Advertisement
E-Paper

বিশ্বকর্মা পুজোর আগে টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা ফুল চাষে

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৭০০-৮০০ হেক্টর জমিতে গাঁদা চাষ হয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫১
Share
Save

আগামী কাল, মঙ্গলবার বিশ্বকর্মা পুজো। তা ছাড়া, সামনে পুজোর মরসুম। ফের এই সময়ে ফুলের চাহিদা বাড়ে। সারা বছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করেন চাষিরা। কিন্তু নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টিতে ফুলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাই পুজোর মরসুমে লাভ তো দূরের কথা, খরচের টাকাটুকুও উঠবে কিনা, তা নিয়েই আপাতত রাতের ঘুম উড়েছে
ফুলচাষিদের।

কয়েক দিন আগেও প্রবল রোদে ও গরমে সকলে যখন হাঁসফাঁস করছিলেন, তখন ফুলচাষিদের মুখে হাসি ফুটেছিল। কিন্তু হঠাৎ নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় তাঁদের হাসি ম্লান হয়ে গিয়েছে।

ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, স্বাধীনতা দিবসের সময়ে ফুলের বাজারে দাম ভাল ছিল।
তখন এক-কুড়ি মালা ৭০০-৮০০ টাকায় পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে। একটি গাঁদা ফুলের মালা বিক্রি হয়েছিল ৩০-৪০ টাকা দরে। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বাজারে ফুলের দর পড়ে গিয়েছে। ফলে এখন একটি গাঁদা ফুলের মালা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩-৪ টাকা দরে!

পোলেরহাট গ্রামের ফুলচাষি কিসমত মোল্লা বলেন, ‘‘সুচ-সুতো কেনার পাশাপাশি, এক
একটি ফুলের মালা গাঁথতে ১ টাকা করে মজুরি দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে যদি এতটাই কম বাজারদর চলতে থাকে, তা হলে খরচের টাকাটুকুও উঠবে কী ভাবে, সেটাই বুঝতে
পারছি না।’’

ভাঙড়ের চিলেতলা গ্রামের চাষি শ্রীদাম মণ্ডল বলেন, ‘‘যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে ফুলের পাপড়িতে দাগ এসে যাবে। এমনকি, ফুলের পচনও শুরু হবে। এক বিঘা জমিতে ফুল চাষ
করেছিলাম। লক্ষ্মীপুজোর আগে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে লক্ষ্মীলাভের আশা ছিল।
কিন্তু বৃষ্টি সব কিছু শেষ করে দিচ্ছে। খরচের টাকাটাও উঠবে কিনা, জানি না!’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় দু’হাজার
হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৭০০-৮০০ হেক্টর জমিতে গাঁদা চাষ হয়। ভাঙড়ের ভুমরু, কচুয়া, সাতুলিয়া, পোলেরহাট, শানপুকুর, চিলেতলা, বানিয়াড়া, লাঙলবেঁকি, মৌলি মুকুন্দ, আম্রেশ্বর, চন্দনেশ্বর, বোদরা, শাঁকশহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ফুল চাষ হয়। এই সময়ে ওই সব এলাকায় মাঠ ভর্তি লাল, হলুদ গাঁদা শোভা পাচ্ছে। ফড়েদের হাত ধরে এই সব এলাকা থেকে ফুল কলকাতার মল্লিকঘাট, শিয়ালদহ-সহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়।

চাষিরা জানাচ্ছেন, টানা বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় ফুল গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বহু খেতে জল জমে গিয়েছে। ফুল গাছের গায়ে ঘষা লেগে নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে ফুলে পচন ধরেছে। জেলার হর্টিকালচার দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মাঠে যে সমস্ত গাছে ফুল ফুটে গিয়েছে, সেই সমস্ত ফুলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
তবে আমরা চাষিদের বলব, কুঁড়ি থাকতেই গাছ থেকে তুলে নেওয়ার জন্য। কোনও ভাবেই মাঠে জল জমতে দেওয়া যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে জল বার করে দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কম হতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোনও রিপোর্ট পাইনি।
পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

flower Heavy Rainfall

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}