সা়ড়ে তিন বছরের মেয়েকে প্রাইভেট টিউশনে পৌঁছে দিয়ে ঘরের কাজ সারছিলেন ছাব্বিশ বছরের তরুণী মা। আচমকাই সেই ঘরে লেগে যায় আগুন। পাড়ায় আগুন লেগেছে শুনে অন্যদের মতো বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বের দোকান থেকে তড়িঘড়ি বেরিয়ে এসেছিলেন ওই বধূর স্বামীও। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখলেন, তাঁর ঘরই দাউদাউ করে জ্বলছে। ভিতরে আটকে স্ত্রী। ঘণ্টা খানেক পরে ওই তরুণীরই দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে দমকল।
পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ এ ভাবেই নিজের ঘরে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল শ্রাবণী পাল (২৬) নামের ওই বধূর। ঘটনাটি ঘটে জোড়াবাগান থানার ঘিঞ্জি আহিরীটোলা স্ট্রিটের একটি পাঁচতলা বাড়িতে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনের কারণ এখনও দমকল বা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। পুলিশ ও দমকলের ধারণা, শর্ট সার্কিট থেকেই ওই ঘুপচি ঘরে আগুন লাগে। বেরোনোর চেষ্টা করেছিলেন বধূ। কিন্তু দারজার সামনে ছোট কাঠের আলমারি পড়ে গিয়ে তাতেও আগুন ধরে যায়। এর পরেই আগুন ছড়ায় দরজাতেও। তখনই অ্যাসবেসটসের ছাদ ভেঙে পড়ে শ্রাবণী আটকে যান বলে ধারণা পুলিশের। কিছু ক্ষণেই আগুন ছড়িয়ে ছাই হয়ে যায় ঘর। পুড়ে মৃত্যু হয় বধূরও।
যেখানে আগুন লেগেছিল, পুরনো দিনের ওই বাড়িতে প্রায় ৬০টি পরিবারের বসবাস। আরও ক’টি পুরনো বাড়ি ও বস্তি রয়েছে ওই বাড়ি লাগোয়া এলাকায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বাড়ির পাঁচতলার একটি
দশ বাই দশ ঘুপচি ঘরেই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন রেডিমেড কাপড়
বিক্রেতা বিশ্বজিৎ পাল। স্থানীয়েরা জানান, এ দিন সন্ধ্যায় হঠাৎ তাঁরা দেখেন পাঁচতলার ওই ঘরের পিছন দিক থেকে দাউদাউ করে আগুন বেরোচ্ছে। ক্রমশ সেই আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। তা দেখেই আতঙ্ক ছড়ায়। আর্তনাদ জুড়ে দেন এলাকার বাসিন্দারা। বাড়ি থেকে শিশু ও বৃদ্ধদের বার করে আনতে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানদারেরা। সব বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলর শিখা সাহা ও বিজয় উপাধ্যায়। পরে শিখাদেবী বলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি দমকল এসে ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই আগুন আর ছড়াতে পারেনি। না হলে আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy