দাউদাউ: জ্বলছে সেই কারখানা। রবিবার, লেনিন সরণিতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সন্ধ্যা ৬টা। মধ্য কলকাতার লেনিন সরণির ঘিঞ্জি এলাকায় একটি বাড়ির পাঁচতলায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন আশপাশের বাসিন্দারা। খবর পেয়ে দমকলও পৌঁছে গিয়েছিল। চার দিকে ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধ। ঘিঞ্জি সিঁড়ি এঁকেবেঁকে গিয়ে উঠেছে পাঁচতলায়। কোনও রকমে একটি জলের পাইপ পাঁচতলার ছাদে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন দমকলকর্মীরা। রবিবার সন্ধ্যায় ওই বাড়ির পাঁচতলার ছাদেই টিন দিয়ে ঘেরা একটি গেঞ্জি কারখানা আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। দমকল সূত্রে খবর, শুধু গেঞ্জি কারখানাই নয়। কারখানার ঘরে ছোট রান্নাঘরও ছিল। সেখান থেকেই আগুন ছড়িয়েছে অতি দাহ্য গেঞ্জির কাপড়ে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচতলায় দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। ওই বাড়ির ঘিঞ্জি সিঁড়ি দিয়ে দমকলকর্মীরা একটিই জলের পাইপ উপরে তুলতে পেরেছেন। পরে অবশ্য ওই বাড়ির গা-ঘেঁষে থাকা একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে জল দেন দমকলকর্মীরা। প্রায় সাড়ে ছ’টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকলের ৬টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও স্থানীয় বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৭২, লেনিন সরণির ওই পাঁচতলা বাড়িতে রয়েছে একাধিক লজ ও অফিস। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ দিলবর আলম বলেন, ‘‘রাস্তার উল্টো দিকে বসেছিলাম। আচমকা ওই বাড়ির পাঁচতলা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখি। তার পরেই ছুটে উপরে যাই। দমকলে খবর দেওয়া হয়। রবিবার বলে অফিস বন্ধ ছিল। কারখানার নীচের তলে একটি লজে জনা দশেক লোক ছিলেন। তাঁদের নীচে নামিয়ে নিয়ে আসি। তত ক্ষণে দমকল এসে যায়।’’ কিন্তু আগুন ছড়িয়ে গেলে বড় বিপদের আশঙ্কা ছিল বলে মনে করছেন পুলিশ ও দমকলের আধিকারিকেরা। ওই দুই বাড়ির আশপাশে একাধিক রেস্তরাঁ আছে। বাড়ি লাগোয়া একাধিক অফিসবাড়িও রয়েছে। আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আগুনের ঘটনার পরেই আশপাশের সব বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বাড়ির মালিকের খোঁজ করা হচ্ছে। পাঁচতলার ছাদে টিন দিয়ে ঘিরে কী ভাবে গেঞ্জির কারখানা চলছিল, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরে সমস্ত বাড়ির অফিস ও লজ খুলে দেখেন দমকল ও পুলিশকর্মীরা। ওই অফিস ও লজগুলির ক্ষতি হয়নি বলে প্রাথমিক ভাবে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে। এক দমকলকর্মীর কথায়, ‘‘গভীর রাত পর্যন্ত ওই বাড়ির দেওয়ালে ও পাঁচতলার কারখানায় জল দেওয়া হবে। বাড়িটি খুবই পুরনো। দেওয়াল তেতে উঠেছে। জল দিয়ে ঠান্ডা করতে না পারলে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ এ দিন দমকলমন্ত্রী বলেন, ‘‘অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাঁচতলার ছাদে টিন দিয়ে ঘিরে কী ভাবে ওই গেঞ্জির কারখানা চলছিল তা পুরসভা খতিয়ে দেখবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy