প্রতীকী ছবি।
তিন মাসে দু’বার ব্যাঙ্ক জালিয়াতির শিকার হলেন বেসরকারি সংস্থার এক মহিলা কর্মী। দু’টি প্রতারণার ঘটনাতেই পুলিশ এখনও অন্ধকারে। একই ভাবে কোনও জবাব নেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষেরও।
গরফার বাসিন্দা বছর ২৯-এর শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার তিনি গরফা থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর অজান্তেই ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছে ৮০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, “আমার অ্যাকাউন্ট রয়েছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গরফা শাখায়। বুধবার বিকেলে আমার একটি ৭০ হাজার টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ম্যাচিওর করে। সেই অনুযায়ী আমার স্বামীর কাছে ব্যাঙ্ক থেকে একটি মেসেজও আসে।
আরও পড়ুন: দিলীপের মমতা-স্তুতিতে স্তম্ভিত গোটা দল, তোলপাড় শুরু বিজেপিতে
কিন্তু পরের দিন সকালে বারোটা নাগাদ আমার মোবাইলে পর পর দু’টি মেসেজ ঢোকে। দেখি দু’দফায় আমার সেই ফিক্সড্ ডিপোজিটের ৭০ হাজার টাকা এবং সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকা ১০ হাজার টাকা ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছে।”
শর্মিষ্ঠা বলেন, “এর আগে নভেম্বর মাসে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লাখ টাকা প্রতারণার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার তদন্ত করছে গরফা থানার পুলিশ। তাঁরাই আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে আমি আমার আকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত আমার মোবাইল নম্বর বদলে ফেলি। সেই অনুযায়ী আমি ব্যাঙ্কে লিখিত আবেদন করে আমার স্বামীর মোবাইল নম্বর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করি। আমার নম্বর অ্যাকাউন্ট থেকে সরিয়ে দিতে বলি।”
আরও পড়ুন: খিচুড়ি রেঁধে বিশ্বরেকর্ড! দলিত বিরোধী তকমা ঘোচাতে বিজেপির অভিনব উদ্যোগ
তদন্তে নেমে এখানেই হোঁচট খাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী বলেন, “অভিযোগকারীর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে বর্তমানে তাঁর স্বামীর নম্বর যুক্ত। তাই ফিক্সড ডিপোজিট ম্যাচিওর করার মেসেজ স্বামীর মোবাইলে গিয়েছে। এটা স্বাভাবিক। তা হলে পরবর্তীতে যখন টাকা ট্রান্সফার হয়ে গেল, তখন স্বামীর মোবাইলে না গিয়ে ওই মহিলার নম্বরে কেন এসএমএস এল? যেখানে ব্যাঙ্কের খাতাতে আদৌ শর্মিষ্ঠার কোনও নম্বর এখন আর নথিভুক্ত নেই।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শর্মিষ্ঠার কাছে কোনও মেসেজ বা এমন কিছু আসেনি, যা থেকে তিনি পাসওয়ার্ড বা অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য কাউকে দিতে পারেন। আর সেটাই অবাক করছে তদন্তকারীদের।
পুলিশকে ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উধাও হয়ে যাওয়া ৮০ হাজার টাকাটা, দুটো ভাগে গাজিয়াবাদ এবং দেওঘরের কোনও ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে। শর্মিষ্ঠার দাবি, “আমি ব্যাঙ্কে যখন প্রশ্ন করি যে আমার নম্বর ব্যাঙ্কের নথিতে না থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে আমার মোবাইলে মেসেজ এল, তখন তাঁরা কোনও উত্তর দিতে পারেননি।”
তদন্তকারীরা এটাতেও অবাক হচ্ছেন, কী ভাবে জালিয়াতরা জানতে পারল ফিক্সড ডিপোজিট ম্যাচিওর হয়ে মহিলার সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে? নভেম্বর মাসেও অনেকটা একই ভাবে এক লাখ টাকা প্রতারণা হয় শর্মিষ্ঠার। তিনি গোটা বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাঙ্কেও জানিয়েছেন।
ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জালিয়াতি দমন শাখার এক আধিকারিক বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করছি। তবে এখনও স্পষ্ট নয় কী ভাবে মহিলার অ্যাকাউন্টের তথ্য জালিয়াতদের কাছে পৌঁছল।” তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওমবুডম্যান শাখা সূত্রে খবর, এই ধরণের প্রতারণার অভিযোগ সবচেয়ে বেশি ঘটছে ওই নির্দিষ্ট রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেই। একাধিক বার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে ওই ব্যাঙ্কের নিজস্ব সাইবার নিরাপত্তা ব্যাবস্থা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্তকারীদেরও সন্দেহ ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীন সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতা কাজে লাগাচ্ছে জালিয়াতরা।
(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজ জানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy