দু’টি সেটের বদলে বেশির ভাগ স্কুলই এক সেট করে পোশাক পাচ্ছে। ফাইল ছবি
করোনাকালে দেওয়া হয়নি। কমবেশি দু’বছর পরে রাজ্যের সরকারি, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের যদিও বা স্কুলপোশাক দেওয়া শুরু হল, সকলের দু’সেট পোশাক জুটছে না বলে অভিযোগ। এবং এ বার আর স্কুলের নিজস্ব রঙের পোশাক নয়, সব স্কুলের পোশাকই নীল-সাদা। জামার কাপড়ে লাগানো হয়েছে বিশ্ববাংলা লোগো।
স্কুলপ্রধানেরা জানাচ্ছেন, দু’টি সেটের বদলে বেশির ভাগ স্কুলই এক সেট করে পোশাক পাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পোশাকের কাপড়ের মান এবং সেলাই সম্পর্কেও ইতিমধ্যে অভিভাবকদের থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করেছে।
হাওড়ার আমতার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিন্টু পাড়ুই জানান, স্কুলের সব পড়ুয়া এখনও পোশাক পায়নি। তাঁর কথায়, “খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বেশির ভাগ স্কুলে এক সেট করে পোশাক এসেছে।’’ কারও কারও পোশাকে কলারের নীচে বোতামের জায়গায় কাপড় ছেঁড়া। পিন্টুবাবুর বক্তব্য, এর থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে বরাদ্দের ৬০০ টাকা দিয়ে দিলে অভিভাবকেরা আরও কিছু টাকা বিনিয়োগ করে ভাল মানের পোশাক বানিয়ে নিতে পারতেন। আলিপুরদুয়ারের একটি স্কুলের শিক্ষক প্রসেনজিৎ রায় অবশ্য জানান, তাঁদের পড়ুয়ারা দু’সেট পোশাক পেয়েছে। কিন্তু অনেকের পোশাক মাপে হচ্ছে না। মাপ বদল করতে পোশাক দর্জিকে দিতে হচ্ছে।
দীর্ঘ অপেক্ষার পরে এক সেট করে পোশাক পেয়ে অনেকেই হতাশ বলে জানান পশ্চিম মেদিনীপুরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বেশির ভাগ স্কুলে এক সেট পোশাক এসেছে। পোশাকের মান নিয়েও অভিযোগ আছে। বছর শেষ হতে চলল। এত দিনে যদি এক সেট পোশাক আসে, তা হলে দ্বিতীয় সেট কবে আসবে?” কলকাতা ও আশপাশের অনেক স্কুলে এখনও পোশাক আসেনি বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ শিক্ষক। দক্ষিণ দমদম এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, প্রাথমিকের সব পড়ুয়ার জুতো পাওয়ার কথা। কিন্তু শুধু একটি শ্রেণির পড়ুয়ারা জুতো পেয়েছে। সকলে স্কুলব্যাগও পায়নি।
কিছু কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ধারণা, একসঙ্গে এত পোশাক বানানোর পরিকাঠামো নেই বলেই পোশাক আসতে এত দেরি হচ্ছে। দু’সেট পোশাক একসঙ্গে দেওয়া যাচ্ছে না। রাজ্য জুড়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি পোশাক বানানোর কাজ পেয়েছে। এমনই একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে কর্মরত প্রিয়াঙ্কা নস্কর বলেন, “কলকাতা পুরসভার চারটি ওয়ার্ডের স্কুলের পোশাক বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আশা করছি, ৩০ অগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব। কাপড় আসতে দেরি হওয়ায় দু’টি ওয়ার্ডের সব স্কুলে পোশাক পাঠাতে একটু দেরি হয়েছে।”
সর্বশিক্ষা মিশনের কর্তাদের দাবি, ৩১ অগস্টের মধ্যে সব স্কুলে পোশাক পৌঁছবে। মিশনের প্রকল্প অধিকর্তা শুভ্র চক্রবর্তী বলেন, “আগে এক সেট পোশাক দেওয়া হল। দ্বিতীয় সেটের পোশাক দ্রুত পৌঁছবে। পোশাকের মান নিয়েও সন্দেহ নেই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের অধীন সংস্থার থেকে কাপড়ের মান যাচাই করে পোশাকের কাপড়ের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy