স্নেহ: সন্তানের সঙ্গে তৃণা। চিড়িয়াখানায়। নিজস্ব চিত্র
জন্মের পরে মায়ের বুকের দুধ পায়নি সে। তার প্রাণ বাঁচাতে তাই ছুটে এসেছিলেন ‘পালক পিতা’! তাঁর তৎপরতাতেই এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচেছে আলিপুর চিড়িয়াখানার সদ্যোজাত জিরাফ শাবক। মঙ্গলবার থেকে টানা চার দিনের লড়াইয়ের পরে শনিবার সুস্থ হয়েছে শাবকটি। ইতিমধ্যে তার মায়ের বুকেও দুধ এসেছে। মা ও সন্তানকে মিলিয়ে দিয়ে শনিবার চাকরি থেকে অবসর নিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রবীণতম ‘কিপার’ শিউপূজন রাম।
এ দিন সন্ধ্যায় চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলছিলেন, ‘‘শিউপূজনের জন্যই বাচ্চাটি বেঁচে গেল!’’ আশিসবাবু জানান, গত মঙ্গলবার ভোরে তৃণা নামের একটি জিরাফ এক কন্যাশাবকের জন্ম দেয়। প্রসবের পরে তৃণার স্তনে দুধ তৈরি হচ্ছিল
না। শাবকটিকে বাঁচাতে চিকিৎসক প্রথমে ‘ওআরএস’ খাওয়াতে বলেন। তার পরে বলা হয়, ‘কোলোস্ট্রাম’
যুক্ত দুধ (প্রসবের পরে মায়েদের স্তন্যদুগ্ধ) আনতে। তা শুনেই শিউপূজন চলে যান খিদিরপুর এলাকার বিভিন্ন খাটালে। খুঁজে বার করেন সদ্য সন্তান প্রসব করা একটি মোষকে। তার ‘কোলোস্ট্রাম’ যুক্ত দুধ এনে বোতলে ভরে খাওয়াতে শুরু করেন জিরাফ শাবকটিকে। সঙ্গে
নিয়ে নেন ভাগ্নে অখিলেশকেও। ‘পালক পিতা’র এই চেষ্টাতেই সুস্থ হয়ে ওঠে জিরাফ শাবকটি। বর্তমানে শাবক-সহ মোট ১১টি জিরাফ রয়েছে আলিপুরে। তার মধ্যে সাতটি মেয়ে ও চারটি পুরুষ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জন্মানোর পরে মায়ের দুধ না পেয়ে একটি জেব্রা শাবকের মৃত্যু হয়েছিল। এ বার সেই মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকানো গেল।
অবসরের দিন গলা ধরে এসেছিল শিউপূজনের। কলকাতার সরকারি আবাসন ছেড়ে এ বার জন্মভিটে বিহারে ফিরে যাবেন তিনি। বলছেন, ‘‘১৯৭৯ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলাম। ছেড়ে গেলেও এই অবোলা প্রাণীগুলির জন্য মন কাঁদবেই। ওরা তো আমার সংসারের অঙ্গ ছিল।’’
সদ্যোজাত অবোলা প্রাণীটিও বোধহয় ভুলতে পারবে না প্রাণদায়ী ‘পালক পিতা’কে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy