আবার রেড রোড। আবার সেই বেপরোয়া গাড়ি।
এ বছরের ১৩ জানুয়ারি রেড রোডে বেপরোয়া এক গাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছিলেন বায়ুসেনার কর্পোরাল অভিমন্যু গৌড়। এ বার রেড রোডে মারা গেল একটি ঘোড়া।
সে বার যে গাড়িটি ধাক্কা মেরেছিল, সেটি ছিল কলকাতার এক রাজনৈতিক নেতার ছেলের। মত্ত অবস্থায় সে গাড়ি চালাচ্ছিল বলে জানায় পুলিশ। প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির ছেলেকে ধরতে গিয়ে কালঘাম ছোটে পুলিশের।
এ দিন যে গাড়িটি ধাক্কা মেরেছে, তা বাংলা সিনেমার এক চিত্র প্রযোজকের গাড়ি। গাড়িটি কে চালাচ্ছিল, তা নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি পুলিশ। তবে, এ দিন দুর্ঘটনার পরে সকাল সাতটা থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই প্রযোজকের ১৬-১৭ বছর বয়সী নাবালক ছেলেকে ময়দান থানায় বসিয়ে রাখা হয়। ঠিক হয়, তাকে জুভেনাইল আদালতে হাজিরও করা হবে। কিন্তু বিকেলের পরে জুভেনাইল আদালতে গেলে জানা যায়, আদালত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তখনও পর্যন্ত ঘোড়ার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট জমা পড়েনি।
এ দিন বিকেলে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ হওয়া পুলিশি রিপোর্টে লেখা ছিল, ওই গাড়ির নাবালক চালক পলাতক। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাকে পুলিশ থানায় বসিয়ে রাখল? প্রশ্ন উঠেছে, চিত্র প্রযোজকের ওই ছেলের কি ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল? লাইসেন্স থাকলে নাবালক ছেলেটি তা পেল কী করে? যদি লাইসেন্স না থাকে, তাকে গাড়ি-সহ একা ছেড়ে দেওয়া হল কী করে? কোনও প্রশ্নেরই জবাব এ দিন পুলিশের তরফে দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ শুধু বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ ধর্মতলা থেকে দক্ষিণ দিকে যাওয়ার সময়ে গাড়িটি রেড রোডে মহামেডান ক্লাবের সামনে ঘোড়াটিকে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মীরা গাড়ি থেকে যাকে বার করে আনেন, সে নাবালক বলে পুলিশই জানিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই কিশোরই ওই চিত্র প্রযোজকের ছেলে। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে পুলিশ ছেলেটিকে নিয়ে ময়দান থানায় আসে।
তবে দুপুর পর্যন্ত ময়দান থানায় ওই প্রযোজককে ঢুকতে দেখা যায়নি। এক আইনজীবীকে বারবার থানায় ঢুকতে-বেরোতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই আইনজীবীও খোলসা করে কিছু বলতে চাননি। পুলিশেরই একটি সূত্র জানায়, যে রিপোর্টটি এ দিন বিকেলে ব্যাঙ্কশাল আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে, সেটি বুধবার (মঙ্গলবার ছুটি বলে) জুভেনাইল আদালতে জমা দেওয়া হবে। তার পরে জুভেনাইল আদালতের বিচারকের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়দান এলাকায় এ ভাবে গাড়ির ধাক্কায় ঘোড়ার মৃত্যু এই প্রথম নয়। ২০০৯-এ কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ অফিসারের বিরুদ্ধে একই ভাবে ঘোড়া মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ, সেই সময়ে ঘটনার দায় গাড়িচালকের উপরে চাপানোর চেষ্টা হয়েছিল। পরে চালক সত্যি কথা বলায় বিপাকে পড়েন পুলিশের ওই কর্তা। তবে জানা গিয়েছিল, পুলিশের ওই কর্তা গাড়ি চালালেও পাশেই ছিলেন ওই চালক।
সোমবারের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে ওই নাবালক একাই ছিল। এর আগে জানুয়ারিতে বায়ুসেনা অফিসারের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছিল, গাড়িতে ওই প্রভাবশালীর নেতার ছেলে ছাড়াও আরও দু’জন ছিলেন। কিন্তু পরে তদন্তে জানা যায়, গাড়ি ওই যুবকই চালাচ্ছিলেন ও গাড়িতে দ্বিতীয় কেউ ছিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy