দমদম সেন্ট্রাল জেল। —ফাইল চিত্র।
জেলে এ বার মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বন্দিদের। দমদম সেন্ট্রাল জেলে এই প্রকল্প চালু করতে চলেছে রাজ্য কারা দফতর।
কারা দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, বন্দিদের মূল স্রোতে ফেরাতেই এই উদ্যোগ। কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম এই প্রশিক্ষণ দেবে।
শুধু মাছ চাষ নয়, মাছ কাটা থেকে শুরু করে মাছের রকমারি রান্নার পদ্ধতিও শেখাবেন নিগমের আধিকারিকেরা।’’ কারামন্ত্রীর কথায়, ‘‘বন্দিদের খাবারের তালিকায় এখন সপ্তাহে তিন দিন মাছ থাকে। তাঁরা যদি নিজেরাই মাছ চাষে আগ্রহী হন, তা হলে তাঁদের খাবারের তালিকায় মাছের পদ সপ্তাহে আরও বাড়ানো হবে।’’
কারা দফতরের তরফে বন্দিদের মূল স্রোতে ফেরাতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছিল আগেই। তারই পাশাপাশি এ বার এমন প্রশিক্ষণের কথাও ভাবা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে তাঁদের জীবিকা হয়ে উঠতে পারে। স্কুলপড়ুয়াদের পোশাক তৈরি থেকে শুরু করে সরকারি দফতরে ব্যবহার্য চটের ফাইল ও ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া শুরু হয়েছে বন্দিদের। দক্ষিণ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেল এবং শহরের একটি নামী স্কুলের তরফে বন্দিদের দেওয়া হচ্ছে পিৎজা ও কুকি তৈরির প্রশিক্ষণও। এ বার মাছ চাষ, মাছ কাটা ও মাছ রান্না শেখানোর ফলে বন্দিরা আর্থিক ভাবে আরও বেশি করে সমৃদ্ধ হবেন বলে মনে করছেন কারামন্ত্রী।
কারা দফতর সূত্রের খবর, জেলে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ শুরু হবে শীঘ্রই। কারামন্ত্রীর কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে দমদম সেন্ট্রাল জেলের বন্দিদের দিয়ে এই প্রকল্প শুরু হলেও আগামী দিনে রাজ্যের বাকি জেলেও বন্দিদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’ রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘দমদম জেলে দু’টি বড় পুকুর রয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে মাছ চাষ করা হবে।
বন্দিরা তা শিখবেন।’’ নিগমের এমডি বলেন, ‘‘দমদম জেলে বন্দিদের দিয়ে মাছ কাটানোর জন্য ‘ফিশ প্রসেসিং ইউনিট’ গড়া হবে। মাছের রকমারি রান্নাও শেখানো হবে তাঁদের। মৎস্য উন্নয়ন নিগমের তরফে যাবতীয় প্রস্তাব কারা দফতরে পাঠানো হয়েছে।’’
এর পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের নলবনে উদ্যান পালনের কাজে লাগাতে চায় মৎস্য উন্নয়ন নিগম। সপ্তাহখানেক আগে দমদম সেন্ট্রাল জেলে পরিদর্শনে গিয়ে বন্দিদের হাতে গড়া বাগান দেখে মুগ্ধ হন নিগমের কর্তারা। সৌম্যজিৎবাবু বলেন, ‘‘নলবনে প্রায় ১৭০ হেক্টর জলাশয়ের চারপাশে বিশাল জমি রয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের দিয়ে সেখানে সুন্দর বাগান তৈরি করাব আমরা। এ বিষয়ে কারা দফতরকে জানানো হয়েছে।’’ কারামন্ত্রী বলেন, ‘‘বন্দিদের হাতের কাজ দেখে নিগম তাদের ব্যবহার করতে চাইছে। এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। এর ফলে বন্দিদের কাজের পরিধিও বাড়বে। নিগম বন্দিদের নলবনে উদ্যান তৈরির কাজে ব্যবহার করতে চাইলে আমরা প্যারোলে তাঁদের পাঠাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy