সফল: সুড়ঙ্গে টিবিএমের সামনে মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র
করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ চেহারা নেওয়ার পরে বন্ধ করে দিতে হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার অফিস। প্রায় তিন সপ্তাহ যাবৎ সুভাষ সরোবর সংলগ্ন সেই অফিস বন্ধ। কিন্তু তার পরেও কর্মী এবং আধিকারিকদের নিরন্তর চেষ্টায় চলেছে ইস্ট-ওয়েস্টের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের নির্মাণকাজ। মেট্রো সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিক থাকলে আর দিন কয়েকের মধ্যেই ‘অভিশপ্ত’ দুর্গা পিতুরি লেন পেরিয়ে বৌবাজারে পৌঁছবে টিবিএম ‘ঊর্বি’। মাত্র ৩০-৪০ মিটার পথ পেরোলেই পৌঁছনো যাবে সেখানে। তার পরে অবশিষ্ট পথটুকু পেরোলে শিয়ালদহ এবং এসপ্লানেডের মধ্যে জোড়া সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হবে। যা এই পরিস্থিতিতে বড় সাফল্য বলে মনে করছেন ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের শেষ দিকে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ সম্পূর্ণ করেছিল ‘ঊর্বি’। তার পরে সেটিকে শিয়ালদহে তুলে ফের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজের জন্য ঘুরিয়ে বসানো হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে যন্ত্রটি পুরোদমে কাজ শুরু করে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এর পরে মাঝের সাড়ে আটশো মিটার দূরত্ব অতিক্রম করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছিল তাঁদের কাছে। কারণ, মাটির উপরে একাধিক পুরনো বাড়ি থাকায় খুব সাবধানে সুড়ঙ্গ খনন করা ছাড়াও অতিমারি পরিস্থিতিতে ওই সব বাড়ির বাসিন্দাদের হোটেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করতে হয়েছে। পাশাপাশি, মেট্রোর কর্মীরা যাতে কেউ কোনও ভাবে সংক্রমিত না হন, লক্ষ রাখতে হয়েছে সে দিকেও।
করোনার প্রথম ধাক্কার সময়ে কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ সংক্রমিত হওয়ায় প্রায় এক মাস কাজ বন্ধ ছিল। সেই কারণে এই পর্বে সংক্রমণ ঠেকাতে খুবই সতর্ক ছিলেন কর্তৃপক্ষ। যদিও তা পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি। বেশ কয়েক জন কর্মী ও আধিকারিক আক্রান্ত হওয়ায় ঠিকাদার সংস্থার অফিস বন্ধ করে দিতে হয়। কিন্তু, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার পরেও কাজ বন্ধ হয়নি। কর্মী এবং আধিকারিকদের আলাদা রাখার, যাতায়াতের পৃথক ব্যবস্থা ছাড়াও বিশ্রামের জায়গা প্রতি ঘণ্টায় জীবাণুমুক্ত করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।
সারা দেশে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের একাংশ দেশ ছেড়েছেন। তবে তাঁরা নিজেদের দেশ থেকে প্রতিনিয়ত তদারকি চালিয়ে গিয়েছেন। একাধিক প্রতিকূলতার মধ্যেই এই কঠিন লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছনো সম্ভব করেন ফিল্ড কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা, সুড়ঙ্গে তীব্র গরম— সব কিছু সামলে কাজ চালিয়ে যেতে হয়েছে। এক ঘণ্টা কাজের পরে আধিকারিকেরা বেরিয়ে এসে পর্যায়ক্রমে আবার ফিরে গিয়ে কাজ করেছেন। কাজের গতি মন্থর হলেও তা বন্ধ হয়নি।’’ এই প্রয়াসই তাঁদের সাফল্যের কাছাকাছি এনেছে, বলছেন মেট্রোর আধিকারিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy