ফাইল চিত্র।
কলকাতার পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ ছিল, বেপরোয়া গতিতে বা মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালালে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। সেই নির্দেশ মেনে শহর জুড়ে নাকা তল্লাশিতে গতিও এসেছিল। তার পরেই দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর নামে গাড়িচালকদের অযথা হয়রানি করছে পুলিশ। তার পরেই কমিশনারের নতুন নির্দেশ, নাকা তল্লাশি চলবে। তবে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না!
নাকা চেকিং নিয়ে সিপি-র বিভিন্ন নির্দেশে নাজেহাল হতে হচ্ছে কলকাতা পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশকে। অভিযোগ, এতে নিচুতলার কর্মীদের মনোবল ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাদের দাবি, সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ ঠিক নয়। হয়রানি কোনটা, কী ভাবে নির্ধারিত হবে তা নিয়েও তাঁদের বিভ্রান্তি হচ্ছে। বিশেষ করে মত্ত অবস্থায় এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ধরা পড়ার পরেও তাঁদের যখন ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এখানেই ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্তেরা ‘ক্ষমতা’ দেখিয়েই ছাড় পাচ্ছেন। গত মাসে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ট্র্যাফিক আইন ভাঙায় লেক থানা এলাকায় এক ব্যক্তিকে আটকায় পুলিশ। অভিযোগ, তিনি কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার বাল্যবন্ধু হওয়ায় মোটরযান আইনের ১৮৫ ধারায় মামলা রুজু করে কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁকে ছেড়ে দিতে হয়। ছাড়া হয় গাড়িটিও। অথচ আইন অনুযায়ী সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ছাড়া যায় না। পরের দিন বা আদালতে জরিমানা দেওয়ার পরেই থানা থেকে গাড়ি ছাড়া হয়।
আবার ৩০ অগস্ট রাতে মত্ত অবস্থায় বাইক চালানোর অভিযোগে গল্ফ গ্রিনে এক অভিনেতাকে আটকানো হয়। তাঁর এবং আরোহী যুবকের মাথায় হেলমেট ছিল না বলে দাবি পুলিশের। পরে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত চালক শাসক দলের প্রথম সারির নেতার আত্মীয়। ব্রেথ অ্যানালাইজার পরীক্ষায় তাঁর শরীরে ৯১ মিলিগ্রামের বেশি অ্যালকোহলও মিলেছিল বলে পুলিশ জানায়। ওই যুবকের রাজনৈতিক পরিচিতি প্রকাশ হওয়ায় চাপ আসার ভয় পেয়েছিলেন তাঁরা। এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, ‘‘এই অভিনেতাই পরে হয়তো বলবেন, তাঁকে অযথা হয়রানি করা হয়েছে।’’
কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসারদের অভিযোগ, ‘‘জুনের পর থেকে নাকা তল্লাশি চলাকালীন একাধিক ব্যক্তিকে শুধু প্রভাবশালীর পরিচিত বলে ছাড়তে হয়েছিল। অনেককে গাড়ি-সহ ছেড়ে দিতে হয়েছিল ‘উপরমহল’-এর চাপে।
পুলিশের একটি অংশের মত, কমিশনার বলছেন কড়া ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কানে শাসক দলের নেতাদের একাংশ অন্য খবর দেওয়ায় তিনি অন্য কথা বলছেন। ফলে কমিশনারও নির্দেশ বদলাচ্ছেন। এতে নিচুতলার কর্মীরা কোন নির্দেশ মানবেন, সেটাই বুঝতে পারছেন না। যদিও পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বলেছেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। আমি সকলকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy