Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Books

বই তুলতে ভরসা পাচ্ছেন না বিক্রেতারা, ফিরছে পড়ুয়া

নতুন ক্লাসে দরকার নতুন পাঠ্যবই, সহায়ক বইও। কিন্তু অভিযোগ, পাড়ার দোকান তো বটেই, পড়ুয়াদের চাহিদা অনুযায়ী বইয়ের জোগান নেই কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়াতেও।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০২:৩৮
Share: Save:

কেউ দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একাদশ শ্রেণীতে উঠেছে। কেউ আবার দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করে কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। নতুন ক্লাসে দরকার নতুন পাঠ্যবই, সহায়ক বইও। কিন্তু অভিযোগ, পাড়ার দোকান তো বটেই, পড়ুয়াদের চাহিদা অনুযায়ী বইয়ের জোগান নেই কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়াতেও। ক্রেতাদের অভিযোগ, বইয়ের সব দোকান খোলা থাকলেও সেখানে গিয়ে পাঠ্যবই মিলছে না। অন্য দিকে, বই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘ লকডাউনের ফলে বইয়ের জোগান নানা ভাবে বাধা পাচ্ছে। সেই সঙ্গে আমপানে ক্ষতির ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি অনেক ব্যবসায়ী। আমপানে বই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় যে লোকসান তাঁদের হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠে নতুন বই কেনার মত পুঁজি তাদের নেই। ক্রেতারাও সে ভাবে না আসায় বেশি করে নতুন বই রাখার ভরসাও পাচ্ছেন না তাঁরা।

বইপাড়ার একটি প্রকাশনীর এক আধিকারিক সুব্রত দত্ত জানান, প্রতি বছর এই সময়ে যত পাঠ্যবই বিক্রি হয়, এ বার তার এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আইসিএসই বা সিবিএসই বোর্ডের অনেক পাঠ্যবই এবং সহায়ক বই দিল্লি থেকে প্রকাশিত হয়। সেগুলি আমরা সরাসরি দিল্লি থেকে আনি। এ বার আর্থিক ক্ষতির কারণে অনেকেই বই আনাতে পারেননি। তা ছাড়া, এ বার করোনা পরিস্থিতির জেরে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগও ব্যাহত হয়েছে। ফলে আমাদের স্টকে যা বই আছে, তা দিয়েই চালাতে হচ্ছে। ক্রেতারা বই পাচ্ছেন না সব সময়ে।’’ কলেজ স্ট্রিটের পাঠ্যবইয়ের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা বই তুলতে ভরসা পাচ্ছেন না। কলকাতা ও শহরতলির ক্রেতাদের পাশাপাশি জেলার বহু ক্রেতা ও বই বিক্রেতারা কলেজ স্ট্রিট থেকে বই কিনে নিয়ে যেতেন। এখন ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁরা আসতে পারছেন না।

এক বই ব্যবসায়ী বুলবুল ইসলাম আবার জানাচ্ছেন, কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়ায় বেশ কিছু গলিতে করোনায় আক্রান্তদের সন্ধান মেলায় একটা আতঙ্কের পরিবেশও সৃষ্টি হয়েছে। যে সব দোকানে দশ জন কর্মচারী নিয়ে চলত, সেখানে হয়তো তিন জন করে আসছেন। অনেক সময়ে ক্রেতাদের চাহিদা মত বই না থাকলে অন্য দোকান থেকে আনিয়ে দেওয়া হত। এখন দোকানের কর্মী কম থাকায় সেই পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। পরিবহণের সমস্যা থাকায় অনেকেই বেশ আগে দোকান বন্ধ করে চলেও যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

সকাল থেকে তাই দোকান খুললেও ফাঁকাই থাকছে বইপাড়া। এই অবস্থায় অনেকে অবশ্য অনলাইনে কেনাকাটার উপরে ভরসা করছেন। এক প্রকাশনী সংস্থার কর্ণধার শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘‘করোনার আতঙ্কে বইপাড়ায় না এসে অনেকে অনলাইনে বইয়ের অর্ডার দিচ্ছেন। কিন্তু কুরিয়ারের মাধ্যমে বই পাঠানোর খরচ অনেক বেশি। এই সময়ে কুরিয়ারে বই যেতেও দেরি হচ্ছে। যে এলাকা থেকে অর্ডার এসেছে সেই জায়গা কন্টেনমেন্ট জ়োন হয়ে গেলে বই পৌঁছে দেওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।’’ পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি কখনও দেখিনি। করোনা ও আমপানের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বই ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না। বইয়ের জোগানের পাশাপাশি ক্রেতারাও অভাব রয়েছে।’’

অন্য দিকে ক্রেতারা জানাচ্ছেন, কলেজ স্ট্রিটে গিয়েও সব সময়ে লাভ হচ্ছে না। সদ্য একাদশ শ্রেণিতে ওঠা, মানিকতলার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ রায় বলে, ‘‘কিছু সহায়ক বই পাড়ার দোকানে পাইনি। সেগুলো কিনতে বাবার সঙ্গে কলেজ স্ট্রিটে গিয়েছিলাম। চারটে দোকান ঘুরেও পেলাম না। আমার কয়েক জন বন্ধুও বই না পেয়ে ফিরে গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Books Education Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy