Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫

রবীন্দ্র সরোবরে থমকে গেল কচ্ছপ সংরক্ষণ প্রকল্প

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রবীন্দ্র সরোবরে বহু দিন ধরে বেশ কয়েকটি কচ্ছপ রয়েছে। কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য বছরখানেক আগে একটি পরিকল্পনা হয়। এর জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও হয়।

রবীন্দ্র সরোবরে থমকে কচ্ছপ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া। —ফাইল চিত্র

রবীন্দ্র সরোবরে থমকে কচ্ছপ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া। —ফাইল চিত্র

কৌশিক ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯
Share: Save:

রবীন্দ্র সরোবরে কচ্ছপের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় সেখানে কচ্ছপ সংরক্ষণ প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখা হল। কচ্ছপের মৃত্যুর কারণ জানতে পরিবেশকর্মীদের একাংশ ময়না-তদন্তের দাবি জানালেও সরোবর কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি। তবে তাঁদের দাবি, জলাশয়ে আর কোনও কচ্ছপ বা জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে কি না, নজর রাখা হবে। প্রয়োজনে একাধিকবার জলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে জলে দূষণ হচ্ছে কি না।

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রবীন্দ্র সরোবরে বহু দিন ধরে বেশ কয়েকটি কচ্ছপ রয়েছে। কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য বছরখানেক আগে একটি পরিকল্পনা হয়। এর জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও হয়। বিভিন্ন কারণে দেরি হওয়ার পরে এ বছর শীতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছিল। নতুন কচ্ছপ ছাড়া, তাদের ডিম পাড়ার জায়গা এবং ডাঙায় উঠে রোদে বসার জায়গা তৈরির উপরেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা ছিল। সেই প্রকল্পই আপাতত থমক গেল। সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী জানান, কচ্ছপ জাতীয় প্রাণীরা বাস্তুতন্ত্রে দূষণ ঘটছে কি না, তা অনেক আগে বুঝতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরোবরে নজরদারি চালানো দরকার।

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ছটের পরে সরোবরের জলের নমুনা পরীক্ষা করে দূষণ ধরা পড়েনি। তাই দূষণ থেকে কচ্ছপ মারা গিয়েছে বলে মনে হয় না। মৃত কচ্ছপ এবং মাছ পুঁতেও দেওয়া হয়েছে। সুতরাং কচ্ছপের ময়না-তদন্তের প্রয়োজন আছে বলেও মনে হয় না।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, ছট পুজোর পরেই, ৪ নভেম্বর সকালে সরোবরে একটি কচ্ছপ এবং দু’টি মাছ মৃত অবস্থায় ভাসতে দেখা যায়। এই ঘটনায় দূষণের অভিযোগ তোলেন পরিবেশকর্মীদের একটি বড় অংশ। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ছটের ফলে সরোবরে দূষণ হতেই পারে। ওই জলজপ্রাণীগুলি কী ভাবে মারা গেল, তা জানতে হলে ময়না-তদন্তের প্রয়োজন। দূষণ ছাড়া অন্য কারণে যদি প্রাণীগুলি মারা যায়, সেটা ময়না-তদন্তের রিপোর্টেই জানা যাবে।’’

বন দফতরই বা কচ্ছপের ময়না-তদন্ত করছে না কেন? এক আধিকারিক জানান, কেএমডিএ চিঠি দিলে তবেই বন দফতর মৃত প্রাণীর ময়না-তদন্ত করতে পারে। কেএমডিএ-র তরফে এ নিয়ে কোনও আবেদন করা হয়নি। এ ছাড়াও মাত্র একটি কচ্ছপ ও দু’টি মাছ মারা যাওয়ার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও নতুন করে কোনও প্রাণীর মৃতদেহ মেলেনি। ফের এই ধরনের ঘটনা ঘটলে সরোবর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, সরোবরের জলের যে রিপোর্ট এসেছে তাতে ‘কলিফর্ম’ ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাকি মাপকাঠি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যেই রয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী বলেন, ‘‘ছট পুজোর পরে সরোবরের জলের যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তার রিপোর্ট সন্তোষজনক। কখন, কী ভাবে ওই নমুনা নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে, তা জানতে পারলে ভাল হত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindra Sarobar Turtle Conservation Environment Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy