সোমবার বিরতির সময় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবীরা ফুটবল নিয়ে খোশগল্পে মাতলেন। ফাইল ছবি।
দুঁদে বিচারপতি থেকে তর্কবাগীশ আইনজীবী অথবা বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক— সকলকে মিলিয়ে দিল ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ বিরতিতে কলকাতা হাই কোর্টের এজলাস মাতল খোশগল্পে। বিষয় একটাই, ফুটবল। আইনজীবীদের অনেকেই সেই সময় ইচ্ছাপ্রকাশ করেন, রবিবার রাতে টান টান ফাইনাল ম্যাচ দেখার পর সোমবার আদালতের কাজ একটু তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাক। এ সব আলোচনার মধ্যেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার ফুটবল নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোথায় গেল সেই পিকে, চুনি, বদ্রু, অমলদের আমল!’’
সোমবার দুপুরে বিরতির সময় হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা আইনজীবী বিশ্বব্রত বসুমল্লিক, রাজ্যের আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বৈশ্য, আইনজীবী ফিরদৌস শামিম-সহ এজলাসে উপস্থিত আরও কয়েক জন আইনজীবীর সঙ্গে বিশ্বকাপ নিয়ে খোশগল্প মাতেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। নিজেকে মারাদোনার ভক্ত বলেও জানান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘মারাদোনা যখন কোচ ছিলেন আর্জেন্টিনার, মেসি তখন ছাত্র। সেই যুগটাই অন্য ছিল।’’ তার পরেই বিচারপতি মনে করিয়ে দেন যে, মারাদোনার সঙ্গে মেসির তুলনা চলে না। তাঁর কথায়, ‘‘মেসি মারাদোনা নন। মারাদোনা হলে একা ১০ জনকে কাটিয়ে গোল দিতে পারতেন মেসি। এমবাপে আবার পেলে নন।’’
সোমবার এজলাসে বসে কথোপকথনের মাঝেই ডুবে যান আর্জেন্টিনার জয়ে। জানান রবিবারের ম্যাচ দেখার অভিজ্ঞতার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনাল ফুটবলের অনেক স্মৃতিকে নতুন করে ফিরিয়ে দিল।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমরা খেলতে পারি না, তবে খুব ভাল সমর্থক। কলকাতাবাসীর তরফে মেসিকে ইমেল করে শুভেচ্ছা জানানো উচিত।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কুর্নিশ জানিয়েছেন ফ্রান্সের ফুটবলার এমবাপেকেও। তবে সবার ঊর্ধ্বে যে মেসি, তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘এত কম বয়স, তবে এমবাপের খেলা মুগ্ধ করেছে। আর্জেন্টিনা না ফ্রান্স কে জিতল, সেটা কোনও বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হল, মেসি বিশ্বকাপ জিতলেন। দারুণ খেলা দেখলাম। লাতিন আমেরিকার ফুটবলের ছন্দই আলাদা।’’
এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায় বাংলার ফুটবল নিয়ে আক্ষেপ শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার ফুটবলের সেই সোনালি দিন কোথায় হারিয়ে গেল? পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনি গোস্বামীদের খেলা আর নেই। এ খেলা যেন এখন অতীত। তবে অতীতের সেই দিনগুলো আজও মধুর।’’ এখনকার বাংলা দলের সাফল্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘শেষ কবে বাংলা সন্তোষ ট্রফি জিতেছে মনে পড়ছে না। অমল দত্ত, পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় চলে যাওয়ায় পর ডার্বি আর দেখা যায় না।’’ এমনকি, এমবাপের সঙ্গে তুলনা টানেন পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। বিচারপতি বলেন, ‘‘রবিবার এমবাপে একটা শট নিয়েছিলেন, এটা দেখে মনে পড়ে যায় পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা।’’
পেলের অসুস্থতা যে তাঁকে চিন্তায় রেখেছে, সে কথাও জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পেলের শারীরিক অবস্থার খবর বার বার আমাকে আহত করেছে।’’ আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘পেলে এখন কেমন আছেন তা খবরে দেখছি।’’ ফুটবল থেকে এর পর বিচারপতির মুখে উঠে আসে খেলাধুলো নিয়ে সিনেমার প্রসঙ্গ। কোনি-সহ একাধিক বাংলা সিনেমার কথাও উল্লেখ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy