প্রতীকী ছবি।
প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিলে দেওয়া যাবে পুষ্পাঞ্জলি। এমন ছাড়ই কি মণ্ডপে ঢুকে প্রতিমা দর্শনের পথ করে দিতে চলেছে? প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকলেই পুষ্পাঞ্জলি বা সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করা যাবে বলে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তার পরেই এই প্রশ্নটা ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, ‘‘এর ফলে তো সেই মণ্ডপে ঢুকবেন মানুষ! অন্য পাড়ার কেউ প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ়ের শংসাপত্র নিয়ে অঞ্জলি দিতে এলেই বা তাঁকে আটকানো হবে কী ভাবে? কী করেই বা পুজো কমিটি স্থির করবে, কোনটা আসল শংসাপত্র, আর কোনটা ভুয়ো?’’
একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজোকর্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েই বলছি, প্রতিষেধকের ভুয়ো শংসাপত্র দিলে ধরবে কে? এ জন্য আবার আলাদা করে শংসাপত্র দেখার লোক রাখতে হবে। সেই টাকা কে দেবে?’’ হিন্দুস্থান পার্কের পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুতপা দাস বললেন, ‘‘আমাদের পাড়ায় কার কার প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়া আছে, আমরা জানি। কিন্তু অন্য পাড়া থেকে কেউ এলে তাঁকে আটকাব কী করে? তিনি তো তা হলে সেই মণ্ডপে ঢুকেই প্রতিমা দেখলেন।’’
বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর পুজোকর্তা গৌতম নিয়োগী বলেন, ‘‘আমাদের পুজোয় তো কম লোক অঞ্জলি দিতে বা সিঁদুর খেলতে আসেন না! কাকে ছেড়ে কাকে বাদ দেব? সমস্যা বুঝে এ বার তাই আমরা পুষ্পাঞ্জলি বা সিঁদুর খেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। আদালতের এই রায়ে বিভ্রান্তি বাড়ল। শেষ পর্যন্ত কোনটা রাখব জানি না।’’ একই দাবি বালিগঞ্জ কালচারালের পুজো উদ্যোক্তা অঞ্জন উকিলের। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিষেধকের শংসাপত্র দেখে ঢোকানো যে কোনও পুজো কমিটির কাছেই কঠিন কাজ। কী ভাবে সেটা করা হবে, তার সিদ্ধান্ত প্রশাসনকেই নিতে হবে।’’
টালা বারোয়ারির পুজোকর্তা অভিষেক ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘ছোটদের এখনও প্রতিষেধক নেওয়া হয়নি। আবার অনেকেই এমন রয়েছেন, যাঁদের করোনা হওয়ায় পুজোর আগে প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া হয়নি। তাঁদের অঞ্জলি দিতে বারণ করব কী ভাবে?’’ দেশপ্রিয় পার্কের পুজোকর্তা সুদীপ্ত কুমার অবশ্য জানালেন, বয়স্ক এবং ছোটদের অঞ্জলি দেওয়ার জন্য এ বার পৃথক জায়গার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন তাঁরা। আদালতের এই নির্দেশের পরে দু’টি ডোজ় নেননি এমন দর্শনার্থীকেও হয়তো সেখানেই বসাতে হবে। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজাকর্তা শাশ্বত বসুর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারের সহায়তায় অন্তত পাঁচটা শিবির করে প্রতিষেধকের দুটো ডোজ় নেওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রথম থেকেই জোর দিয়েছি। সেটাই কাজে লেগে যাবে।’’
তবে এমন নির্দেশে চিন্তার কিছু দেখছেন না কাশী বোস লেনের পুজোকর্তা সৌমেন দত্ত। তিনি জানাচ্ছেন, আদালত বড় পুজোয় কমিটির ৬০ জনের প্রবেশে ছাড় দিয়েছে। প্রতি বার তাঁদের মণ্ডপে পাড়া থেকে অন্তত ১২০ জন অঞ্জলি দেন। এ বার আগে থাকতেই ওই ১২০ জনকে ২৫ জনে ভাগ করে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দলগুলোর আলাদা নামকরণ করে কার্ডও তৈরি আছে। আদালতের নির্দেশের পরে দু’টি ডোজ়ের শংসাপত্র দেখে ওই কার্ড বিলি করে দিলেই সমস্যা মিটে যাবে। সমাজসেবী সঙ্ঘের পুজোকর্তা অরিজিৎ মৈত্রের দাবি, ‘‘আদালত সমস্যা অনেক মিটিয়ে দিয়েছে। কাকে বাদ দিয়ে আর কাকে বেছে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সুযোগ করে দেব, সেই গুরুদায়িত্ব থেকেও কমিটিগুলিকে মুক্তি দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy