সম্প্রতি চৌরঙ্গিতে ‘দ্য ৪২’ বহুতলে আগুন লাগার পর দমকলের বেহাল দশা আরও স্পষ্ট হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
দমকল দফতর এখনও যেন সেই নিধিরাম সর্দার। ল্যাডার নেই, কর্মী নেই...
সম্প্রতি চৌরঙ্গিতে ‘দ্য ৪২’ বহুতলে আগুন লাগার পর দমকলের বেহাল দশা আরও স্পষ্ট হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কলকাতার সর্বোচ্চ বহুতল ‘দ্য ৪২’— ৬৩ তলা। নির্মীয়মাণ বলেই সে দিন ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি ওই বহুতলে। কিন্তু বসবাস শুরু হওয়ার পর যদি ওই আগুন লাগত? তা হলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করত দমকল? এই সব প্রশ্নের সমাধান চাইছে খোদ দমকলের কর্তারাও।
কলকাতায় এমন প্রায় ৫০টি বহুতল রয়েছে, যেখানকার বহু ফ্ল্যাটে দমকলের সর্বোচ্চ উচ্চতার অত্যাধুনিক ল্যাডার পৌঁছবে না। তার মধ্যে কয়েকটি নির্মীয়মাণ বহুতলও রয়েছে। এই মুহূর্তে দমকলের কাছে আছে ৬৮ মিটার লম্বা একটিমাত্র ল্যাডার। তার পর এক ধাক্কায় নেমে গিয়েছে ৫৫ মিটারে। তার পরে ৫৪, ৫০, ৪২ এবং ৩০ মিটারের ল্যাডার রয়েছে।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের জমির সূত্রেই চলছে নিউটাউনের প্রোমোটার চঞ্চল খুনের কিনারার চেষ্টা
আগে অপরিসর ঘিঞ্জি গলি এবং তার সঙ্গে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হত দমকলকে। সেই সমস্যা এখনও রয়েছে। দমকলের নতুন মাথাব্যথা শহরের বহুতল। ওই সব বহুতলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে, কী ভাবে তার মোকাবিলা করা যায়? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। কেন কেনা হচ্ছে না, আরও বেশি সংখ্যক এবং আরও উচ্চতার ল্যাডার? দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, “বেশ কিছু প্রস্তাব দমকলের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। দমকল সব রকমের পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকে।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গত এক থেকে দেড় দশকে তরতরিয়ে মাথা তুলছে বহুতল। রাজারহাট-নিউটাউন, কলকাতা, শহরের ইএম বাইপাসের ধারে ২০ থেকে ৩০ তলা বহুতল এখন যেন জলভাত। ‘দ্য ৪২’-এর উচ্চতা ২৬৮ মিটার। আবার আনন্দপুরের একটি প্রোজেক্টের সাতটি টাওয়ারের গড় উচ্চতা ১৫২ মিটার। পরবর্তী ক্ষেত্রে আরও তিনটি টাওয়ার হবে ওখানে। তার উচ্চতা হবে ২০০ মিটারের বেশি। একই ভাবে রুবির কাছে তৈরি হচ্ছে আরও একটি বহুতল। তার উচ্চতা হবে প্রায় ১৫২ মিটার।
কলকাতা এবং নিউ টাউনে ১৫০ মিটারের বেশি ১২টি বহুতল রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। ১০১ থেকে ১৩০ মিটারের মধ্যে রয়েছে ১৩ বহুতল, ৮৫ থেকে ১০০-এর মধ্যে রয়েছে ১৭ বহুতল। আরও অনেক বহুতল তৈরির কাজ চলছে। সেই প্রোজেক্টগুলি আর কিছু দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে কলকাতা, নিউটাউনে প্রায় ৫০টি বহুতলের যে উচ্চতা, সেখানে দমকলের ল্যাডার পৌঁছবে না। পাশাপাশি, এই মুহূর্তে দমকল দফতরে প্রায় ৩ হাজার কর্মীর অভাব রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেমিকার আহ্লাদ মেটাতে শিক্ষকের বাড়ি থেকে ১৬ ভরির গয়না হাতাল প্রাক্তন ছাত্র
সব থেকে বেশি উচ্চতার অত্যাধুনিক যে ল্যাডার রয়েছে, তা ৬৮ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছবে। এবং দমকলের হাতে সেটা রয়েছে মাত্র একটি। তার পর রয়েছে, আরও চারটি। সেগুলি অবশ্য ৫৫ মিটারের বেশি উঁচু নয়। শহরবাসীর প্রশ্ন, যদি ওই সব বহুতলে আগুন লাগলে, কী ভাবে দমকল মোকাবিলা করবে? কোথা থেকে আসবে ল্যাডার? দমকলের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘ওই সব বহুতলে অভ্যন্তরীণ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যাতে যথাযথ থাকে, সে দিকে কড়া নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি আরও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং বহুতলের জন্য ল্যাডারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।’’
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy