Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Crime

মেডিক্যালের হস্টেলে পড়ুয়াকে ধর্ষণে অভিযুক্ত চিকিৎসক

সোমবার এসএসকেএমে অভিযোগকারিণীর শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২০ ০৮:৫১
Share: Save:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সেখানকারই এক পড়ুয়া। ওই হাসপাতাল বৌবাজার থানার অন্তর্গত হওয়ায় সেখানেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৫০৬ (ভয় দেখানো), ৩২৩ (আঘাত করা) এবং ৪১৭ (প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ) ধারায় মামলাও রুজু করা হয়েছে। তবে ৩১ জুলাই দায়ের করা ওই এফআইআরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।

সোমবার এসএসকেএমে অভিযোগকারিণীর শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ। আজ, বুধবার আদালতে তাঁর গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষায় কেন এত দেরি হল? পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণী জানিয়েছিলেন, ওই থানার অন্তর্গত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা হলে প্রভাব খাটিয়ে রিপোর্ট বদল করতে পারেন অভিযুক্ত। তাই আইনি প্রক্রিয়ার পরেই এসএসকেএমে পরীক্ষা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতারই বাসিন্দা ওই তরুণীর দাবি, বছর দুয়েক আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ার সময়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় অভিযুক্তের। ধীরে ধীরে তাঁদের সম্পর্ক তৈরি হয়। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্তদের এক জন ওই অভিযুক্ত। তরুণীর দাবি, প্রথম কয়েক মাস সব ঠিক চললেও পরে নানা সূত্র থেকে ওই চিকিৎসক সম্পর্কে তিনি অভিযোগ পান। তরুণী মঙ্গলবার বলেন, “গত দুর্গাপুজোর পরে জানতে পারি, ওঁর সঙ্গে একাধিক মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয়। প্রভাব খাটিয়ে আমার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন শেষ করে দেওয়ার ভয় দেখান তিনি।” অভিযোগ, সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন ওই চিকিৎসক। পরে মেডিক্যাল কলেজের বয়েজ হস্টেলের ঘরে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তরুণীর।

অভিযোগকারিণীর দাবি, কলকাতার বাসিন্দা হওয়ায় হস্টেল তাঁর পাওয়ার কথা নয়। তবু প্রভাব খাটিয়ে মেডিক্যাল কলেজের দশতলা বয়েজ হস্টেলের ছ’তলার একটি ঘরে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে দেন ওই চিকিৎসক। তিনি থাকতেন একতলায়। তরুণীর অভিযোগ, গত মার্চের শেষে টানা তিন দিন হস্টেলে নিজের ঘরে তাঁকে বন্ধ রেখে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত। শেষে পুলিশের ১০০ নম্বরে ফোন করার হুমকি দিলে তিনি ছাড়া পান বলে দাবি। তরুণী বলেন, “খুন করার হুমকি দেওয়া হত আমায়। ব্যক্তিগত মুহূর্তের নানা কথা ওই চিকিৎসক বাইরে বলে বেরিয়েছেন। পুলিশে যাচ্ছি বলায় বিয়ে করার জন্য আইনজীবীর চিঠি পাঠানো হয়েছে।” প্রথমেই পুলিশ বা কলেজ প্রশাসনের অভিযোগ করলেন না কেন? তরুণীর দাবি, “ওই চিকিৎসক প্রভাবশালী। ভয় পেয়ে যাই। তা ছাড়া কলেজ প্রশাসন মিটিয়ে নিতেই বলত।”

তরুণীর আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে বা কর্মক্ষেত্রে এই ধরনের অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। উচ্চ পদমর্যাদার কারও বিরুদ্ধে অনেকেই মুখ খোলার সাহস করতে পারেন না। এই ছাত্রীর অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। পুলিশ নিশ্চয়ই গুরুত্ব বুঝে তদন্ত করবে।” তাঁর আরও দাবি, “অভিযোগ দায়েরের আগে দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তরুণী।”

অভিযুক্ত চিকিৎসককে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “ব্যাপারটি বিচারাধীন। শুধু বলব, আমার বদনাম করতে এই অভিযোগ করা হয়েছে।” তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, আপাতত অন্য পড়ুয়াদের বয়ান নথিভুক্ত করা হচ্ছে। বয়েজ হস্টেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। কোনও পক্ষই আমাদের কাছে আসেননি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy