দখল: ফুটপাত জুড়ে পর পর গজিয়ে উঠেছে দোকান। নিউ টাউনের ডিএলএফ গ্যালেরিয়ার পিছনে। নিজস্ব চিত্র।
নতুন শহর হিসাবে ক্রমশ গড়ে উঠছে নিউ টাউন। অথচ এখনই কলকাতার মতো রাস্তা ও ফুটপাত দখলের মতো পরিচিত রোগের দেখা মিলতে শুরু করেছে সেখানে। ফুটপাত দখল করে গজিয়ে উঠছে বাঁশ ও লোহা দিয়ে তৈরি একের পর এক দোকানের কাঠামো। অভিযোগ, প্রশাসন ও শাসকদলের নেতাদের একাংশের মদতে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে হকার বাড়ছে নিউ টাউনে।
আবাসন বা পুলিশকর্তার দফতরের সামনে, নিউ টাউনের সর্বত্র প্রতিদিন সকালে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে বসে বাজার। অথচ সেখানে একাধিক সরকারি বাজার রয়েছে। সেই সরকারি বাজারগুলির ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রাস্তার উপরেই বসা বাজারের কারণে ভিতরে ক্রেতারা আসতে চান না। এমন ছবি কলকাতা পুরসভার অনেক বাজারের বাইরেই দেখা যায়।
নিউ টাউনের তিনটি অ্যাকশন এরিয়ার কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেল, কী ভাবে ক্রমশ দখল হয়ে যাচ্ছে ফুটপাত। ডিএলএফ গ্যালেরিয়ার পিছনের ফুটপাতে সার দিয়ে বসে গিয়েছে নতুন দোকান। দু’-একটি ছাড়া সবই বন্ধ।
অ্যাকশন এরিয়া ১-এর এনকেডিএ বাজারের আশপাশে আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকাল-সন্ধ্যায় রাস্তা ও ফুটপাত চলে যায় বাজার-সহ অন্য খুচরো ব্যবসায়ীদের দখলে। ডিএলএফ মোড়ের কাছে ফুটপাতে কয়লার উনুন জ্বালিয়ে রান্না হয়, যার ধোঁয়া ঢুকে যায় আশপাশের ফ্ল্যাটে। তাতে আপত্তি জানিয়ে স্থানীয়েরা থানায় খবর দিয়েছিলেন। পুলিশ নির্দেশ দিয়েছিল, ওই ভাবে উনুন ধরানো যাবে না এবং রাত ১১টার পরে খাবারের দোকান খোলা থাকবে না। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির বিশেষ বদল ঘটেনি। মোটের উপরে আবাসিক এলাকাগুলির ফুটপাত ও রাস্তার একাংশ ধীরে ধীরে দখল হতে শুরু করেছে এখন থেকেই। অ্যাকশন এরিয়া ২-এর আকাঙ্ক্ষা মোড় থেকে অ্যাকশন এরিয়া ৩-এর সাপুরজি— সর্বত্র পরিস্থিতি কম-বেশি একই।
বাসিন্দাদের মতে, কলকাতার মতো নিউ টাউনের ফুটপাতও ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে হকারদের দখলে। ফুটপাত দখল করা ব্যবসায়ীদের জন্য ইতিমধ্যে ২০টি সংগঠনও তৈরি হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের সংগঠন নিউ টাউন ফোরাম ও নিউজ়ের চেয়ারম্যান সমরেশ দাস বলেন, ‘‘এর পরে এখানে পঞ্চায়েত সদস্যেরা এলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। সমস্যাটা প্রশাসন বুঝতে পারছে না। নিউ টাউনে এমন অনেক রাস্তা রয়েছে, যেখানে লোকজন হকারদের জন্য ফুটপাত ব্যবহার করতে পারেন না।’’
নিউ টাউনে অনিয়ন্ত্রিত হকারের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন হকার সংগ্রাম কমিটি ও জাতীয় হকার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ। তিনি জানান, আইন মেনে টাউন ভেন্ডিং কমিটি তৈরি হলে হকারদের নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হবে না। শক্তিমান বলেন, ‘‘প্রয়োজনেই হকারেরা বসেন। তাদের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে। হকারের সংখ্যা নিয়ে সমীক্ষা শেষের পথে। নতুন হকার বসছে না। তবে ফুটপাত পথচারীদেরও প্রয়োজন। আমরা বিষয়টি দেখব।’’
যদিও নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) দাবি, নিউ টাউনে কোনও ভাবেই কলকাতার মতো পরিস্থিতি হতে দেওয়া হবে না। হকারদের নিয়ন্ত্রণ করতে সমীক্ষা করে তাঁদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘বড় সংখ্যক হকারদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কারা সেই প্রকল্পে শামিল হতে পারবেন, তা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটিও গড়া হয়েছে। কাজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy