বাসন্তী হাইওয়ের এখানেই সম্প্রতি ঘটেছিল দুর্ঘটনা। ফাইল চিত্র
বারবার বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনার কারণ কি শুধুই চালকের গাফিলতি? না কি এর পিছনে রাস্তার নির্মাণগত ত্রুটিও রয়েছে? এ বার এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ওই রাস্তার ‘ফরেন্সিক পরীক্ষা’ হল। পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনা ঠেকাতে এই বিষয়টি জানা খুবই জরুরি। এই পরীক্ষার রিপোর্ট লালবাজারে জমা পড়ার পরে বাসন্তী হাইওয়ে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনার সর্বশেষ সংযোজন ভাইফোঁটার সকালে পণ্যবাহী গাড়ি এবং মোটরবাইকের সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু। এ বার তাই নড়ে বসল লালবাজার। সম্প্রতি ফরেন্সিক বিজ্ঞানী মীর ওয়াসিম রাজার নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনার তদন্ত করে। পাশাপাশি রাস্তার পরীক্ষাও করা হয়। পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনায় চালকের গাফিলতি যেমন থাকে তেমনই অনেক সময়ে রাস্তার নির্মাণগত ত্রুটি বা ‘ইঞ্জিনিয়ারিং ফল্ট’ থাকে। কখনও রাস্তার নির্মাণ বা মেরামতিতে নতুন পদক্ষেপ দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমাতে পারে। সে সবই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা খতিয়ে দেখেছেন। সে দিনের দুর্ঘটনার পিছনে পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মত, পণ্যবাহী গাড়িটি দ্রুত গতিতে ছিল। সেই সঙ্গে পিছনের চাকা ফেটে যাওয়ায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। সে সময়েই উল্টো দিক থেকে আসা মোটরবাইকটিকে ধাক্কা মারে পণ্যবাহী গাড়িটি। চাকা ফাটা গাড়িটি ঘষটে ঘষটে ৩০০ ফুট পর্যন্ত গড়িয়ে ছিল।
সায়েন্স সিটির কাছ থেকে ভোজেরহাট পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের অধীন ১৭ কিলোমিটার রাস্তা পরিদর্শন করে ফরেন্সিক দল। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় এমন অনেক তীক্ষ্ণ বাঁক রয়েছে। সেই বাঁকগুলিতে চালকেরা কত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন বা সেগুলি আগে থেকে স্পষ্ট কি না, তা-ও পরীক্ষা হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই বাঁকের আগে সতর্কতামূলক আরও বোর্ড লাগানো হবে। কিছু বাঁকের আগে গাছ ও ঝোপঝাড় চালকের দৃষ্টি আড়াল করছে। সেই ডাল ছাঁটা হবে।
প্রাথমিক ভাবে লালবাজার ওই রাস্তার ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। এই মুহূর্তে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সে এক নম্বর গেটের কাছে একটি সিগন্যাল পোস্ট থাকলেও গতি আস্তে করতে আরও সাতটি পোস্ট বসানো হবে। ইতিমধ্যেই চৌবাগা ও ভোজেরহাটে সিগন্যাল স্তম্ভ বসানো হয়েছে। ফরেন্সিক দল পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছে, রাস্তার ধারে কিছু জনবসতি থেকে বাসিন্দারা মাঝেমধ্যেই হাইওয়েতে চলে আসেন। যত্রতত্র যাতে বাসিন্দারা রাস্তা না পেরোতে পারেন, সে জন্য হাইওয়ের দু’ধারে রেলিং দেওয়া হবে এবং পারাপারের জন্য কিছু মোড় চিহ্নিত করা হবে। প্রয়োজনে গতি ধীরে করার জন্য ‘হাম্প’ তৈরি হতে পারে।
ওই দিনের পণ্যবাহী গাড়ির মাথায় বসা যাত্রীরাও দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিলেন। পুলিশের দাবি, এর পর থেকে পণ্যবাহী গাড়ির মাথায় আরোহী বসতে
দেখলেই নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং জরিমানা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy