লাল পর্দার আড়ালে ঢাকা রয়েছে তাণ্ডবের ছাপ। বিদ্যাসাগর কলেজের অফিসের কাউন্টারে। নিজস্ব চিত্র
গত ১৯ সেপ্টেম্বর এবং ১৪ মে। তারিখ দু’টির মধ্যে তফাত চার মাস পাঁচ দিনের। ওই দু’টি দিনেই তাণ্ডবের সাক্ষী ছিল শহরের দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রবিন্দুতে একটিই রাজনৈতিক দল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবারের তাণ্ডব দেখে কী ভাবছে মাস কয়েক আগে আক্রান্ত হওয়া বিদ্যাসাগর কলেজ? শুক্রবার বিকেল তিনটে নাগাদ কলেজ প্রাঙ্গণের সামনে গল্পগুজবে ব্যস্ত কয়েক জন ছাত্রছাত্রী। কানে আসছিল পুজোর কেনাকাটা, ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা আর পড়াশোনা নিয়ে টুকটাক আলোচনা। প্রবেশপথে বিদ্যাসাগরের পূর্ণাবয়ব মূর্তিটি পিছনে রেখে এগোতেই দেখা গেল, ভাঙা দরজাগুলি সারানো হয়েছে। বসেছে একাধিক সিসি ক্যামেরা। নতুন করে বসানো হয়েছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। তবে সে দিনের তাণ্ডবের ছাপ রয়ে গিয়েছে টানা ঝোলানো লাল পর্দার আড়ালেই। কাচ ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছিল অফিসের কাউন্টারের। লাল পর্দা সরাতেই দেখা গেল, পড়ে আছে ভাঙা চেয়ার-টেবিল।
ঘরের ভিতরে বিদ্যাসাগরের নতুন মূর্তির সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে কয়েক জন পড়ুয়া। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা শুনে কী মনে হয়েছিল? প্রশ্ন শুনেই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছিলেন সকলে। ইংরেজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বললেন, ‘‘কলেজে আসতে বারণ করছিলেন বাবা-মা। গোলমালের আতঙ্কে। স্পেশ্যাল ক্লাসের জন্য এসেছি।’’ ক্লাসে উপস্থিতির হারে কি তবে সেই আতঙ্কের প্রভাব পড়েছে? কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছেন, প্রতিদিনের মতোই ছাত্র ও শিক্ষকদের উপস্থিতির হার ছিল স্বাভাবিক।
এখন অবশ্য কলেজে নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আশঙ্কা নেই বলেই দাবি করছেন বিদ্যাসাগর কলেজের দিবা বিভাগের তৃণমূল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি শুভম মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজে এখন ২৪ ঘণ্টাই পুলিশ থাকে। তাই ভয় নেই।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কাল যাদবপুরে কী হয়েছিল, তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য ঘুরছে। তবে যা-ই ঘটে থাক, দায়ী উভয় পক্ষই।’’ ভূগোলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দীপ ঘোষের কথায়, ‘‘১৪মে কলেজে আসিনি। আর বৃহস্পতিবার ওই সময়ে পড়তে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে সব শুনি। তবে কলেজে না আসার কথা মনে হয়নি।’’
বিদ্যাসাগর কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা তথা শিক্ষক সমিতির সম্পাদক সোহিনী ঘোষ আবার যাদবপুরের প্রাক্তনী। তাঁর মতে, বৃহস্পতিবার এবং মে মাসের ঘটনা দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা। ঘটনাচক্রে দু’টি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত একটি রাজনৈতিক দল আর দু’টিই ঘটেছে শিক্ষাঙ্গনে। এর বাইরে মিল খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সব দলেই ছাত্র রাজনীতিতে সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। ফলে ওঁদের আবেগকে ঠিক ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। তাই বারবার লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।’’ কলেজের দিবা বিভাগের অধ্যক্ষ গৌতম কুন্ডু অবশ্য মনে করেন, পড়ুয়া-শিক্ষকদের মধ্যে যাদবপুরের ঘটনা কোনও প্রভাব ফেলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy