Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

রবীন্দ্র সরোবরে কচ্ছপ, সম্মতি বন দফতরের

রাজ্য বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, সরোবরের জলে কচ্ছপ থাকতেই পারে। কচ্ছপ জল ও ডাঙা-দু’ জায়গা মিলিয়েই থাকে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৩
Share: Save:

সৌন্দর্যায়নের জন্য রবীন্দ্র সরোবরে হরিণ কিংবা অন্য কোনও বন্য প্রাণী রাখতে চেয়ে বন দফতরের অনুমতি পায়নি কেএমডিএ। ফলে সেখানে সরোবরের জলে কচ্ছপ সংরক্ষণ করতে চান কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে বন দফতরের সম্মতি রয়েছে বলেই জানিয়েছে কেএমডিএ।

রাজ্য বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, সরোবরের জলে কচ্ছপ থাকতেই পারে। কচ্ছপ জল ও ডাঙা-দু’ জায়গা মিলিয়েই থাকে। সরোবরের জলে ইতিমধ্যে কয়েকটি কচ্ছপ রয়েছে। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সেগুলি সম্ভবত স্থানীয়েরা ছেড়েছিলেন। আলাদা করে তাঁরা সেখানে কচ্ছপ সংরক্ষণ করতেই পারেন। বন দফতর জানিয়েছে, কচ্ছপ সংরক্ষণের ব্যাপারে কেএমডিএকে নির্দেশিকা দিতেও তাঁরা প্রস্তুত।

কেএমিডএর আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন,‘‘কয়েক বছর আগেই এই প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তাবায়িত করতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। তাঁদের প্রস্তাব ছাড়াও বন দফতরের অনুমতি এবং নির্দেশিকা পাওয়ার পরেই ওই প্রকল্প কার্যকর করা হবে। বন দফতরের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা হবে।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরের জলে বছর দু’য়েক আগে কয়েকটি কচ্ছপ দেখা যায়। তার পরেই কচ্ছপ সংরক্ষণের কথা ভাবা হয়। তবে প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না থাকায় সমস্যায় পড়ে কেএমডিএ। পরিবেশকর্মীদের

মতামতও নেওয়া হয়। কচ্ছপের নিরাপত্তার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও প্রকল্পটি এগোয়নি। পরিবেশকর্মী এবং সরিসৃপবিদেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক সমীক্ষায় সরোবরে দু’টি প্রজাতির কচ্ছপ দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ‘ইন্ডিয়ান রুফড টার্টেল’ (সবুজ কড়ি)। অন্যটি ‘ইন্ডিয়ান ফ্ল্যাপ সেল টার্টেল’ (তিল কাছিম)। এই দু’টি প্রজাতি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ১ নম্বর তপসিলের অন্তর্গত হওয়ায় নিরাপত্তার প্রশ্ন সবার আগে সামনে এসে পড়ে।

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, আপাতত কচ্ছপেরা যাতে জল থেকে উঠে ডাঙায় উঠতে পারে সেই জন্য সরোবরের একাংশে কতকগুলি গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। শীতকালে মাঝে মধ্যে জল থেকে উঠে ডাঙায় এগুলিকে রোদে বসে থাকতেও দেখা যায়। পরিবেশকর্মী অর্জন বসুরায় জানান, সংরক্ষণের দু’টি অংশ রয়েছে। একটি রয়েছে প্রজনন কেন্দ্র। অন্যটি প্রাণীদের রাখার ব্যবস্থা করা। অর্জনবাবু জানান, প্রজননের জন্য কচ্ছপেরা ডাঙায় জলাশয়ের ধারে ডিম পাড়ে। তাদের থাকার জন্য এ রকম কৃত্রিম জায়গা তৈরি করা যেতেই পারে। তবে অবশ্যই সে ক্ষেত্রে ওই প্রাণীদের নিরাপত্তা থাকা প্রয়োজন।

অর্জনবাবুর কথায়, ‘‘সরোবরে যদি কচ্ছপ শুধু সংরক্ষণ করতে হয়, তা হলে যে কেউ বাইরে থেকে কচ্ছপ এলে এখানে ফেলেত পারবেন না। যে সমস্ত কচ্ছপ জলাশয়ে ফেলা হবে সেগুলির সুস্থতা বন দফতরের পরামর্শ মেনে আলাদা করে দেখতে হবে। তার পরেই তাদের সরোবরে ছাড়া যেতে পারে। তবে, সরোবরে কচ্ছপের খাবারের অভাব নেই।’’

সরীসৃপ তথা কচ্ছপ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই প্রজাতির কচ্ছপের জন্য নিরাপত্তা প্রথমে প্রয়োজনীয়। এই কচ্ছপগুলি মেরে ফেলা বা চুরি করা দন্ডনীয় অপরাধ। তা ছাড়া কচ্ছপের থাকার জন্য জল পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। সরোবরের সামগ্রিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার কথাও ভাবা প্রয়োজন।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindra Sarobar KMDA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy