প্রতীকী ছবি।
কলকাতার এক তরুণীকে তাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা, মারধর করা এবং দু’লক্ষ টাকা চেয়ে বাড়িতে ফোন করানোর অভিযোগ দায়ের হল বেনিয়াপুকুর থানায়। ওই তরুণীর বাড়ির লোক বিদেশ মন্ত্রকে যোগাযোগ করলে তাইল্যান্ডের ভারতীয় দূতাবাসের লোক গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে। অভিযুক্তদের সেখানে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ঘটনার উপরে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতর নজর রাখছে বলেও জানা গিয়েছে।
বেনিয়াপুকুরের গোরাচাঁদ রোডের বাসিন্দা ওই তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ার একটি ‘লাইভ শো’য়ের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাবি, ওই শো দেখে ‘বুক অ্যান্ড রিল্যাক্স’ নামে একটি ভ্রমণ সংস্থা যোগাযোগ করে তাদের হয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেয়। বলা হয়, তাইল্যান্ডে বিনা খরচে ঘোরানো হবে তাঁকে। তিনি যেখানে যাবেন, সেখানকার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হবে। তরুণীর কথায়, ‘‘আমি রাজি হই। এই ধরনের সংস্থাগুলো সাধারণত ট্র্যাভেল ব্লগ চালায়। আমার সঙ্গে এ রকম হবে ভাবিনি।’’
তরুণীর দাবি, গত ১৩ জুলাই তিনি ব্যাংকক পৌঁছন। সঙ্গে ছিলেন আরও আট জন তরুণ-তরুণী। ব্যাঙ্কক থেকে ওই দিনই তাঁরা পাটায়া চলে যান। সেখানে তাঁরা ১৫ জুলাই পর্যন্ত থাকেন। সেখান থেকে তাঁরা ফের ব্যাঙ্কক ফেরেন। ১৭ জুলাই তাঁরা চলে যান ফুকেট। সেখানকার একটি রিসর্ট থেকেই গত ১৮ জুলাই ওই তরুণীকে উদ্ধার করে ভারতীয় দূতাবাস। তরুণী বলেন, ‘‘প্রথম দু’দিন কিছু মনে হয়নি। অন্য রকম ব্যবহার করছিলেন সংস্থার মালিক ঋষি বুদ্ধদেব। এর পরে ১৬ তারিখ সব মেয়ের থেকে পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়। আমি পাসপোর্ট দিতে না চাওয়ায় বেধড়ক মারধর করা হয়। আমি মাকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। বন্ধুদেরও মেসেজ করেছিলাম। ওই মেসেজই ওই সংস্থার লোকজনের হাতে পড়ে যায়।’’ অভিযোগ, এ সবের জন্য তাঁকে হোটেলের ঘরে আটকে রেখে প্রতিদিন মারধর করা হত। পাশাপাশি জোর করেই একটি ‘লাইভ কম্পিউটর শো’-এ বসানো হত। সেখানে মানতে হত গ্রাহকদের নানা ‘প্রস্তাব’। তরুণী বলেন, ‘‘এর পরে ১৭ জুলাই মারধর করে বলা হয়, বাড়িতে ফোন করে দু’লক্ষ টাকা চাইতে। টাকা না এলে মাদক কারবারে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। আমি বাধ্য হয়ে টাকা চেয়ে বাড়িতে ফোন করি।’’
তরুণীর মায়ের দাবি, ‘‘ওই ফোন পেয়েই আমাদের ঘুম উড়ে যায়। রাতেই আমার এক আত্মীয় বিদেশ মন্ত্রকে মেল করে। তাতেই আমাদের কাছে ফোন আসে বিদেশ মন্ত্রক থেকে। সবটা বলার পরে ওখানকার ভারতীয় দূতাবাস মেয়েকে খুঁজে বার করে।’’ তরুণীর অভিযোগ, ‘‘ঋষি নামে ওই লোকটির কাছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোন যায়। তার পরে আমায় ধরে আরও মারধর করা হয়। ওই রাতেই স্থানীয় পুলিশ আর ভারতীয় দূতাবাসের লোক গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। প্রথমে দূতাবাস, সেখান থেকে শুক্রবার বিকেল চারটের বিমানে কলকাতায় ফিরতে পেরেছি আমি।’’
অভিযোগ পেয়ে দ্রুত মামলা রুজু করার পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে বেনিয়াপুকুর থানা। শনিবারই শিয়ালদহ আদালতে তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তাইল্যান্ড থেকে করা তরুণীর একটি ‘লাইভ শো’-এর ভিডিয়ো পুলিশের হাতে এসেছে। সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy