উত্তর শহরতলির সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম দমদম জংশন। সেখানে যাত্রী প্রচুর, সঙ্গে সমস্যাও কম নয়। নিষ্ক্রিয় ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে বোর্ড থেকে বেহাল সিঁড়ি— সব সমস্যাই রয়েছে। আর তাই পরিষেবার বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফুটব্রিজে পদপিষ্ট হয়ে সাঁতরাগাছি স্টেশনে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। জখম হয়েছেন দশ জনেরও বেশি। পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট দমদম জংশনে দু’টি ফুটব্রিজ সংযোগকারীর ভূমিকায় রয়েছে। অথচ সেগুলি এতটাই সঙ্কীর্ণ যে একসঙ্গে অনেক যাত্রীর পক্ষে চলাফেরা করাই দায় হয়ে যায় বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। কিন্তু নিরুপায় হয়ে সেই সংযোগকারী ফুটব্রিজেই ট্রেনের অপেক্ষায় থাকেন যাত্রীরা। আর আপ-ডাউন ট্রেনের একসঙ্গে ঘোষণা হলে সেখানে ধাক্কাধাক্কিই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ, একটি ফুটব্রিজের একাংশ বন্ধ করে মেরামতির কাজ চলায় সমস্যাআরও বেড়েছে।
মেট্রো থেকে নেমে রোজ বনগাঁ, হাসনাবাদ বা শিয়ালদহ মেন শাখার ট্রেন ধরেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। আবার একই ভাবে ওই সব শাখার ট্রেন থেকে নেমে মূল শহরে আসার জন্য মেট্রো ব্যবহার করেন তাঁরা। পাশাপাশি, অনেকেই বনগাঁ বা হাসনাবাদ শাখা থেকে এসে মেন শাখার ট্রেন ধরার জন্য দমদম স্টেশনকেই বেছে নেন। একই ভাবে মেন শাখার ট্রেনে আসার পরে দমদম জংশন থেকে হাসনাবাদ বা বনগাঁ শাখার ট্রেন ধরেন অনেকেই। অভিযোগ, একাধিক ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে বোর্ডে কখনও কখনও কোনও ট্রেনের সময়ই দেখানো হয় না। কিছু ডিসপ্লে বোর্ড একেবারে বন্ধ থাকে বলেও অভিযোগ। ফলে মেট্রো থেকে নেমে ট্রেন ধরার জন্য আতান্তরে পড়তে হয় মানুষকে। ট্রেন কোন প্ল্যাটফর্মে আসবে জানতে না পারায় দৌড়তে দৌড়তে মাঝপথে দিক বদল করে অন্য প্ল্যাটফর্মে যেতে হয় তাঁদের। কয়েক দিন আগে এমন অভিজ্ঞতা হয় প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যাত্রীর। তাঁর কথায়, ‘‘কাজ সেরে ফেরার পথে সবারই তাড়া থাকে। অথচ বোর্ডে কোনও ট্রেনের সময় দেখানো হচ্ছে না। ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষারত যাত্রীদের থেকে শুনে একটি প্ল্যাটফর্মে দৌড়লাম। কিন্তু দেখা গেল, সেখানে কোনও ট্রেন নেই। বোর্ড থেকে তথ্য না মেলায় অগত্যা অন্য যাত্রীদের উপরেই ভরসা রাখতে হয়।’’ যাত্রীদের অভিযোগ, শুধু ডিসপ্লে বোর্ড বন্ধ থাকাই নয়, কখনও কখনও লোকাল ট্রেনের নাম ঠিক থাকলেও সময় দেখানো হয় তিন-চার ঘণ্টা আগের।
দমদমের মতো ব্যস্ত জংশনে রোজ কয়েক লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। সেখানের সাবওয়ের সিঁড়ির অবস্থাও করুণ। জায়গায় জায়গায় সিঁড়ি শুধু ভাঙাই নয়, কোথাও কোথাও তা এতটাই মসৃণ হয়ে গিয়েছে যে সামান্য এ দিক–ও দিক হলেই সিঁড়ি থেকে পড়ে জখমও হতে হয় আমজনতাকে। দুই এবং তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি চলমান সিঁড়ি রয়েছে। কিন্তু তা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে। ফলে বন্ধ থাকা অবস্থাতেই সেটি দিয়ে পায়ে হেঁটে উঠতেন যাত্রীরা। কিন্তু এখন সেখান দিয়ে যাতায়াত একেবারেই বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিত্যযাত্রী মনোজ দাস। তিনি বলেন, ‘‘এমন সঙ্কীর্ণ এসক্যালেটর থেকেও লাভ হয় না। উল্টে জায়গাটা আটকে পড়ে রয়েছে। ফলে আপ-ডাউন ট্রেন একসঙ্গে এলে ধাক্কাধাক্কি হয়।’’
সমস্যা যে রয়েছে তা কার্যত স্বীকার করে শিয়ালদহ ডিভিশনের এক কর্তা বলেন,‘‘যেখানে যেখানে ত্রুটি রয়েছে, তা খুঁজে বার করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy