অগ্নিমূল্য: ফের বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানির দাম। বৃহস্পতিবার, শহরের একটি পেট্রল পাম্পে। নিজস্ব চিত্র
এক লাফে সেঞ্চুরি পেরিয়ে গিয়েছিল কিছু দিন আগেই। তার পরে দিনকয়েক থেমে থেকে ফের বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানির দাম। উৎসবের মুখে এ ভাবে জ্বালানির দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন পুজো উদ্যোক্তা থেকে আমজনতা। অতিমারি পরিস্থিতিতে যেখানে পুজো-বাজেট কাটছাঁট করার পথে হেঁটেছেন উদ্যোক্তারা, সেখানে জ্বালানির দাম বাড়তে থাকলে শেষ মুহূর্তে খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
মহালয়া পেরোতেই একে একে শহরের বড় পুজোগুলির উদ্বোধন শুরু হয়েছে। কিন্তু পেট্রল ও ডিজ়েলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি ক্রমশ ফিকে করে দিচ্ছে সেই উৎসবের আমেজ। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে লিটার প্রতি পেট্রলের দাম ২৯ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০৩.৯৪ টাকা। আর ডিজ়েলের দাম ৩৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪.৮৮ টাকায়। তথ্য বলছে, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শহরে শুধুমাত্র পেট্রলের দাম বেড়েছে ২.৩২ টাকা। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ডিজ়েলের দাম বেড়েছে ৩.১৭ টাকা। এ দিকে পেট্রল-ডিজ়েলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজারের অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি পুজোর সময়ে গাড়ি নিয়ে বেরোনোর পরিকল্পনা থাকলে সে ক্ষেত্রেও তেল ভরতেই পকেট খালি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
এ দিন কসবার একটি পেট্রল পাম্পে গাড়িতে তেল ভরতে আসা সৌরভ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘পুজোয় পরিবার নিয়ে গাড়িতে ঘোরাঘুরির কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু যে ভাবে জ্বালানির দাম বাড়ছে তাতে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে মনে হচ্ছে।’’ গল্ফ গ্রিনের এক পাম্পে বাইকে তেল ভরতে আসা পলাশ কর্মকার বললেন, ‘‘করোনার ধাক্কায় এমনিতেই আয় কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। তার উপরে জ্বালানির দাম এ ভাবে বাড়লে আনন্দ উৎসব তো দূর, এর পরে তো বাড়িতে হাঁড়িই চড়বে না!’’
একই আশঙ্কার কথা শোনা গেল গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের একটি পেট্রল পাম্পের ম্যানেজার সোমনাথ
সেনগুপ্তের গলাতেও— ‘‘দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে জ্বালানির বিক্রিবাটার উপরেও। সাধারণ মানুষ এখন খুব প্রয়োজন ছাড়া গাড়িতে জ্বালানি ভরছেন না। অনেকে চেষ্টা করছেন, গাড়ির বদলে বাইকে জ্বালানি ভরে প্রয়োজনীয় কাজ মিটিয়ে নিতে।’’ আবার গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ার কথাও শোনা গেল বড়বাজারের এক ট্রাকচালকের মুখে। তাঁর কথায়, ‘‘ডিজ়েলের দাম বাড়লে তো গাড়িভাড়াও বাড়বে। ঘরের টাকা দিয়ে আর কত দিন ভাড়া খাটব!’’
এমনিতেই করোনার জন্য এই বছরেও পুজোর বাজেটে কাটছাঁট করেছে শহরের প্রায় অধিকাংশ পুজো কমিটি। কিন্তু জ্বালানির দাম বাড়তে থাকায় শেষ মুহূর্তে জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধির গুঁতোয় বাজেটে বাড়তি বোঝা যোগ হতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক তথা হাতিবাগান
সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোক্তা শাশ্বত বসুর কথায়, ‘‘খরচ তো বেড়েই চলেছে। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। তেলের দাম যে ভাবে বাড়ছে তাতে পুজোর ফলমূল, আনাজপাতি থেকে শুরু করে গাড়ি ভাড়া দিতে গেলেও এ বার অতিরিক্ত টাকা গুনতে হবে আমাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy