জট কেটেও যেন কাটছে না ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের।
এত দিন আটকে ছিল জমি নিয়ে জটে। এ বার প্রকল্পের ভবিষ্যৎ ঝুলে রয়েছে প্রশাসনিক অনুমতির কারণে। এখনও তিনটি দফতর থেকে অনুমতি আসেনি ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তাদের হাতে। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ে কেটে চলা সুড়ঙ্গ কিছু দূর গিয়েই ফের থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তাদেরই।
কী কী বাধা রয়েছে এখনও?
• রাজ্য সরকারের চাহিদা মতো রুট পাল্টে তৈরি হওয়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নকশায় যাত্রাপথে পড়ছে চারটি পুরনো িগর্জা। সেগুলি ঐতিহ্যশালী ভবন হওয়ায় নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ কাটতে চাই কেন্দ্রীয় পুরাতাত্ত্বিক গবেষণা দফতরের অনুমতি। তা এখনও আসেনি।
• এসপ্ল্যানেড স্টেশনের জন্য চিহ্নিত জায়গাটি সেনাবাহিনীর আওতাধীন। তাই সেখানে স্টেশন করতে গেলে তাদের অনুমতি নিতে হবে। আসেনি তা-ও।
• প্রথমে যে রুটে মেট্রোর যাওয়ার কথা ছিল, রাজ্য সরকারের চাহিদা মতো তা অনেকটাই বদলে গিয়েছে। পাল্টেছে নকশাও। ফলে যাত্রাপথও বেড়েছে। এক দিকে কাজ বন্ধ থাকার জেরে বাড়তি সময় লাগা, অন্য দিকে যাত্রাপথ বেড়ে যাওয়া— দুইয়ে মিলে বেড়ে গিয়েছে প্রকল্পের খরচও। কিন্তু সেই খরচ কে দেবে বা আদৌ রেল মন্ত্রক তা মঞ্জুর করবে কি না— সেটাও এখনও স্থির হয়নি। ফলে ঠিক সময়ে অর্থের জোগান হাতে না পৌঁছলে কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তারা।
ইস্ট-ওয়েস্ট প্রকল্প সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে বিধাননগরের সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষের মুখে। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে হাওড়া ময়দান থেকে। এখান থেকে সুড়ঙ্গ হুগলি নদীর তলা দিয়ে পৌঁছবে মহাকরণ। সেখান থেকে এসপ্ল্যানেড ও তার পরে শিয়ালদহ। হাওড়া ময়দান অংশের কাজ শেষের পরেই হুগলি নদী পেরিয়ে মহাকরণ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কাটা শুরু হবে। হাওড়া ময়দান থেকে হুগলি নদী পর্যন্ত দূরত্ব ১১০০ মিটার। আপ-ডাউন মিলিয়ে সুড়ঙ্গ (টুইন টানেল) কাটা হবে ২২০০ মিটার। অনেক বাধা কাটিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে ২১ এপ্রিল থেকে। আপ-ডাউন লাইন মিলিয়ে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ এগিয়েছে ৪৫০ মিটার। নতুন নকশা অনুযায়ী ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মোট সুড়ঙ্গপথের দূরত্ব হবে ৭.১৯ কিলোমিটার।
হাওড়া ময়দানে কাজ শুরুর দিন কয়েকের মধ্যেই সুড়ঙ্গপথ পৌঁছে যায় হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে কাজ করতে গিয়ে স্টেশনের শেডের উপরে ক্রেন ভেঙে পড়েছিল। এর পরেই যাত্রী-নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ওই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কাজের অগ্রগতি দেখতে সম্প্রতি পরিদর্শনে যান ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর চেয়ারম্যান ও কলকাতা মেট্রোর জিএম মূলচাঁদ চৌহান। সঙ্গে ছিলেন ইস্ট-ওয়েস্টের কর্তারাও। পরিদর্শন সেরে জিএম কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছেন ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তাদের। যার মধ্যে প্রধান হল— নির্দিষ্ট প্ল্যাটর্ফম এলাকায় ট্রেন চলাচল বন্ধ (ব্লক) রাখা। এবং সেই ব্যবস্থা নিতে হবে অন্তত সাত দিন আগে।
মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জিএম বলেছেন, এ বার স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় কাজ করতে হলে রেল কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে জানিয়ে, সব রকম সতর্কতা-সহ তা করতে হবে।’’
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কর্তাদের আশা, যে ভাবে কাজ এগোচ্ছে, তাতে আগামী ডিসেম্বর-জানুযারির মধ্যেই সুড়ঙ্গ পৌঁছে যাবে হুগলি নদী পর্যন্ত। তার পরেই নদীর তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ শুরু হবে। ওই জায়গায় নদীর জলের উচ্চতা ২৬ মিটারের কাছাকাছি। তাই সুড়ঙ্গ যাবে ১৩ মিটার নীচ দিয়ে।
তবে সব কিছুই এখন নির্ভর করছে রেল মন্ত্রকের অর্থ মঞ্জুর করার উপরে। তার দিকেই এখন তাকিয়ে সবাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy