কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।
কলকাতায় পুর নির্বাচনের আগে ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হতেই ক্ষোভ বাড়ছে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের দাবি তুলে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, এ শহরে ওয়ার্ডগুলির পুনর্বিন্যাস করা দরকার। কারণ, কোনও ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা ৭০ হাজার, তো কোথাও আবার ১৫-১৮ হাজার। ওয়ার্ড-ভিত্তিক ব্যয়বরাদ্দও অনেক ক্ষেত্রেই সমান হয়। তাতে ছোট ওয়ার্ড যে সুবিধা পায়, বড় ওয়ার্ড তা পায় না। তাই অনেকেরই মত, বড় ওয়ার্ড ভেঙে একাধিক ছোট ওয়ার্ড করা হোক।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘বছরের পর বছর পার হয়ে গেলেও ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস হয় না কেন? এখনকার ব্যবস্থায় নির্বাচন হচ্ছে একটি অসম জনবিন্যাসের উপরে। যা গণতন্ত্রে সমতার নীতিকে অমান্য করে।’’ তিনি জানান, কোনও কোনও ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা কম থাকায় প্রার্থীরা পাঁচ-ছয় হাজার ভোট পেয়েই জিতে যাচ্ছেন। কোনও ওয়ার্ডে আবার ৩০ হাজার ভোট পেয়েও এক জন প্রার্থী হেরে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে মাথা-পিছু ব্যয়ের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে, ছোট ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বড় ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের থেকে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। বিশ্বনাথবাবু জানান, কাউন্সিলর তহবিলে বছরে ২৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। সেটা ছোট-বড় সব ওয়ার্ডের ক্ষেত্রেই এক। তাঁর কথায়, ‘‘এই অসম ব্যবস্থা চলতে পারে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রায় একই সংখ্যক ভোটার থাকা জরুরি। কলকাতা পুর প্রশাসন কেন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর অভিযোগ, অতীতে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস নিয়ে ভাবেনি বাম পুর বোর্ডও।
এ নিয়ে ততটা মাথা ঘামাতে চান না পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী, সিপিএমের রত্না রায় মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের দাবি তুলিনি। পুরসভায় পুনর্বিন্যাস হয় বলে তো জানি না। বিধানসভা কেন্দ্রে হয়। শাসক দলের ওয়ার্ড বড় বা ছোট যা-ই হোক, অতিরিক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। বিরোধীদের ওয়ার্ডগুলির প্রতি অনেক সময়েই বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হয়।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতার ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের কাজ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জোকার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কলকাতা পুরসভার মধ্যে ঢোকাতে প্রায় দু’বছরেরও বেশি সময় লেগে গিয়েছিল। পুরসভার বিশেষ আইন বলে পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব আনতে হবে। সমীক্ষা করে দেখতে হবে। খুব জটিল পদ্ধতি। দেড় বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে।’’
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৩ সালে কলকাতার সঙ্গে নতুন কিছু এলাকা যুক্ত হয়ে ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৪১ থেকে ১৪৪ হয়েছে। নতুন করে ওয়ার্ড-ভিত্তিক পুনর্বিন্যাস জটিল ও সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি। এমনিতেই বছর বছর ভোট হচ্ছে এখানে। ২০১৯-এ লোকসভা, ২০২০-তে পুর ভোট এবং ২০২১-এ বিধানসভা। একই ভোটার তালিকায় ভোট হয়। পুনর্বিন্যাসের সময় কোথায়?’’
কবে শেষ পুনর্বিন্যাস হয়েছিল?
১৯৮৪ সালের জানুয়ারি মাসে যাদবপুর, বেহালা ও গার্ডেনরিচ কলকাতা পুর এলাকায় যুক্ত হয়। পুনর্বিন্যাস বলে কিছু হয়নি আর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy