বন্ধ। পরে আমরাই চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যাই।’’
নিত্যযাত্রীদের মতে, লোকাল ট্রেনের কামরায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু গোলমাল লেগেই থাকে। মহিলা কামরার ক্ষেত্রে তা মেটাতে পুরুষ পুলিশ এলেও, কিছু গোলমালের ঘটনায় মহিলা পুলিশ থাকলে সুবিধা হয়। অভিযোগ, অপর্যাপ্ত মহিলা পুলিশকর্মীর সুযোগে দাপট বেড়েছে মহিলা ছিনতাইকারীর। পুলিশ সূত্রের খবর, বাচ্চা কোলে নিয়ে মহিলা ছিনতাইকারীর দল শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে যথেষ্ট সক্রিয়। এরা মোবাইল ছিনতাইয়ে পারদর্শী। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের মহিলা কামরায় উঠে নিরবে মোবাইল চুরি করে নেমে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশের নজরদারি থাকলে এদের এত বাড়বাড়ন্ত হত না বলে দাবি যাত্রীদের।
কেন মহিলা পুলিশকর্মী এত কম? শিয়ালদহ জিআরপি-র এক আধিকারিকের মতে, রাজ্য জুড়ে পুলিশে প্রচুর পদ শূন্য রয়েছে। যথারীতি মহিলা পুলিশেও শূন্য পদের সংখ্যা প্রচুর। তার জের পড়েছে শিয়ালদহ স্টেশনে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, এমনিতেই মহিলা পুলিশকর্মী কম। তাঁরাই আবার মহিলা আসামিদের থানায় নেওয়া, আদালতে নিয়ে যাওয়া ও নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ সবেরই ফাঁকে ফাঁকে চলে স্টেশন চত্বরে নিরাপত্তার দেখভাল। পুলিশ আধিকারিকেরা কার্যত স্বীকার করেছেন, পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ না থাকায় মহিলা সহায়তা কেন্দ্রটি বেশির ভাগ সময়েই বন্ধ করে রাখতে হয়। যদিও রেলপুলিশ সুপার (শিয়ালদহ) অশেষ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘আমাদের মহিলা পুলিশের যে পরিকাঠামো আছে, তা দিয়েই বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’’
অন্য দিকে, রেল পুলিশ সুপার (হাওড়া) নীলাদ্রি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের এখানে পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশকর্মী আছেন। তবে আরও বেশি মহিলা পুলিশকর্মী পেলে নজরদারিতে সুবিধা হয়। যেটুকু অভাব রয়েছে, তা সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে পূরণ করতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy