Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

এনআরসি-কে বিঁধে মেলার প্রচারে মনীষীদের বাণী

দমদম এবং সংলগ্ন এলাকায় ওই খাদ্য মেলার পোস্টার-ফ্লেক্স-ব্যানার লাগানো শুরু হয়েছে।

প্রচার: খাদ্যমেলার ব্যানারে এনআরসি প্রসঙ্গ। নিজস্ব চিত্র

প্রচার: খাদ্যমেলার ব্যানারে এনআরসি প্রসঙ্গ। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪৭
Share: Save:

বিজ্ঞাপনে চমক থাকে প্রতি বছরই। তবে তা প্রবল ভাবেই রাজনৈতিক। গত বছর আগে থেকে ‘টিজ়ার’ দিয়ে চমক বজায় রাখা হয়েছিল। এ বার সরাসরি এনআরসি-কে বিঁধেই প্রচার শুরু করল দমদমের একটি মেলা।

দমদম এবং সংলগ্ন এলাকায় ওই খাদ্য মেলার পোস্টার-ফ্লেক্স-ব্যানার লাগানো শুরু হয়েছে। এ বারের প্রচারে হাজির বিভিন্ন মনীষী ও তাঁদের খাদ্য-সংযোগ। সেখানেই এসেছে স্বামীজির কথা— খাবারের কোনও ভেদাভেদ নেই। ওই মেলার বিজ্ঞাপনের একটি ফ্লেক্সে লেখা হয়েছে, এনআরসি নয়, সাহস দিচ্ছেন স্বামীজি। তার পরেই বিবেকানন্দের বাণী— ‘ব্রহ্মজ্ঞান হলে সকলের হাতেই খাওয়া চলে। তখন কেউ কাকেও ঘৃণা করে না।’ এর নীচে লেখা রয়েছে ‘এর পরেই বিডন স্ট্রিটে পীরুর ফাউলকারি খেতে চললেন শরৎ, তারক, যোগেন ও নরেন।’

চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকেই বিভিন্ন জায়গায় দমদমের খাদ্যমেলা ‘নালে ঝোলে’র ব্যানার টাঙানো শুরু হয়েছে। দমদম স্টেশন চত্বর থেকে শুরু করে যশোর রোডের বেশ কয়েকটি জায়গায় চোখে পড়ছে ওই ব্যানার। মেলার আহ্বায়ক, দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এনআরসি-র কারবারি প্রধানমন্ত্রী তো নিজেকে বিবেকানন্দের গুণগ্রাহী বলে দাবি করেন। প্রচারের মাধ্যমে তাঁর ভক্তদের শুধু স্বামীজির ওই কথাটা মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা।’’

শুধু ওই একটিই নয় অন্যান্য বারের মতো এ বারেও আরও অনেক ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। সব ক’টিতেই কোনও না কোনও মনীষীর যোগ রয়েছে। তবে সরাসরি এনআরসি-র কথা বাকিগুলিতে লেখা হয়নি। সেখানে আবার অন্য শ্লেষ! উদ্যোক্তারা বলছেন, ‘‘গত কয়েক বছরে দেশ জুড়ে এক অশান্ত পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা চলছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলে দেওয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে। কে কী খাবেন, তার নিদান দেওয়া হচ্ছে। সেই জন্যই বিভিন্ন মনীষীর কথা প্রচারের মাধ্যমে মনে করানো হচ্ছে।’’

একটি ছবিতে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে লেখা রবীন্দ্রনাথ কাবাব ভালবাসতেন। শ্রুতি মিঠা কাবাব, হিন্দুস্থানি তুর্কি কাবাব, চিকেন কাবাব নোসি। বিদ্যাসাগরের খাদ্য বন্দনাও রয়েছে প্রচারে— ‘লুচি কচুরি মোতিচুর শোভিতং/ জিলোপি সন্দেশ গজা বিরাজিতম।’ এ ছাড়াও প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে, সুভাষচন্দ্র বসু, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর খাদ্য সংযোগের কথাও।

গত বছর লোকসভা ভোটের আবহে প্রচারে ঝড় তুলেছিল এই মেলার টিজ়ার। ফ্লেক্সে লেখা হয়েছিল ‘কালো টাকা ফিরিয়ে আনার ভোটের টোপ খাবেন না, ধোকার ডালনা খান। যুদ্ধাস্ত্র কিনতে গিয়ে কাটমানি খাবেন না, ব্রেন চপ খান।’ প্রথমটায় মেলার কথা লেখা ছিল না। সে বার পরের ধাপে মেলার কথা প্রচারে সামনে আনা হয়।

এই মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। স্বাভাবিক ভাবেই খোঁচাটা গত দু’বছর ধরে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলকে তাক করেই প্রচার হচ্ছে। যদিও সে কথা কেউ সরাসরি স্বীকার করছেন না। দেবাশিস বলছেন, ‘‘মেলার প্রচার তো সকলেই করেন। সেই সুযোগে আমরা এনআরসির মতো জ্বলন্ত বিষয় নিয়ে জনতাকে সজাগ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।’’

অন্য বিষয়গুলি:

NRC Citizen Amendment Act CAA Swami Vivekananda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy