—প্রতীকী ছবি।
পর্যাপ্ত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টই নেই। দীর্ঘ দিন ধরে এমন অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে। সম্প্রতি দুই মেডিক্যাল কলেজে এমআরআই পরিষেবা চালু না করতে পারার যুক্তিতে টেকনোলজিস্টের অভাব তুলে ধরা হয়েছে। অথচ, রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি প্যারামেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেবেন কে, সেটাই প্রশ্ন।
সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সব মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, প্যারামেডিক্যাল ও নার্সিং উভয় ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষণে পাঠানোর আগে বেসরকারি কলেজকে সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালের থেকে জানতে হবে, তারা কত জনকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবে। তার পরে বেসরকারি কলেজ স্বাস্থ্য ভবন থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ পাবে। অথচ আগে বেসরকারি প্যারামেডিক্যাল বা নার্সিং কলেজগুলি স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে চলে যেত সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতিপত্র থাকায় কিছু বলতে পারত না মেডিক্যাল কলেজগুলি। সূত্রের খবর, সম্প্রতি এ নিয়ে আপত্তি জানান বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, নিজেদের কলেজের প্যারামেডিক্যাল পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বাইরের কলেজের দায় নেওয়ার পরিকাঠামো নেই। তাতে আতান্তরে স্বাস্থ্য ভবনও।
কিন্তু প্রশ্ন, যেখানে টেকনোলজিস্টের অভাব বলা হচ্ছে, সেখানে কি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এ ভাবে আপত্তি জানাতে পারে? রাজ্যের এক মেডিক্যাল কলেজের আধিকারিকের কথায়, ‘‘নিজের পড়ুয়াদের আগে সুযোগ দেওয়া হবে, না বাইরের পড়ুয়াদের? এখন বড় প্রশ্ন সেটাই। যেখানে ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকাঠামো আছে, সেখানে বাইরে থেকে চলে আসছেন ৩০০ জন।’’ অন্য এক মেডিক্যাল কলেজের কর্তা জানাচ্ছেন, বেসরকারি প্যারামেডিক্যাল কলেজ তৈরির সময়ে, একটি সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো দেখানো বাধ্যতামূলক, যেখানে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নেবেন ওই কলেজের পড়ুয়ারা। সকলেই ভিড় করছেন সেই সরকারি কলেজে। এ দিকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজেও টেকনোলজিস্ট কোর্স শুরু হয়েছে।
রাজ্যের কার্যনির্বাহী স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা অনিরুদ্ধ নিয়োগী বলেন, ‘‘চার দিকে বেসরকারি কলেজ তৈরি হচ্ছে। পাঁচটি জায়গা থেকে যদি একটি মেডিক্যাল কলেজেই প্রশিক্ষণ নিতে চায়, তা হলে সমস্যা। পরিকাঠামোর অভাবে প্রশিক্ষণেই খামতি থেকে যাবে। তাই আগাম মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন আনতে বলা হয়েছে।’’
সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষের দাবি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন কয়েকশো পড়ুয়া আসছেন। কিন্তু প্রশিক্ষণের গুণগত মান বজায় থাকছে না। একটি মেডিক্যাল কলেজের আধিকারিক জানাচ্ছেন, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের ক্ষেত্রে দশ জন পড়ুয়াপিছু এক জন শিক্ষক, এটাই আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত। সেখানে সব মিলিয়ে অন্তত ৫০ জন পড়ুয়াপিছু এক জন শিক্ষক থাকছেন।
‘প্যারামেডিক্যাল স্টুডেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজিস্টস অ্যাকশন ফোরাম’-এর অভিযোগ, রাজ্যে এই মুহূর্তে কয়েক হাজার পাশ করা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকলেও, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ অনিয়মিত। আইডিএসও-র মেডিক্যাল ইউনিটের অধীনের ওই সংগঠনের সম্পাদক মামুন অল-রাশিদ বলেন, ‘‘স্বল্পমেয়াদি কোর্স বন্ধের জন্য বহু আবেদন করেছি। ছাত্রাবস্থায় হাতেকলমে প্রশিক্ষণ না হলে লাভ নেই। সেখানে দুই বা তিন বছরের কোর্সের শেষ ছয় মাস মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ ভাবে প্রশিক্ষণ ভাল হয় না। মেডিক্যাল কলেজগুলিও দায়িত্ব নিতে চাইছে না। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে পাশ করা টেকনোলজিস্টদের নিয়োগও সে ভাবে হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy