প্রার্থনা: অসুস্থ মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য কামনায় সাধারণ মানুষের স্বাক্ষর করা হোর্ডিং। বৃহস্পতিবার, এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডের সামনে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
এটাই উডবার্ন ওয়ার্ড, উনি কি এখানেই রয়েছেন?
বৃহস্পতিবার সারা দিন এমন প্রশ্ন বার বার উড়ে এল সংবাদমাধ্যমের দিকে। নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে আহত হওয়ার পরে বুধবার রাত থেকে এসএসকেএমের উডবার্ন ব্লকের ভিভিআইপি কেবিনে ভর্তি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বৃহস্পতিবার সারা দিনই কৌতূহলের কেন্দ্রে রইল এসএসকেএম হাসপাতালের ওই ভবন।
ওই ভবনের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেই ঘর পর্যন্ত পৌঁছতে গেলে নিরাপত্তার বিভিন্ন স্তর পেরোতে হবে। চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী, দলীয় নেতা কিংবা অন্য বিশিষ্ট মানুষ—খুব বাছাই করা লোকজনই এ দিন সেখানে প্রবেশ করতে পেরেছেন। উডবার্নের শুরুতে লোহা ও স্টিলের ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো হয়েছে। আর যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখানে স্টিলের কোল্যাপসিবল গার্ডরেল দিয়ে আটকানো হয়েছে। তল্লাশি করা হয়েছে প্রতিটি গাড়িও।
সূত্রের খবর, ২৮টি শয্যাবিশিষ্ট উডবার্ন ওয়ার্ডে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া রয়েছেন আরও ১৬ জন রোগী। যদিও তাঁদের পরিজনেদের উডবার্নে প্রবেশে সমস্যা হচ্ছে না। তৃণমূলের নেতা-কর্মী বা অন্য বিশিষ্টেরা যাতে সেখানে প্রবেশ করতে পারেন, তার জন্য অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে একটি বিশেষ রাস্তা করা হয়েছে। ভবনের সামনে সব সময়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর জন্য দু’টি নতুন হুইলচেয়ারও পৌঁছে গিয়েছে উডবার্নে।
রোগীর কাছে দেখা করতে বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত এ দিনও উডবার্ন ওয়ার্ডে যেতে পেরেছেন পরিজনেরা। সেখানে ঢোকার মুখে যেখানে গার্ডরেল দেওয়া হয়েছে, সেখানে এক বার এবং উডবার্নের প্রবেশের দরজার সামনে এক বার কার্ড দেখিয়েই পরিজনেরা রোগী কাছে পৌঁছতে পেরেছেন। হাসপাতালের কর্মীদেরও এ দিন পরিচয়পত্র দেখিয়েই উডবার্নে ঢুকতে হয়েছে।
উডবার্নেই ২০৬ নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন আহমেদ রেজার আত্মীয়। তিনি বলেন, ‘‘রোগীর পরিবারের লোকজন এসে কার্ড দেখালেই ঢুকতে পারছেন।’’
সূত্রের খবর, উডবার্ন ওয়ার্ডের সিঁড়ি দিয়ে উঠেই সোজাসুজি রয়েছে একটি কাচের দরজা। তার পিছনেই ভিভিআইপি কেবিন। কেবিনের সামনে রয়েছে একটি বসার ঘর। ভিতরের আর একটি ঘরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরো কেবিনটিই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মোড়া। মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের ৩০ জনের একটি দল রয়েছে। তা ছাড়াও উডবার্নের দায়িত্বে রয়েছেন ডিরেক্টরেট অব সিকিয়োরিটির অফিসারেরা। সূত্রের খবর, মমতাকে দেখতে পাওয়ার আশায় হাসপাতালকর্মীদের কেউ কেউ বা অন্য রোগীর পরিজনেরা ওই কেবিনের কাছাকাছি ঘেঁষার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে এ দিন সাড়ে ১২ নম্বর কেবিন থেকে ঘুরে এসে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি। চিকিৎসকেরা বারণ করেছেন। তবে বাইরে বসার ঘরে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ছয় চিকিৎসকও বৃহস্পতিবার দিনের বেশির ভাগ সময়েই উডবার্নেই ছিলেন। ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন-সহ অন্য নেতানেত্রীরা।
মুখ্যমন্ত্রী ভর্তি থাকায় উডবার্ন ওয়ার্ডের বাইরেও এ দিন কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল। মমতার ভক্ত অর্জুন সর্দার বুধবার রাত থেকে উডবার্নের উল্টো দিকে গাছের তলায় জল-বিস্কুট নিয়ে বসে রয়েছেন। মমতার আহত হওয়ার ঘটনা, এমনকি তাঁর বিভিন্ন সময়ে আক্রান্ত হওয়ার ছবি ছাপিয়ে প্ল্যাকার্ড তৈরি করে ফেলেছেন অর্জুন। তাঁর কথায়, ‘‘দিদি সুস্থ হলে আমিও বাড়ি ফিরব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy