Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Diwali Noise Pollution

রাত বাড়তেই বাড়ল দূষণ, শব্দ জব্দ হল না আরজি কর চত্বরেও! কলকাতার কোথায় কতটা চড়ল পারদ

প্রতি বছরই কালীপুজোর রাতে শব্দের তাণ্ডব চলে শহরে। প্রশাসন শব্দবাজি রুখতে বার বার আশ্বাস দিলেও কার্যক্ষেত্রে তেমন লাভ হয় না। এ বছর আরজি কর চত্বরেও শব্দ ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

দীপাবলির রাতে কলকাতায় শব্দবাজির তাণ্ডব।

দীপাবলির রাতে কলকাতায় শব্দবাজির তাণ্ডব। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

এ বছরের দীপাবলিতেও কলকাতায় শব্দকে জব্দ করা গেল না। রাত যত বাড়ল, পাল্লা দিয়ে বাড়ল শব্দের তাণ্ডব। এমনকি, শব্দদানবকে রোখা গেল না আরজি কর হাসপাতাল চত্বরেও! রাত ১২টা নাগাদ সেখানে শব্দের মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ২২ ডেসিবেল বেশি। তার আগে-পরেও ওই এলাকায় শব্দদূষণ হয়েছে।

প্রতি বছরই কালীপুজোর রাতে শব্দের তাণ্ডব চলে কলকাতায়। শব্দদূষণ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। প্রশাসনের তরফে শব্দবাজি রুখতে বার বার আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যক্ষেত্রে তেমন লাভ হয় না। কারণ, কালীপুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকে লুকিয়ে-চুরিয়ে শব্দবাজি বিক্রি হয়েই থাকে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। দীপাবলিতে শব্দবাজির ভূত দাপিয়ে বেড়াল মহানগর। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত কলকাতায় সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয়েছে কসবায়। শিল্পাঞ্চল হওয়ায় সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সেখানে শব্দদূষণের মাত্রা থাকা উচিত ৭৫ ডেসিবেল। কিন্তু রাত ১২টাতেই কসবায় শব্দের মাত্রা পৌঁছে যায় ১০৪.৬ ডেসিবেলে।

যে কোনও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকাকে ‘সাইলেন্স জ়োন’ ধরা হয়। সে সব এলাকায় শব্দ সকালে ৫০ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেলের উপরে ওঠার কথা নয়। কিন্তু দীপাবলির রাতে রেহাই পায়নি শহরের হাসপাতালগুলিও। যে আরজি কর হাসপাতালে আড়াই মাস আগে ঘটে গিয়েছে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মতো ঘটনা, যাকে কেন্দ্র করে এত আন্দোলন, এত বিক্ষোভ, জুনিয়র ডাক্তারেরা যে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দীপাবলির রাতে নীরবতা পালন, আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর মতো কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, সেখানেও রাতে শব্দের তাণ্ডব দেখা যায়। আরজি কর সংলগ্ন এলাকায় রাত ১২টায় শব্দের মাত্রা ছিল ৭২.৭ ডেসিবেল। রাত সাড়ে ১২টায় এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে শব্দ ছিল ৫৮.২ ডেসিবেল।

নিউ মার্কেট চত্বরে রাতে শব্দ থাকা উচিত ৬৫ ডেসিবেলের নীচে। ১২টা ২০ মিনিটের পরিসংখ্যান বলছে, সেখানে শব্দ পৌঁছেছিল ৭০.৭ ডেসিবেলে। বাগবাজারের মতো নাগরিক বসত এলাকাতেও রবিবার রাতে শব্দদূষণের মাত্রা পৌঁছেছে ৮২.৫ ডেসিবেলে। রাত ১২টা নাগাদ সল্টলেকে ৫৬.১ ডেসিবেল, পাটুলিতে ৬৯.৪ ডেসিবেল, বিরাটিতে ৭৫.৪ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ হয়। টালিগঞ্জে রাত সাড়ে ১২টায় শব্দ ছিল ৭৮.৮ ডেসিবেল, রাত ১২টা ১০ মিনিটে তারাতলায় শব্দ ছিল ৭১ ডেসিবেল।

রাত ১টা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, শব্দের তাণ্ডবে এগিয়ে সেই কসবা। ২টো ২০ মিনিটে সেখানে শব্দের পারদ চড়েছিল ১০৩.২ ডেসিবেল পর্যন্ত। একই সময়ে সল্টলেকে ৫৭ ডেসিবেল, টালিগঞ্জে ৭৩.৪ ডেসিবেল, বিরাটিতে ৫৬.৮ ডেসিবেল ছিল শব্দদূষণের মাত্রা। রাত ২টো ৪০ মিনিটে নিউ মার্কেট এলাকায় শব্দদূষণ ছিল ৭২.৫ ডেসিবেল, আড়াইটে নাগাদ পাটুলিতে শব্দদূষণ ছিল ৬৬.৬ ডেসিবেল, রাত ১টা ২০ মিনিটে বাগবাজারে শব্দদূষণ ছিল ৭৮.৫ ডেসিবেল, তারাতলায় রাত আড়াইটে নাগাদ শব্দদূষণ ছিল ৭০.১ ডেসিবেল। আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে রাত আড়াইটে নাগাদ শব্দ নিয়ন্ত্রণেই ছিল, ২৮.৪ ডেসিবেল। এসএসকেএম চত্বরে ১টা ৫০ মিনিটে শব্দদূষণ ছিল ৫৮.২ ডেসিবেল।

শব্দের তাণ্ডব চলেছে ভোর পর্যন্ত। শব্দদূষণের মাত্রা ভোর ৪টে ১০ নাগাদ বাগবাজারে ৭০.৯ ডেসিবেল, সাড়ে ৫টা নাগাদ কসবায় ৮১.২ ডেসিবেল, ৫টা ৫০ মিনিটে নিউ মার্কেটে ৬৯ ডেসিবেল, তারাতলায় ৬০.৪ ডেসিবেল, ৫টা ৪০ মিনিটে সল্টলেকে ৫০.৮ ডেসিবেল, পাটুলিতে ৫৮.৯ ডেসিবেল, টালিগঞ্জে ৭৪.৪ ডেসিবেল, বিরাটিতে ৫৫.১ ডেসিবেল। ৫টা ৪০ মিনিটে আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে শব্দের মাত্রা ২৮.৮ ডেসিবেল থাকলেও এসএসকেএমের আশপাশে তখনও শব্দ ছিল ৫০ ডেসিবেলের বেশি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE