জন ইন্ডিকট।
সাড়ে পাঁচ মাস আগের বৌবাজার বিপর্যয়ের ধাক্কার পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ এ বার অনেকটাই সাবধানী। এই পর্বে পঞ্চাশ মিটার দূরত্ব হিসেব করে কার্যত পা মেপে মেপে এগোনো হচ্ছে। বিপর্যয় সামলানোর দায়িত্বে থাকা হংকংয়ের বিশেষজ্ঞ জন ইন্ডিকটের নেতৃত্বাধীন কমিটি মনে করছে, আপাতত ওই ৫০ মিটার জায়গা মেপে এগোনোর ‘ফর্মুলাতেই’ সাফল্য আসবে।
মেট্রো সূত্রের খবর, যেখানে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হবে, প্রথমে সেই জায়গার মাটির চরিত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার পরে যন্ত্রকে সেই মতো ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হবে। একই সঙ্গে যে বাড়ির নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ যাওয়ার কথা, সেগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। আগের বারের পরিস্থিতির যাতে কোনও ভাবেই পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য অতি সতর্ক মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সেই জন্য তড়িঘড়ি বাড়ি খালি করানো থেকেও বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এন্ডিকট এবং তাঁর সহযোগী সুড়ঙ্গ-বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার ব্রিজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মেনে এগোলে তবেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ করবে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘ঊর্বী’। তা না-হলে কাজ বন্ধ রাখা হবে। কিন্তু কোনও ভাবেই নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা হবে না। ‘ঊর্বী’ যাতে কাজ করতে করতে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে, নজর রাখা হচ্ছে সে দিকেও। ৫০ মিটার কাজ করার পরে যন্ত্রের স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখে তাকে পরের কাজের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
জীর্ণ বাড়ির বাসিন্দাদের সরানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ নীতি নিচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বাড়ির ঠিক নীচে মাটির ভিতরের অংশ থেকে অন্তত ২৫ মিটার দূরত্বে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলাকালীনই সেই বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের সরানো হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়ির ভার ধরে রাখার জন্য ইস্পাতের খুঁটি ব্যবহার করার পাশাপাশি তরল কংক্রিট (গ্রাউট) ব্যবহার করে বাড়ির ভিত এবং দেওয়াল মজবুত রাখারও কাজও করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই চৈতন সেন লেন সংলগ্ন কয়েকটি পরিবারকে আগাম সতর্কতা হিসেবে হোটেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অসুস্থ এবং চিকিৎসা চলছে এমন কয়েক জনকে স্থানান্তকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হচ্ছে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘কোনও রকম তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে না। যে সব পরিবারকে সরানো হয়েছে, তাদের সময় দিয়েই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সব মিটে গেলে ওই পরিবারগুলিকে তাদের পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে।’’
সাড়ে পাঁচ মাস আগে বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গে ধস নামার সময়ে বাসিন্দাদের একটা বড় অংশকে কার্যত এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। চোখের সামনে হুড়মুড়িয়ে বাড়ি ভেঙে পড়তে দেখে ঘুম উড়েছিল অনেকেরই। তাঁদের দাবি, কয়েক দশক ধরে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ি যে এ ভাবে ভেঙে পড়তে পারে, তা তাঁরা কোনও দিন ভাবেননি। বাড়ি ভেঙে পড়ার পরেও নানা পরিষেবা পেতে নাজেহাল হতে হয়েছিল তাঁদের।
ফের একই অভিজ্ঞতা হবে না তো? আশঙ্কা কাটছে না ওই পরিবারগুলির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy