ফাইল চিত্র।
শহরের বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কার ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অধীনে করতে চায় কলকাতা পুরসভা। সেই সঙ্গে ওই সংস্কার সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী আনতেও উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। সূত্রের খবর, বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কারে পুর আইনে সংশোধনী আনার প্রস্তাব পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। এ দিকে, ওই প্রকল্পে সংস্কারের কাজ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বছর ছয়েক আগে উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। আহত হন একাধিক। এর পরেও শহরে পর পর বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটতে থাকে। বছর তিনেক আগে বিল্ডিং আইনের ৪১২ নম্বর ধারা সংশোধন করে ৪১২এ ধারা আনা হয়। যেখানে বলা আছে, মালিক পুরনো বাড়ির সংস্কারে এগিয়ে এলে তাঁকে বাড়তি ছাড় দেওয়া হবে। ভাড়াটেরাও সংস্কার করতে পারেন। কোনও পক্ষই রাজি না হলে পুরসভা তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে সংস্কার করাবে। কিন্তু তা-ও বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে বাড়ির সংস্কারে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না বলে কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। তাই এ বার ৪১২এ ধারার সংশোধনী আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শহরে প্রায় পাঁচ হাজার বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। ৪১২ ধারা সংশোধন করার পরে এখনও পর্যন্ত ৬৮টি বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কার হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সংস্কারে রাজি হচ্ছেন না বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে। তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে বাড়ির সংস্কার করাতে গেলে বাড়িওয়ালারা মামলার হুমকি দিচ্ছেন।’’
সম্প্রতি টাউন হলে নতুন পুরবোর্ডের প্রথম মাসিক অধিবেশনে এই সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা। তিনি জানান, ওই ওয়ার্ডের পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিট, নিমতলা ঘাট স্ট্রিটে অনেক বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। সেগুলি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যার প্রেক্ষিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে একটা বিহিত করতেই হবে। বিল্ডিং আইনের ৪১২এ ধারা সংশোধনের প্রস্তাব পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে গিয়েছে।’’
কিন্তু ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের আওতায় কী ভাবে বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কার হবে, তা নিয়েই ধন্দে মালিকেরা। বিধান সরণি এলাকার একটি পুরনো বাড়ির মালিক সুজয় কুমার দে-র অভিযোগ, ‘‘৪১২এ ধারায় পুরসভা তৃতীয় পক্ষকে অর্থাৎ, প্রোমোটারকে দিয়ে সংস্কার করাতে চেয়েছিল। এটার ঘোরতর বিরোধী আমরা। এখন ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে সংস্কার করা মানে তো বাড়িগুলি সরকার অধিগ্রহণ করবে। আমাদের দাবি, বর্তমান বাজারদরের নিরিখে জমি ও বাড়ির দাম দিতে হবে সরকারকে। নয়তো আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।’’
‘দ্য ক্যালকাটা হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার রক্ষিত বলেন, ‘‘ধরে নিচ্ছি ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে সংস্কার হল, তা হলেও তো ভবিষ্যতে সেই প্রয়োজন হবে। তখন কী ভাবে হবে? তার থেকে বরং মনোযোগ দেওয়া হোক বাড়িভাড়া আইনের সংশোধনী আনার বিষয়ে। যাতে বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের মূল্য বাড়ানো যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy