Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Calcutta News

প্রথম যাত্রীই ডিজিটাল, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সূচনাতেই ইতিহাস

দেশের মধ্যে প্রথম নদীর তলা দিয়ে মেট্রো প্রকল্পের যাত্রী পরিষেবার সূচনা হল।

গড়াল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর চাকা। তৈরি হল এক নতুন ইতিহাস। —নিজস্ব চিত্র।

গড়াল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর চাকা। তৈরি হল এক নতুন ইতিহাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৩৯
Share: Save:

স্টেশনে ঝোলানো সুইস ঘড়ির সেকেন্ডের কাঁটা তখন একটু একটু করে ৮টার দিকে এগোচ্ছে। পাল্লা দিয়ে লম্বা হতে শুরু করেছে কাউন্টারের লাইনটাও। অনেকে মেট্রোয় উঠেও পড়েছেন। ট্রেনের চালক থেকে শুরু করে মেট্রো কর্মী— সল্টলেক সেক্টর ফাইভ স্টেশনে যে যেখানে রয়েছেন, সবার চোখ ঘড়ির দিকে। কাঁটা ৮টা ছুঁতেই অবশেষে এল সেই সন্ধিক্ষণ। গড়াল মেট্রোর চাকা। তৈরি হল এক নতুন ইতিহাস।

শুক্রবার সকাল ৮টা। দেশের মধ্যে প্রথম নদীর তলা দিয়ে মেট্রো প্রকল্পের যাত্রী পরিষেবার সূচনা হল। প্রেম দিবসে মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের হাতে গোলাপ তুলে দিয়ে আরও স্মরণীয় করে তুললেন। ৩৫ বছর আগে দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়েছিল এই কলকাতাতেই।

পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম। প্রাথমিক পর্যায় ৬টি স্টেশনে পরিষেবা দিচ্ছে মেট্রো। ঝাঁ চকচকে স্টেশন। অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনা। বাতানুকুল রেকে সর্ব ক্ষণের সিসি ক্যামেরা নজরদারি। এ সব দেখে মেট্রোয় সফররত যাত্রীরা বলছেন, “যেন বিদেশে সফর করছি...।”

আরও পড়ুন: আমার আনা প্রকল্প, উদ্বোধনে এক বার জানালও না! মেট্রো নিয়ে উষ্মা মমতার

সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে যে মেট্রোটি প্রথম ছাড়ল স্টেডিয়ামের উদ্দেশে, তার পাইলট ছিলেন অভিজ্ঞ মোটরম্যান শ্যামল চৌধুরী। প্রথম যে যাত্রী টিকিট এ দিন কিনেছেন, তিনি সল্টলেকের বাসিন্দা রাজীব রায়। তাঁর হাতে মেট্রোর তরফ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে একটি বিশেষ স্মারক, সঙ্গে গোলাপ। রাজীবের কথায়, “বাড়ির কাছে এমন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটছে, ঘরে কি বসে থাকা যায়! আমি সৌভাগ্যবান, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম যাত্রী হতে পেরে।”

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম টিকিটটি কিনলেন সল্টলেকের বাসিন্দা রাজীব রায়। মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হল গোলাপ-সহ একটি বিশেষ স্মারক। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা মেট্রো শুরুর আগে মস্কোতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছিল মোটরম্যানদের। কারণ, তার আগে পাতালে ট্রেন চলানোর কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। সময় বদলেছে। একে একে দিল্লি, বেঙ্গালুরু-সহ অন্যান্য শহরে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর চালকরা অনেকে অভিজ্ঞ হয়েছেন। তাঁরা বেঙ্গালুরুতে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকটাই দক্ষ।

পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে কোনও মানসিক চাপই নিতে হয়নি শ্যামলবাবুকে। ঠিক ১৪ মিনিট পর নির্বিঘ্নে স্টেডিয়ামে পৌঁছে গেল মেট্রো। শ্যামলবাবু জানালেন, “ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরে আমারও ভাল লাগছে। সব কিছুই ঠিক চলছে। মেট্রোর রেকগুলি অনেক আধুনিক ও নিরাপদ।” এ দিন কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে করপোরেশন (কেএমআরসিএল)-এর আধিকারিকরাও মেট্রোতে চড়েছেন। তাঁরা মেট্রোর মধ্যেই প্রথম যাত্রীর হাতে স্মারক তুলে দিয়েছেন। ছিলেন প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার সাত্যকি নাথ, জিএম (সিভিল) এন সি কারমালি এবং মেট্রো রেলের সিনিয়র ট্রান্সপোর্টেশন ম্যানেজার কৌশিক মিত্র।

প্রথম যাত্রী রাজীব মেট্রোর দু'টি কার্ড কিনেছেন। তা-ও ব্যাঙ্কের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে করে। মেট্রোর কর্তারা বলেছেন, প্রথম দিনে, প্রথম যাত্রী মেট্রোর টিকিট নিলেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে। ফলে বলা চলে, ক্যাশলেস লেনদেনেরও তিনি সূচনা করলেন! প্রতিটি স্টেশনে টোকেন ভেন্ডার মেশিন রাখা রয়েছে। যাত্রীরা যদি মনে করেন, তাঁরা লাইনে না দাঁড়িয়ে নিজেরাই টোকেন নিতে পারেন। অথবা ব্যাঙ্কের কার্ড ব্যবহার করে, মেট্রোর কার্ড কিনতে পারবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Metro East-West Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy