বিপদ-মাথায়: দলে দলে সমাবেশে যোগ দিতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। শুক্রবার শিয়ালদহে। ছবি: শৌভিক দে
তাদের অনুপস্থিতি পুলিশের কপালের ভাঁজ কমাল। কিন্তু বাড়িয়ে দিল নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ।
শহরের ‘লাইফলাইন’ বেসরকারি বাস-মিনিবাস এ দিন শুধুই শাসক দলের ক্যাডারদের নিয়ে সকাল থেকে দৌড়ল ধর্মতলার দিকে। সরকারি বাস ছিল, কিন্তু মধ্য কলকাতার যানজটে ফেঁসে সকাল ১০টার পর থেকে তা-ও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করল। পাড়ায় পাড়ায় বাসস্টপে ভিড় করে নিত্যযাত্রীরা অপেক্ষা করলেন বাসের দেখা পাওয়ার আশায়।
২১ জুলাই সময় লাগবে, এই ভেবে প্রায় দু’ঘণ্টা হাতে নিয়ে রাজপুর থেকে অফিসের জন্য বেরিয়েছিলেন শশাঙ্ক সেন। কিন্তু আধঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরে ভিড়ে ঠাসা বাসে উঠে গলদঘর্ম হয়ে অফিসে ঢুকলেন কোনও মতে ‘লেট মার্ক’টা বাঁচিয়ে।
কেন এমন অবস্থা? বেসরকারি বাস মালিকেরা বলছেন, জেলায় বিকেল থেকেই বাস তুলতে শুরু করেছেন শাসক দলের ‘দাদা’রা। কলকাতায় আজ সকাল থেকে। তাঁদের দাবি, অন্য বছর বাস ম্যাটাডোর মিলিয়ে ধর্মতলার জন্য বুকিং হয়। এ বার বাসেরই চাহিদা বেশি ছিল। যে ক’টি বাস চলার সম্ভাবনা ছিল, তার অধিকাংশ শ্রমিকও ধর্মতলামুখী থাকায় অন্য দিন শহরে যা বাস চলে তার ৫% শুক্রবার চলেছে। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমাবেশ হওয়া মানেই আমাদের বাস নেওয়া হবে। এটাই মোটামুটি এ রাজ্যের নীতি। এ বার সেই জুলুম একটু বেশিই হয়েছে। তাই যাত্রিবাহী বাস সকাল থেকে বিশেষ চলেনি। কলকাতা কার্যত বন্ধের চেহারা নিয়েছে।’’
কিন্তু সরকারি বাস তো শাসক দলের সমর্থকেরা ভাড়া করেননি। তা হলে সরকারি বাসও রাস্তায় দেখা গেল না কেন?
পরিবহণ নিগমগুলির কর্তারা জানাচ্ছেন, এর অন্যতম কারণ কর্মীদের
দলে দলে ধর্মতলার সভায় যোগ দিতে যাওয়া। অন্য কারণ, যে সব বাস বেরিয়েছে, তারাও সকাল ১০টার পর থেকে হয় মধ্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় যানজটে আটকে গিয়েছে নয়তো অনেক ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে সময় নষ্ট হয়েছে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এস-৯ সবচেয়ে বড় রুট। সেই রুটের বাস সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের মধ্যে থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড, স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে ঘুরিয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে দিয়ে বের হয়েছে। এর জেরে ওই বাস যে সময়ে অন্য দিন দু’টি ট্রিপ করে, এ দিন একটা ট্রিপ করতে পেরেছে।’’
ফলে, বেলা যত বেড়েছে সরকারি বাস উধাও হয়েছে রাস্তা থেকে। আর দুর্ভোগ বেড়েছে নিত্যযাত্রীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy