লাইব্রেরির তাকে রয়েছে ১৪টি বিষয়ের ‘বই’। সেখানে থেকে পাঠকেরা বেছে নেবেন পছন্দের দু’টি বিষয়। ‘বই’গুলি ২৫ মিনিট ‘পড়া’র সুযোগ পাবেন তাঁরা। ছবিটা আর পাঁচটা লাইব্রেরির মতো মনে হলেও এখানে রয়েছে অনেকটা তফাৎ। এই লাইব্রেরির ‘বই’কে প্রশ্ন করতে পারবেন পাঠকেরা। তার জবাবও দেবেন ‘বই’য়েরা। কারণ, ১৪টি বিষয়ের ‘বই’-ই আসলে এক এক জন মানুষ। আর গ্রন্থাগারটি হল ‘হিউম্যান লাইব্রেরি’।
প্রায় দু’দশক আগে ২০০০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে তৈরি হয়েছিল ‘দ্য হিউম্যান লাইব্রেরি’। আন্তর্জাতিক ওই সংস্থার উদ্দেশ্য ছিল সমাজের এমন কিছু পরিস্থিতি আমজনতার সামনে তুলে ধরা, যার মুখোমুখি তাঁরা প্রতিদিন হন না। সে ক্ষেত্রে বাস্তব জীবনে ওই সব ঘটনার সামনে পড়েছেন, তেমন মানুষকেই বই হিসাবে পাঠকের সামনে আনা হয়। তাঁরা ভাগ করে নেন তাঁদের সেই অভিজ্ঞতার কথা।
কলকাতায় প্রথম বার হিউম্যান লাইব্রেরির এমন আসর বসছে আগামী ৬ জানুয়ারি। নিউ টাউনের রবীন্দ্রতীর্থের ওই আসরে বই হিসাবে থাকছেন ১৪ জন মানুষ। যাঁদের কেউ বিবাহ পরবর্তী জীবনে নির্যাতনের শিকার, কেউ যৌনকর্মী, কেউ সমকামী পুরুষ, কেউ রূপান্তরকামী মহিলা, কেউ এইচআইভি-র লড়াইয়ে জয়ী, কেউ ‘সিঙ্গল মাদার’, কেউ শিশু নিগ্রহের শিকার, কেউ ‘সোলো ট্রাভেলার’, কেউ ‘বডি শেমিং’য়ের শিকার। তাঁরা পাঠকদের শোনাবেন তাঁদের জীবনযুদ্ধের কথা।
হিউম্যান লাইব্রেরির কলকাতা চ্যাপ্টারের ফাউন্ডার এবং বুক ডিপো ম্যানেজার দেবলীনা সাহা বিষয়টি খোলসা করলেন। তিনি বলেন, ‘‘লাইব্রেরি বলতে সকলে যা বোঝেন, এটা তার থেকে আলাদা। আমরা বইকে প্রশ্ন করতে পারি না। বইয়ে যা লেখা রয়েছে তা পড়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু এই লাইব্রেরিতে পাঠক বইকে পাল্টা প্রশ্ন করতে পারবেন। আবার ‘বই’ চাইলেও পাঠককে প্রশ্ন করতে পারবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা এই আসরে বই হয়ে আসছেন, তাঁরাও চান তাঁদের অভিজ্ঞতা অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিতে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ যদি ওই সব পরিস্থিতির সামনে পড়েন, তা হলে তাঁরা তা সম্মুখীন হওয়ার সাহস দেখাতে পারেন।’’
দেবলীনা জানান, ৬ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে হিউম্যান লাইব্রেরির আসর বসবে। সেখানে এক সঙ্গে পাঁচ থেকে ছ’জন পাঠক এক একটি বই পড়তে পারবেন। আর ওই আসরে যোগ দেওয়ার জন্য পাঠককে আলাদ করে কোনও টাকা দিতে
হবে হবে না। তাঁরা চাইলে রবীন্দ্রতীর্থে গিয়ে বা আগে থেকে নাম
নথিভুক্ত করতে পারবেন। দেবলীনার কথায়, ‘‘সোশ্যাল ট্যাবু সম্পর্কে সকলে জানানোই আমাদের উদ্দেশ্য।’’ যাতে সাড়া মিলছে ইতিমধ্যেই। হিউম্যান লাইব্রেরির আসর সম্পর্কে ফেসবুক থেকে জানতে পেরেছেন ঋজু মাইতি। তাঁর কথায়, ‘‘বিষয়টি জানতাম না। শুনেই কৌতুহল হচ্ছে। আসরে যাব ভাবছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy