কলকাতা মেট্রোয় এখনই প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছিচালকের অভাব রয়েছে। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা মেট্রোয় ক্রমশ বাড়ছে চালকের সঙ্কট। চলতি বছরের শেষে অন্তত ২০ জন মোটরম্যান বা মেট্রোচালকের অবসর নেওয়ার কথা। বর্তমানে কলকাতা মেট্রোয় উত্তর-দক্ষিণ (ব্লু লাইন), ইস্ট-ওয়েস্ট (গ্রিন লাইন ১ এবং ২), জোকা-মাঝেরহাট (পার্পল লাইন) এবং নিউ গড়িয়া-রুবি (অরেঞ্জ লাইন) পথে পরিষেবা চালু রয়েছে। আগামী বছর নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো বেলেঘাটা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে। এ ছাড়াও পরিষেবা শুরু হতে পারে নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর পথে (ইয়েলো লাইন)। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত পথও আগামী বছরেই জুড়ে যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পথে মেট্রো ছুটবে।
স্বাভাবিক ভাবেই, সংশ্লিষ্ট পথগুলিতে মেট্রো চলাচল শুরু হলে চালকের চাহিদা আরও বাড়বে। চলতি বছরে অনেক চেষ্টার পরে দক্ষিণ-পূর্ব রেল থেকে ২৫ জন চালককে আনতে পেরেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আপাতত তাঁদের প্রশিক্ষণ চলছে। সেই সঙ্গে মেট্রোর ইয়ার্ডে ট্রেন শান্টিংয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কয়েক জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে চালক হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। তবে, তার পরেও চাহিদা এবং জোগানের মধ্যে সমতা বজায় থাকবে কিনা, সেই সংশয় কাটছে না।
উল্লেখ্য, কলকাতা মেট্রোয় এখনই প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছি চালকের অভাব রয়েছে। বছরেরশেষে আরও চালক অবসর নিলে সেই ঘাটতি মিটিয়ে ভবিষ্যতের চাহিদা কী ভাবে পূরণ করা যাবে, মেট্রোর কর্মীমহলে তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, ইস্ট-ওয়েস্ট ছাড়াও নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর এবং জোকা-মাঝেরহাট মেট্রোপথে রেডিয়ো তরঙ্গ নির্ভর সিগন্যালিং ব্যবস্থা থাকছে। এই ব্যবস্থায় ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয় স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিতে। ফলে, চালকের সেই অর্থে দায়িত্ব থাকবে না। চালকের পরিবর্তে তাঁরা ভবিষ্যতে ট্রেন অপারেটর কাম স্টেশন কন্ট্রোলার পদে কর্মী নিয়োগ করতে চান।
যদিও প্রথম থেকেই কর্তৃপক্ষের এ হেন পরিকল্পনায় তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে মেট্রোর একাধিক কর্মী সংগঠন। বাম ঘনিষ্ঠ ‘মেট্রো রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়ন’ রেলের ধাঁচে সরাসরি চালক নিয়োগের দাবি তুলেছে। তাদের সর্বভারতীয় সংগঠন একই দাবি পেশ করেছে রেল বোর্ডে। বোর্ডের তরফে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবরের জন্য একটি কমিটি গঠিত হলেও মেট্রোকর্তাদের একাংশ তাঁদের অবস্থানে অনড় বলে অভিযোগ বাম কর্মী সংগঠনের।
প্রতিবাদ এসেছে শাসকদল ঘনিষ্ঠ ‘প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’-এর কাছ থেকেও। সংগঠনের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রেলে নিয়োগের বিধি এড়িয়ে আমরা মেট্রোয় ট্রেন অপারেটর নিয়োগ হতে দেব না। রেলের অধীনে থাকা মেট্রোয় এমন দ্বিচারিতা চলতে পারে না। যাত্রী সুরক্ষার স্বার্থে আমরা পুরোদস্তুর চালক নিয়োগ চাই।’’
শুধু চালকের সঙ্কটই নয়। কর্মী সংগঠনগুলির আরও অভিযোগ, লাইন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ৮৪ জন কর্মীকে রেল বোর্ডের কাজ এবং বিশ্রাম সংক্রান্ত নীতি লঙ্ঘনকরে টানা তিন বছর ধরে রাতে কাজ করানো হচ্ছে। বিধি অনুযায়ী,সংশ্লিষ্ট কর্মীদের টানা দু’বছরের বেশি এ ভাবে কাজ করানো উচিত নয় বলেই মেট্রো সূত্রে খবর। কিন্তু, সব মেট্রোপথেই গভীর রাতে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হওয়ায় ওই কর্মীদের রাতে কাজ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy