—ফাইল চিত্র।
পুজোর মুখে হকারদের জন্য এককালীন দু’হাজার টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কলকাতা পুলিশের থানাগুলির কাছে হকারদের যে তালিকা রয়েছে, তার সঙ্গে কলকাতা পুরসভার দেওয়া তালিকার অনেকাংশে মিল না থাকায় ওই সাহায্যের টাকা হাতে পেতে দেরি হচ্ছে হকারদের। যদিও পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে চলতি মাসের গোড়াতেই ৩২,৬২৫ জন হকারের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। থানাভিত্তিক হকারদের নামের ওই তালিকা হাতে আসার পরে ‘হকার সহায়তা প্রকল্প ২০২০’-এর কাজে গতি এসেছে বলে দাবি পুরসভার।
কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানা সূত্রের খবর, প্রতিটি থানার কাছে নিজের এলাকায় কত জন হকার রয়েছেন, তার তালিকা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে গত সেপ্টেম্বরে সেই তালিকা অনুযায়ী হকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদন করতে বলা হয়। নাম-ঠিকানার পাশাপাশি কোথায়, কী ধরনের পণ্য বিক্রি করেন কোনও হকার, তা-ও জানাতে বলা হয় নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে। তার সঙ্গে আবেদনকারী হকারকে তাঁর আধার কার্ড, ডিজিটাল রেশন কার্ড এবং ভোটার পরিচয়পত্রের নম্বরও দিতে হয়। সেই আবেদনপত্র একত্রিত করে প্রতিটি থানা প্রথমে লালবাজারে পাঠায়। তখনই দেখা যায়, পুরসভার তালিকার সঙ্গে থানাগুলির পাঠানো তালিকার অনেকাংশেই মিল নেই! এর পরেই পুরসভার তরফে ফের হকারদের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে, যার ভিত্তিতে ফের আবেদন করছেন হকারেরা।
কিন্তু কেন তালিকায় এই অসঙ্গতি? পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরই থানার এলাকা ধরে ধরে হকারদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু পুরসভার কাছে যে হকার-তালিকা রয়েছে, তা ২০১৩ সালে তৈরি। ফলে সেই সময়ে যাঁদের নাম ওই তালিকায় ছিল, তাঁদের অনেকেই হয়তো মারা গিয়েছেন বা তাঁদের ঠিকানা বদলে গিয়েছে। কেউ কেউ হয়তো এই কয়েক বছরে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। আবার পরবর্তী কালে অনেক নতুন মুখ এই পেশায় এসেছেন, তাঁদের নাম রয়ে গিয়েছে পুরসভার ওই তালিকার বাইরে। এর জেরেই দু’টি তালিকার মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে।
তবে এ বার পুরসভার পাঠানো তালিকা অনুযায়ী নাম ধরে ধরে দ্রুত আবেদনপত্র যাচাই করে পুরসভার কাছে তা ফেরত পাঠানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন হকারদের ব্যবসা বন্ধ ছিল। ফলে বিরাট আর্থিক ক্ষতির সামনে পড়তে হয়েছিল তাঁদের। সে কথা মাথায় রেখে তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। পুরসভা সূত্রের খবর, ‘হকার সহায়তা প্রকল্প ২০২০’-এ পুলিশ আবেদনপত্রের যাচাই করার পরেই অর্থ সাহায্য মিলবে বলে গত অক্টোবরে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।
তবে পুলিশ সূত্রের খবর, যে সমস্ত হকার এ রাজ্যের বাসিন্দা, শুধুমাত্র তাঁরাই এই সাহায্য পাবেন। তাই আবেদনপত্রের সঙ্গে এ রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে প্রমাণপত্রও দাখিল করতে বলা হচ্ছে হকারদের। এই নথি জমা না দেওয়ায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু আবেদনপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, পুরসভার তালিকা মেনে একটি হকার পরিবার থেকে এক জনই এই আবেদন করতে পারছেন। আবেদনপত্রে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য জানাতে হচ্ছে। এ ছাড়া সঙ্গে বাতিল করে দেওয়া চেকও দিতে হচ্ছে হকারদের। বিজ্ঞপ্তি মেনে এই সব নথি যাচাই করতে সময় লাগছে। তবে পুরসভা এবং পুলিশের আশা, চলতি মাসেই ওই কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং তার পরেই ওই আর্থিক অনুদান হাতে পাবেন হকাররা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy