লেলিহান: জ্বলছে খালপাড়ের বস্তির ঘর। সোমবার, নারকেলডাঙার ক্যানাল ইস্ট রোডে। নিজস্ব চিত্র
খালধারের বস্তিতে আগুন লেগে পুড়ে গেল ৬০টি ঘর। সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানার ক্যানাল ইস্ট রোডে। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে বই-খাতা থেকে শুরু করে মোবাইল, ব্যাঙ্কের নথিপত্র— সর্বস্ব পুড়ে গিয়েছে বস্তির বাসিন্দাদের। পুলিশ জানিয়েছে, আগুনের তীব্রতায় রাস্তার ধারে থাকা একটি ট্রান্সফর্মার ফেটে যায়। ফলে মুহূর্তের মধ্যে এক ঘর থেকে পাশের ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, বস্তির ঘরে কেউ উনুন জ্বালিয়েছিলেন। তার থেকেই আগুন লাগে।
এ দিন পোড়া ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে হাহুতাশ করছিলেন বস্তির বাসিন্দা জয়নাব বিবি। তাঁর মেয়ে বিলকিসের বিয়ে আগামী মাসে। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বস্তির একচিলতে ঘরে জিনিসপত্র কিনে রেখেছিলেন জয়নাব ও তাঁর স্বামী। জমানো ছিল কয়েক হাজার টাকাও। কিন্তু এ দিনের আগুন তাঁদের সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। বস্তির আর এক বাসিন্দা রোশনি বিবি বলেন, ‘‘তখন সবে ঘুম থেকে উঠে বাইরে এসেছি। দেখি, চার দিক কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। আগুনের শিখা দেখতে পেয়েই কোনও রকমে ঘরে ঢুকে তিন বাচ্চাকে ঘুম থেকে তুলে বাইরে নিয়ে আসি।’’ রোশনির চিৎকারে বেরিয়ে আসেন অন্য বাসিন্দারা।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে তাঁরা ঘর থেকে কিছু বার করে আনার সময়টুকু পাননি। মোবাইল থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কের পাসবই, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড— সব কেড়ে নিয়েছে আগুন। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে ঘরে গয়না কিনে রেখেছিলেন আমেনা বিবি। সে সব পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। পুড়ে গিয়েছে রোশনি বিবির দুই ছেলের স্কুলের বই এবং খাতাপত্র। পুড়ে যাওয়া ঝুপড়ির বাসিন্দারা মাথার উপরে আশ্রয় হারিয়ে এ দিন দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন।
আগুন নিভে যাওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা পরেও ত্রাণ না-পেয়ে এ দিন বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দাদের একাংশ। রোশনির অভিযোগ, ‘‘আমাদের ঘর পুড়ে গেলেও আমরা ত্রিপল পেলাম না। উল্টে যাঁদের ঘর পোড়েনি, তাঁরা ত্রিপল নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্থানীয় একটি স্কুলে ক্ষতিগ্রস্তদের রেখে তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও স্থানীয় বিধায়ক পরেশ পাল। পরে সুজিতবাবু বলেন, ‘‘বস্তির বাসিন্দাদের সব রকমের সহায়তা করা হচ্ছে। কী কারণে আগুন লাগল, ফরেন্সিক পরীক্ষা পরেই তা জানা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy