Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Crime

নিখোঁজ ছেলেকে ফেরাতে এসে খোঁজ নেই মা-বাবারও

দিকে মহারাষ্ট্রে চিন্তায় তাঁদের পরিবার।

গোবিন্দ মুন্ডের বাবা রাওসাহেব ও মা সাগরবাই মুন্ডে। নিজস্ব চিত্র

গোবিন্দ মুন্ডের বাবা রাওসাহেব ও মা সাগরবাই মুন্ডে। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
Share: Save:

নিখোঁজ থাকা ছেলের সন্ধান পাওয়ার পরে তাঁকে বাড়ি ফেরাতে এসে বেপাত্তা হয়ে গেলেন মা-বাবা।

পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ থাকা ওই মরাঠি যুবক এখন রয়েছেন সাগরদ্বীপের হাসপাতালে। মহারাষ্ট্রের পরবনি থেকে হাওড়া হয়ে তাঁর বাবা-মায়ের সাগরে পৌঁছনোর কথা ছিল বৃহস্পতিবার। তাঁদের নিতে হাওড়া স্টেশনে এক জন গিয়েওছিলেন। কিন্তু কোথাও তাঁদের খোঁজ মেলেনি।

ও দিকে মহারাষ্ট্রে চিন্তায় তাঁদের পরিবার। বৃদ্ধ দম্পতির ফোনও বন্ধ। বাড়ির বড় ছেলে নিখোঁজ থাকায় এমনিতেই আট মাস ধরে দুশ্চিন্তায় ছিল পরবনির মুন্ডে পরিবার। এ বার পরিবারের অভিভাবকদের খোঁজ না পেয়ে ঘুম উড়েছে বাকিদের।

পরবনি জেলার দওয়ালওয়াড়ির যুবক গোবিন্দ মুন্ডে কর্মসূত্রে পরিবার নিয়ে থাকতেন পুণেতে। গোবিন্দের মতো তাঁর স্ত্রী-ও পুণের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে স্কুলে পড়ে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন গোবিন্দ। পুণের একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। মাস আটেক আগে সেই হাসপাতাল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় সন্ধান চালিয়েও খোঁজ মেলেনি গোবিন্দের।

এ দিকে, গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হওয়ার পরে সাগরদ্বীপের একটি জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায় এক যুবককে। সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিন্তু নাম-ঠিকানা বলতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ডাক পড়ে হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের। ওই ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানান, ওই যুবক প্রথমে নাম-ঠিকানা বলতে পারেননি। অম্বরীশ বলেন, ‘‘পরে আমরা আলাদা করে কথা বলার পরে তিনি পরবনি জেলার নাম বলেছিলেন। আমরা নিজেদের সংগঠনের মহারাষ্ট্রের সদস্যের মাধ্যমে সেখানকার পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাঁর বাড়ি খুঁজে বার করি।’’ কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির পরদিনই ফের নিখোঁজ হয়ে যান গোবিন্দ। ফের খুঁজে ওই হাসপাতালেই তাঁকে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে।

গোবিন্দের ভাই মাহির মুন্ডে জানান, তাঁরা দুই ভাই চাকরি সূত্রে বাইরে থাকেন বলে বাবা রাওসাহেব এবং মা সাগরবাই মুন্ডেকে পাঠিয়েছিলেন দাদাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। গত মঙ্গলবার তাঁরা আমদাবাদ-হাওড়া এক্সপ্রেসে রওনা হন। অম্বরীশ ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। শেষ যখন কথা হয়, ট্রেন তখন টাটানগরে।

তার পরে আর তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। প্রথমে ‘নট রিচেবল’ শোনা যাচ্ছিল। পরে বন্ধই হয়ে যায় ফোন। হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্য অভ্র মালাকার হাওড়া স্টেশনে গিয়েছিলেন তাঁদের নিতে। রাওসাহেবকে বলা হয়েছিল, ট্রেন থেকে নেমে সেখানেই দাঁড়াতে। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রেন হাওড়ায় ঢোকার পরে তাঁদের খোঁজ মেলেনি। এমনকি, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের মধ্যেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। স্টেশনে ঘোষণা করিয়েও খোঁজ মেলেনি বৃদ্ধ-বৃদ্ধার।

মাহির জানান, মা-বাবা তাঁদের সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করেননি। তাঁরাও ফোন করে পাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। ওঁরা কোথায় আছেন, কী অবস্থায় আছেন, জানি না। কোনও বিপদে পড়লেন কি না, তা-ও বুঝতে পারছি না।’’ এই অবস্থায় মা-বাবার খোঁজে তাঁরাও রওনা হচ্ছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Elderly Couple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy