Advertisement
৩০ জানুয়ারি ২০২৫
Bengal BJP

‘গাঁজাখোরের’ সংখ্যা কত বঙ্গে? জানতে চেয়ে প্রশ্ন বাংলার বিজেপি সাংসদের, সংসদে জবাব দেবে কেন্দ্র

সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের কাছে বিজেপি সাংসদ জানতে চেয়েছেন, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে গাঁজাখোরের সংখ্যা কত। গাঁজাখোরদের জেলাভিত্তিক সংখ্যাও জানতে চেয়েছেন তিনি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৮
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে গঞ্জিকা সেবনকারীর সংখ্যা কত? জানতে চেয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। দেশের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের কাছে সৌমিত্র জানতে চেয়েছেন, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে গাঁজাখোরের সংখ্যা কত। গাঁজাখোরদের জেলাভিত্তিক সংখ্যাও জানতে চেয়েছেন তিনি।

অবশ্য শুধু গাঁজাখোর নয়, সব রকমের মাদকাসক্তের বিষয়েই সৌমিত্র খোঁজ নিতে চান। ‘নেশামুক্ত ভারত অভিযান’-এর প্রভাব বা সাফল্য পশ্চিমবঙ্গে কতটা, তা বুঝে নেওয়াই বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের মূল উদ্দেশ্য। সৌমিত্রর প্রশ্নের তিনটি ভাগ। প্রথমত, তিনি জানতে চেয়েছেন, মাদকাসক্তদের জেলাভিত্তিক সংখ্যা কত? দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গে মাদকের নেশা রুখতে নির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে এবং তার প্রভাব কেমন? তৃতীয়, মাদকাসক্তদের নেশামুক্তি, তাঁদের পুনর্বাসন এবং মাদক-বিরোধী প্রয়াসের পরিস্থিতি বাংলায় কেমন? তবে মাদকাসক্তদের বিষয়ে যে পরিসংখ্যান এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে, তা থেকে স্পষ্ট যে, এ রাজ্যে মাদকাসক্তদের সিংহভাগই ‘গাঁজাখোর’।

পশ্চিমবঙ্গে মাদক কারবারের যে হিসাব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গত ডিসেম্বরে সংসদে পেশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া মাদকের মধ্যে গাঁজার পরিমাণই সবচেয়ে বেশি। শুধু বেশি নয়। বাজেয়াপ্ত হওয়া গাঁজার পরিমাণ আফিম, হেরোইন, কোকেন, চরস-সহ বাজেয়াপ্ত অন্য সব ধরনের মাদকের সম্মিলিত পরিমাণের সাড়ে ছ’গুণ। ২০১৮-’১৯ সালের তথ্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সংসদে পেশ করেছে অমিত শাহের মন্ত্রক। তাতে দেখা যাচ্ছে, সে বছর পশ্চিমবঙ্গে গাঁজা বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ২৭ হাজার কেজির বেশি। বাকি সব মাদক মিলে চার হাজার কেজির একটু বেশি। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গের মাদকাসক্তদের মধ্যে গাঁজার রমরমাই সবচেয়ে বেশি।

সাংসদ সৌমিত্র নিজেও মানছেন সে কথা। তাঁর কথায়, ‘‘এ কথা ঠিকই যে, আমি যাঁদের হিসেব চেয়েছি, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই আসলে গাঁজার নেশা করেন। তবে সব রকমের মাদকাসক্তদের বিষয়েই জানতে চেয়েছি।’’ কিন্তু কোন ভাবনা থেকে হঠাৎ গাঁজাখোর বা মাদকাসক্তদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা? সৌমিত্র বলছেন, ‘‘আমি চাইছি এই সব নেশা থেকেই মানুষকে দূরে রাখতে। তার জন্য নজরদারি প্রয়োজন। সরকারের নজরদারি কতটা রয়েছে, নজরদারিতে কী তথ্য উঠে এল, এ সব জানতে পারলে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।’’

সাংসদের আরও বক্তব্য, ‘‘যাঁরা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তাঁরা সাধারণত নির্দিষ্ট কোনও দোকান থেকেই মদ কেনেন। সপ্তাহে কত মদ বিক্রি হচ্ছে, কারা আসছেন কিনতে, কতটা কিনছেন, সে সব তথ্য বিশদে থাকলে তবেই মদ্যপানের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। নজরদারি থাকলে সেই তথ্য প্রশাসনের হাতে থাকবে।’’ কিন্তু যাঁরা মদ্যপান করেন না, গাঁজা, কোকেন বা অন্য মাদকে আসক্ত, তাঁদের উপর নজরদারি কী ভাবে হবে? তার খুব স্পষ্ট জবাব সাংসদের কাছেও নেই। তিনি বলছেন, ‘‘এই সব নেশা এলাকাভিত্তিক ভাবে বেশি বা কম হয়। কিছু কিছু এলাকার উপরে নজরদারি বাড়ালেই বোঝা যাবে পরিস্থিতি কেমন। সেই জন্যই তো তথ্য চাইছি! নেশামুক্ত ভারত অভিযান বাংলায় কতটা রূপায়িত হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার যে টাকা পাঠাচ্ছে, তার কতটা সদ্ব্যবহার হচ্ছে, সেগুলোও জানতে চাই। তথ্য এলে বোঝা যাবে, জেলায় জেলায় বা এলাকাভিত্তিক ভাবে পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগজনক।’’

সৌমিত্রর এই প্রশ্নকে কী নজরে দেখছেন বিজেপি নেতৃত্ব? ‘গাঁজাখুরি’ ভাবছেন কি? রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র তথা আর এক বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের জবাব, ‘‘জেলায় জেলায় তৃণমূলের উন্নয়ন বাহিনীর মুখ থেকে যে ধরনের বাণী ঝর্নাধারার মতো বেরিয়ে আসছে, তা দেখে হয়তো গঞ্জিকার প্রভাবের কথা সৌমিত্রর মাথায় এসে থাকতে পারে। সেই কারণেই হয়তো ওই প্রশ্ন জমা দিয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Politics Saumitra Khan Drug Addicts Narcotics Abuse parliament Social Justice and Empowerment Ministry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy