ছবি: সংগৃহীত।
সাড়ে পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের মূলে ঠিক কার গাফিলতি ছিল, এখনও তা নির্ধারণ করা যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুড়ঙ্গে আটকে থাকা টিবিএম বা টানেল বোরিং মেশিন উদ্ধার হলে তবেই সত্য প্রকাশ পেতে পারে। তবে দ্বিতীয় দফায় নতুন করে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে কাজ শুরু করার আগে প্রস্তুতিতে ফাঁক রাখতে চান না সুড়ঙ্গ-বিশেষজ্ঞ জন এন্ডিকট এবং তাঁর কমিটি। বিপর্যয়ের পরে পরিস্থিতি সামলাতে তাঁর উপরে ভরসা রেখেছিলেন ওই মেট্রোর নির্মাতা সংস্থা কেএমআরসিএল বা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের আধিকারিকেরা।
আদালতের নজরদারিতে চলা সুড়ঙ্গ খননের কাজে ফের ধস নামার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে এক ঘণ্টার মধ্যে তা সামলানোর প্রস্তুত হয়েই ফের কাজে নামা হচ্ছে বলে শুক্রবার জানান এন্ডিকট এবং তাঁর সহযোগী ক্রিস্টোফার ব্রিজ। তবে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণ শুরুর আগে ঠিকাদার সংস্থা নিযুক্ত আধিকারিক ও প্রযুক্তিবিদ দলের খোলনলচে বদলে দিয়েছেন এন্ডিকট। পুরনো আধিকারিকদের অনেকেই বিপর্যয়ের সময় প্রত্যক্ষ ভাবে সুড়ঙ্গ খননে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের জয়গায় অন্তত ২৫ জন নতুন আধিকারিককে বেছে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আট গুণ বেশি দূরত্ব পেরিয়ে ইমার্জেন্সিতে অ্যাম্বুল্যান্স
সুড়ঙ্গে দিনরাত টিবিএমে নজরে রাখছেন জার্মানির যন্ত্র নির্মাতা সংস্থার প্রযুক্তিবিদেরা। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের নথিভুক্ত করা তথ্য বিশ্লেষণের জন্য ইন্টারনেট মারফত সঙ্গে সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে সংস্থার সদর দফতরে। ন্যূনতম অস্বাভাবিকতাও যাতে চোখ না-এড়ায়, সেই জন্য কর্মীদের বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান ক্রিস্টোফার। টিবিএম ‘ঊর্বী’-তে বিপত্তি মোকাবিলা করার জন্য যোগ করা হয়েছে একাধিক নতুন বৈশিষ্ট্য।
সুড়ঙ্গ খননের সময় উপরের ঘরবাড়ির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না, তা দেখতে ছ’ঘণ্টা অন্তর দিনে চার বার নজরদারি চালানো হবে। ন্যূনতম অস্বাভাবিকতা চোখে পড়লে কাজ বন্ধ রেখা তার মোকাবিলা করা হবে।
২০২১ সালের মার্চের মধ্যে শিয়ালদহ পর্যন্ত জোড়া সুড়ঙ্গের কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। ৪-৫ মাসের মধ্যে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ শেষ করতে চায় তারা। তার পরে শিয়ালদহ থেকে টিবিএম ঘুরিয়ে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ হবে।
বৌবাজারে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা টিবিএম ‘চণ্ডী’-কে ৫০ মিটার দীর্ঘ, ৫০ মিটার প্রশস্ত এবং ২৫ মিটার গভীর একটি গর্ত খুঁড়ে বার করে আনা হবে। তার পরে ওই অংশে উপর থেকে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হবে। বৌবাজারে সুড়ঙ্গ এলাকায় ২২টি জায়গার মাটির নমুনা পরীক্ষা করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। কলকাতার অন্যান্য অংশের মাটির সঙ্গে তার ফারাক চোখে পড়েনি বলে জানান এন্ডিকট। অ্যাকুইফারে টিবিএম ধাক্কা খাওয়ার তত্ত্বও খারিজ করেছেন তিনি। ৩১ অগস্ট টিবিএমে জল এবং মাটি ঢুকতে শুরু করার পরে তা ঠেকাতে না-পারায় বিপদ বাড়ে বলে তাঁর মত। তবে যন্ত্রের ত্রুটি, নাকি নজরদারির ভুল— ঠিক কী কারণে বিপর্যয় ঘটল, তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি। তাঁর বক্তব্য, টিবিএম পরীক্ষার পরেই সেটা জানা সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy