Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

এসপ্লানেড পৌঁছে গেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সুড়ঙ্গ

টানা ২৩ মাসের চেষ্টায় হাওড়া ময়দান থেকে গঙ্গা পেরিয়ে এসপ্লানেডে পৌঁছল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘প্রেরণা’ এসপ্লানেড স্টেশনের ডায়াফ্রাম ওয়াল ছুঁতেই সুড়ঙ্গের ভিতরে উৎসবে মেতে ওঠেন নির্মাণ সংস্থার কর্মীরা।

আনন্দ: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ এসপ্লানেড ছোঁয়ার খুশিতে উদ্‌যাপন কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ এসপ্লানেড ছোঁয়ার খুশিতে উদ্‌যাপন কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

টানা ২৩ মাসের চেষ্টায় হাওড়া ময়দান থেকে গঙ্গা পেরিয়ে এসপ্লানেডে পৌঁছল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘প্রেরণা’ এসপ্লানেড স্টেশনের ডায়াফ্রাম ওয়াল ছুঁতেই সুড়ঙ্গের ভিতরে উৎসবে মেতে ওঠেন নির্মাণ সংস্থার কর্মীরা।

মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে মাটির উপরে সমস্ত আয়োজন করে রেখেছিলেন কেএমআরসিএল (কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড) কর্তৃপক্ষ। বিশাল পর্দায় টিবিএম-এর ওই ছবি দেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেই ছবি পুরো দেখানো যায়নি। যদিও তাতে সুড়ঙ্গ খননের সঙ্গে যুক্ত মেট্রোর কর্তা ও কর্মীদের মধ্যে উৎসাহের ঘাটতি ছিল না।

গত বছর বাংলা নববর্ষের আগের দিন রীতিমতো পুজো করে নদীর নীচে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করেছিলেন নির্মাণ সংস্থার কর্মীরা। তার পরে মাস তিনেকের মধ্যে পরপর নদী অতিক্রম করেছিল পূর্ব এবং পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ।

কলকাতা মেট্রো রেলের মুখ্য বাস্তুকার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, “ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুলের স্তম্ভের যে পাইলিং রয়েছে, তার ৬ মিটার নীচ দিয়ে আমাদের সুড়ঙ্গ গিয়েছে। কলকাতার বিপুল যানবাহনের চাপ সামলে ওই রাস্তা খুলে দেওয়া সহজ ছিল না।”

কেএমআরসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) অজয়কুমার নন্দী শোনাচ্ছিলেন হেরিটেজ-জটের কথা। তাঁর কথায়, “সময়মতো ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অনুমতি পাওয়াটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।” অনুমোদন-জট কাটানোর প্রশ্নে মেট্রোর একাধিক কর্মী
ও আধিকারিকদের কথায় উঠে আসে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ভূমিকার কথাও।

নির্মাণ সংস্থার অন্যতম আধিকারিক, সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ পল ব্যারেল দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানের বাসিন্দা। গত ২০ মাস ধরে কলকাতাই তাঁর ঠিকানা। তাঁর কথায়, “নদীর নীচে সুড়ঙ্গ নিয়ে চিন্তায় ছিলাম না। কিন্তু অনেকগুলি ঐতিহ্যবাহী পুরনো বাড়ির পাশ দিয়ে সুড়ঙ্গ নিয়ে যাওয়ার সময়ে খুব সতর্ক থাকতে হয়েছে।” ডেনমার্কের ওডেন্সের বাসিন্দা মাইক বোর্ডবি প্রকল্পের অন্যতম পরামর্শদাতা। তাঁর কথায়, “এটা আমার ১৫ নম্বর প্রকল্প। সিঙ্গাপুরেও রাস্তার নীচে মেট্রোর কাজ করেছি। কিন্তু কলকাতার সঙ্কীর্ণ পথের নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার চ্যালেঞ্জ অন্য রকম।”

মেট্রো সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার থেকেই পুরোদমে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শুরু হবে। চলতি মাসের শেষের দিকে ওই সুড়ঙ্গের এসপ্লানেড পৌঁছে যাওয়ার কথা। সেই পর্বের কাজ মিটলে দৈত্যাকার প্রায় ৬০ মিটার লম্বা টিবিএম-কে মাটির উপরে তুলে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। দু’টি টিবিএম উপরে তুলে আনার পরে ফের অন্য দু’টি টিবিএম নামানো হবে এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সুড়ঙ্গ খননের জন্য। ওই পথে প্রায় ৭০০টি বাড়ির নীচ দিয়ে এগোতে হবে জোড়া সুড়ঙ্গকে। সে-ও আর এক পরীক্ষা।

অন্য বিষয়গুলি:

East-West Metro Tunnel Esplanade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE