—প্রতীকী চিত্র।
বাড়ির দোতলা থেকে টেহিঁচড়ে নামানো হচ্ছে এক প্রৌঢ়াকে। নীচে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি। প্রৌঢ়া প্রাণপণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যাঁরা তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের হাত কামড়ে দিচ্ছেন। সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। সল্টলেকের আইএ ব্লকের একটি বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার এ ভাবেই একটি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় ওই প্রৌঢ়াকে। অবশ্য পুলিশি হস্তক্ষেপে তাঁকে পরে থানায় ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়। তবে, ওই প্রৌঢ়াকে মনোরোগী সাজিয়ে রিহ্যাবে পাঠানোর চেষ্টার অভিযোগে তাঁর স্বামী অরুণ মালাস ও সহযোগী সম্রাট চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ।
প্রৌঢ়া রুনু মালাসের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে রিহ্যাবের কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করেছে পুলিশ। খোঁজ চলছে তাঁদেরও। পুলিশ জানিয়েছে, প্রৌঢ়াকে ওই ভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর এক প্রতিবেশী থানায় ফোন করে খবর দেন। এর পরে প্রৌঢ়ার স্বামী ও তাঁর সহযোগীকে থানায় এনে চেপে ধরতেই রিহ্যাবের নাম জানা যায়। সেই রিহ্যাবে ফোন করে প্রৌঢ়াকে ফিরিয়ে আনতে চাপ দেয় পুলিশ।
রুনু জানান, গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ও তাঁর স্বামী আলাদা থাকেন। রুনু বলেন, ‘‘আমার ৬০ বছর বয়স। বৃহস্পতিবার বাড়ির ছাদে প্রাতর্ভ্রমণ করছিলাম। সেই সময়ে রিহ্যাবের লোকেরা বাড়ির ছাদে উঠে এসে আমাকে প্রায় চ্যাংদোলা করে নীচে নামিয়ে নিয়ে যান। মুক্তি পেতে ওঁদের হাতে কামড়ে দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। মারধর করে আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রিহ্যাবে পৌঁছনোর পরে আমাকে ইনজেকশন দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় যে, আমি মনোরোগী। ওঁরা আমাকে জানান, আমার স্বামী আমাকে ওখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওঁদের বলেছিলেন।’’ ‘শ্রুতি ফাউন্ডেশন’ নামে ওই রিহ্যাবের তরফে সুমন পাল বলেন, ‘‘মহিলার স্বামী ওঁদের খারাপ সম্পর্কের কথা গোপন করে আমাদের বিভ্রান্ত করেছেন। কোনও রোগীকে আনতে গেলে একটু জোর করতেই হয়। ওঁকে মারধর করা হয়নি। ওঁর স্বামী ও দুই ছেলে ওঁর চিকিৎসার জন্য আমাদের খবর দেন। আমরাও ওঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করব।’’
পুলিশ ও এলাকা সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ব্যক্তি ওষুধের ব্যবসায়ী। তাঁর সঙ্গে স্ত্রীর সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ দিন ধৃতদের বিধাননগর এসিজেএম আদালত তিন দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছে। অভিযুক্তের আইনজীবী অভিষেক মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমার মক্কেল নির্দোষ। তাঁকে তাঁর স্ত্রী ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy