সেকরাপাড়ায় পড়েছে এমনই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
দু’মাসের বেশি হোটেল বাসের পরে ভাড়া বাড়িতে এসেছেন প্রায় তিন মাস হয়ে গেল। অথচ এখনও নতুন বাড়িতে থাকার প্রমাণপত্রই পাননি মেট্রোর কাজের জন্য বৌবাজারের সেকরাপাড়া লেনে ভেঙে পড়া বাড়ির বাসিন্দাদের অনেকে! অভিযোগ, এর জেরে দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের।
মেট্রোর কাজের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের থাকতে ঘর ভাড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কাঁকুড়গাছি, বেলেঘাটা, বৌবাজার এবং মুন্সিবাজারের মতো এ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকছেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বর্তমান ঠিকানার কোনও প্রমাণপত্র তাঁদের হাতে নেই। তাই দৈনন্দিন কাজে বারবার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে।
যেমন, সেকরাপাড়া লেনে তাঁর বাড়ি ভাঙার পরে কেশব সেন স্ট্রিটের একটি আবাসনে সপরিবার থাকছেন আশিস সেন। তিনি জানান, তাঁদের কাছে ঠিকানার প্রমাণপত্র নেই। আশিসবাবু বলেন, ‘‘মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাড়িওয়ালার সরাসরি ভাড়ার চুক্তি হয়েছে। ফলে আমাদের কাছে বাড়ির ভাড়ার কোনও চুক্তিপত্র নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ডাক মারফত ব্যাঙ্কের কোনও চিঠি বা নথি নতুন ঠিকানায় আসছে না। স্থানীয় ডাকঘরে গিয়ে বিষয়টি জানাতে গেলে বলা হয়েছে, এখনকার ঠিকানার কোনও প্রমাণপত্র দিতে।’’ আর সেটাই দিতে পারছেন না তাঁরা। ফলে জরুরি নথিও আসছে না ডাকযোগে।
একই অবস্থা বৌবাজার এলাকার যদুনাথ দে রোডের বাসিন্দা সঞ্জয় সেনের। সেকরাপাড়া লেনের বাড়ি ভাঙার পরে পরিবার নিয়ে সঞ্জয়বাবু তিনমাস ধরে যদুনাথ দে রোডে থাকছেন। তাঁর দাবি, ‘‘বাড়িওয়ালাকে কিছু বললেই তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।’ আমরা মেট্রোর আধিকারিককে এই সমস্যা নিয়ে জানিয়েছি। এমনকি চিঠিও জমা দিয়েছি। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’ সঞ্জয়বাবুর মতোই ভুক্তভোগী আরও অনেকের অভিযোগ, ‘‘কোনও কিছুর সাবস্ক্রিপশন, ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, রান্নার গ্যাসের ডিলারের কাছেও বদলে যাওয়া ঠিকানার প্রমাণপত্র না দিতে পারায় রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে তাঁদের।’’
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির অভিযোগ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্যেই তাদের বাড়ির মালিক থেকে রাতারাতি পথে বসতে হয়েছে। আপাতত কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করলেও বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিচার করছে না বলেই দাবি তাদের। যেমন, সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ, ‘‘এই সমস্যা নিয়ে একক ভাবে মেট্রোর কাছে গিয়ে ফল মেলেনি। তাই এ বার ‘সেকরাপাড়া লেন বাঁচাও কমিটি’ তৈরি করে সমস্যাগুলি তুলে ধরছি।’’
মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনার জন্য দু’টি কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। একটি সেকরাপাড়ায় এবং অন্যটি গোয়েঙ্কা কলেজে। সেখানে গিয়েই তাঁরা অসুবিধার কথা জানাতে পারেন।’’ তবে এমন ভোগান্তি যে হওয়ার কথা নয়, তা মানছেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘মেট্রোর ওই কাজের ঠিকাদার সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের বাড়ি ভাড়ার খরচ বহন করছে। ওই সংস্থার সঙ্গে কথা বলে মেট্রোর সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা দেখবেন, যাতে এ নিয়ে বাসিন্দাদের কোনও সমস্যা না থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy