আলিপুর জেল লাগোয়া ফাঁকা জমির কিছুটা তৃণমূলের পতাকা দিয়ে ঘিরে রেখেছিলেন বিধান রায় কলোনির বাসিন্দারা। শুক্রবার সেই জমিই পূর্ত দফতরের কর্মীরা দখলমুক্ত করতে গেলে শুরু হয় ধুন্ধুমার। আক্রান্ত হয় আলিপুর থানা।
পূর্ত দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের বাংলো পেরিয়ে ১/১ নম্বর ঠাকরে রোডে তাদের ২০ কাঠা জমি রয়েছে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত ওই জমিতে সরকারি আবাসন তৈরি হবে এবং তার বরাত পেয়েছে পূর্ত দফতর। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, “পুজোর আগে পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা যায় জমির একাংশ তৃণমূলের পতাকা দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ঘেরা জমিতে আবাসন তৈরি করা যাবে না।”
এ দিন আলিপুর থানায় দাঁড়িয়ে পূর্ত দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার অনিন্দ্য চন্দ বলেন, “জমিতে কাজ শুরু হবে। তাই পাঁচিল তোলার কথা ছিল। কিন্তু গিয়ে দেখি পতাকা পুঁতে জমির কিছুটা ঘিরে ফেলা হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করতেই ঝামেলা শুরু হয়।” পরে সেই ঝামেলা গড়ায় আলিপুর থানা পর্যন্ত। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ ওই কলোনির ১২ জনকে আটক করলে বাসিন্দারা আলিপুর থানায় চড়াও হন। পুলিশকে মারধর করে আসবাবপত্র ও নথিপত্র নষ্ট করে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। ভবিষ্যতে কী করা হবে তা চূড়ান্ত করতে শনিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।
কেন সরকারি জমিকে নিজেদের বলে দাবি করছেন বাসিন্দারা? বিধান রায় কলোনির তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি রবীন্দ্রকুমার মোহান্তি বলেন, “এখানে ২২টি পরিবারের বাস। যে জমিতে সরকারি আবাসন হওয়ার কথা সেখান থেকে ১২ ফুট জমি চেয়েছি আমরা।” কেন? রবীন্দ্রবাবুর বক্তব্য, “জমি পেলে তা কলোনির সকলের মধ্যে বিলি করা যেত। তাতে সব পরিবার দু’কাঠা করে জমি পেত।”
ওই তৃণমূল নেতার প্রশ্ন, লাগোয়া সূর্য সেন কলোনির বাসিন্দারা সিপিএমের সমর্থক হওয়ায় সেখানকার প্রতি পরিবারের নামে দু’কাঠা জমি লিখে দিয়েছিল বাম সরকার। তা হলে তৃণমূল সমর্থক হওয়ার সুবাদে কেন তাঁরা ওই এলাকায় একই পরিমাণ জমি পাবেন না?
বিধান রায় কলোনির বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মাস দুয়েক আগে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওই দাবি মেনে নিয়ে আবাসনের জন্য নির্দিষ্ট জমির এক ফালি তাঁদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার পরেই তাঁরা ওই জমি দলীয় পতাকা দিয়ে ঘিরে নিজেদের জমি বলে চিহ্নিত করে দেন। বিধান রায় কলোনির বাসিন্দাদের ওই দাবি মানতে চাননি পুরমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মানুষ ফাঁকা জমি দেখে ঘিরে রেখেছিলেন। তাঁদের জমি দেওয়ার কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছিল না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy