Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Education Council

যাচাই করেই গ্রহণ নতুন প্রযুক্তিকে, বলল শিক্ষা-সভা 

ইন্টারনেটে গুগলে গিয়ে কিছু জানতে চাইলে সেই উত্তর পাওয়া যায় নিমেষেই। এর থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে এসেছে চ্যাট জিপিটি। যে প্রযুক্তি যে কোনও বিষয়ের উপরে বিস্তারিত বর্ণনা সকলের সামনে তুলে ধরছে।

An image of the award show

সমবেত: ‘এডুকেশন সিম্পোজ়িয়াম ২০২৩’-এ সংবর্ধিত অতিথিরা। সোমবার, শহরের এক হোটেলে।  ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ০৭:২৯
Share: Save:

শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত যে বিবর্তন হচ্ছে, সেই বিবর্তনকে স্বাগত জানাতে হবে। গ্রহণ করতে হবে নতুন প্রযুক্তিকে। তবে, একই সঙ্গে দেখতে হবে, সেই নতুন প্রযুক্তির উপরে আমরা যেন সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভরশীল না হয়ে পড়ি। সোমবার সন্ধ্যায় ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি পাঁচতারা হোটেলে আনন্দবাজার পত্রিকা এবং দ্য টেলিগ্রাফ নিবেদিত ‘এডুকেশন সিম্পোজ়িয়াম ২০২৩’-এ এসে এমনটাই বললেন অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। সেই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘চ্যাট জিপিটি বা কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে শিক্ষা দানের পদ্ধতি বিবর্তনের অঙ্গ। কিন্তু অন্ধের মতো এদের উপরে ভরসা করলে চলবে না। চ্যাট জিপিটি যে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে, সেগুলির সত্যতা যাচাই করতে হবে। অর্থাৎ, এদের দাসত্ব নয়। পাশাপাশি, নতুন বিষয় নিয়ে ভাবা, আপাতকঠিন কোনও বিষয়কে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেললে চলবে না।”

ইন্টারনেটে গুগলে গিয়ে কিছু জানতে চাইলে সেই উত্তর পাওয়া যায় নিমেষেই। এর থেকেও
কয়েক ধাপ এগিয়ে এসেছে চ্যাট জিপিটি। যে প্রযুক্তি যে কোনও বিষয়ের উপরে বিস্তারিত বর্ণনা সকলের সামনে তুলে ধরছে। এর পাশাপাশি, বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কৃত্রিম মেধার প্রয়োগ। তাই এই ধরনের প্রযুক্তিকে দূরে ঠেলা নয়, বরং গ্রহণ করতে হবে। এর মাধ্যমে আগামী দিনে কর্মসংস্থানের বাজার উন্মুক্ত হবে, এমনটাই মনে করেন বি সি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জয় এস পাওয়ার এবং টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের কর্ণধার তথা সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী।

সত্যম তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘কম্পিউটার যখন প্রথম এসেছিল, তখন সকলে ভেবেছিলেন, এর ফলে হয়তো অনেকে কাজ হারাবেন। কিন্তু, বাস্তবে ঘটেছিল উল্টো। তার পরে এল ইন্টারনেট, গুগল। তাই নিত্য নতুন প্রযুক্তি কাজের প্রথাগত পদ্ধতিকে ভেঙে আবার নতুন করে গড়তে সাহায্য করে। তাই চ্যাট জিপিটি এবং কৃত্রিম মেধাকে উপেক্ষা করা যাবে না। ভবিষ্যতে শিক্ষা থেকে শুরু করে বাণিজ্য, সব ক্ষেত্রে তা ভীষণ ভাবে কাজে লাগবে।’’

অনুষ্ঠানে কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে লেখাপড়ার সুবিধার কথা তুলে ধরেন আই আই এইচ এম-এর কর্ণধার সুবর্ণ বসু। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রেণিকক্ষের পড়ায় বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে কৃত্রিম মেধা। কোনও প্রশ্নের ভুল উত্তর লিখলে সেটি কেন ভুল হয়েছে, তার ব্যাখ্যা এই প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারবে পড়ুয়ারা। শুধু তা-ই নয়, কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে অফিসের অনেক কাজও এখন বাড়িতে বসে সহজে করা সম্ভব হচ্ছে।”

এই পরিপ্রেক্ষিতেই কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতিতে অনলাইনে পড়াশোনার কথা তুলে ধরেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব সহজে অনলাইন পড়াশোনাকে গ্রহণ করেছি। এটা ঠিকই, এতে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষকদের সরাসরি যোগাযোগ হচ্ছে না। ফলে, কিছু খামতি থেকেই যাচ্ছে। তবুও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন পড়ার সুবিধাকে কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মত, ‘‘কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে কতটা পড়াশোনা করব, সেটাও ঠিক করতে হবে আমাদেরই। দেখতে হবে, চ্যাট জিপিটি বা কৃত্রিম মেধা আমাদের মৌলিক ভাবনা-চিন্তার ক্ষমতাকে যেন প্রভাবিত না করে।’’ অনুষ্ঠানে রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের পরে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অভিনেতা রাহুল বসু। কী ভাবে বার বার বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে তিনি ফিরে এসেছেন, সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। রাহুল বলেন, ‘‘প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হবেই। সেখান থেকে কী ভাবে বেরিয়ে আসা যায়, সেটাই শেখা জরুরি। একই সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে নতুনকেও।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Scrutiny ChatGPT new technologies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy