থানাতে নেই সিসিটিভি ক্যামেরা, অমান্য শীর্ষ আদালতকে। প্রতীকী চিত্র।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, দেশের সব থানাকেই রাখতে হবে সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে। কিন্তু তার পরেও যে শহরের চারটি থানায় (আমহার্স্ট স্ট্রিট, কাশীপুর, টালা এবং সিঁথি) সিসি ক্যামেরা বিকল, তা নিয়ে এত দিন হেলদোলই ছিল না পুলিশের। কলকাতা হাই কোর্ট ৫ ডিসেম্বর রাজ্যের সব থানার সিসি ক্যামেরার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়ার পরে লালবাজার নড়েচড়ে বসায় বিষয়টি সামনে আসে। লালবাজার সূত্রের খবর, পরিস্থিতির পরিবর্তনে কলকাতার পুলিশ কমিশনার নতুন ক্যামেরা বসাতে দরপত্র ডেকেছেন।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নদিয়ায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে একটি মামলা হয়। তাতেই থানার সিসি ক্যামেরা বিকল থাকার বিষয়টি সামনে আসে। কিন্তু দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মানলে এমনটা হওয়ারই কথা নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, থানার প্রবেশপথে, মূল গেট চত্বরের সামনে, সেরেস্তায়, প্রতিটি লক-আপের ভিতরে ও বাইরে, লবিতে, করিডরে, রিসেপশনে, বারান্দায়, ইনস্পেক্টর বা ওসিদের ঘরে, সাব-ইনস্পেক্টর ও অফিসারদের ঘরে, ডিউটি অফিসারের ঘরে, শৌচাগারের বাইরে, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের ঘরে ও থানার পিছনে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। সেই নির্দেশ কেন অমান্য করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে সব থানার সিসি ক্যামেরার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করে। আগামী ১৭ জানুয়ারি ওই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন। সে দিন ওই রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা।
তাতেই কলকাতা পুলিশ এলাকাতেও থানার পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়। লালবাজার সূত্রের খবর, তখনই জানা যায় যে, আমহার্স্ট স্ট্রিট, কাশীপুর এবং টালার পাশাপাশি সিঁথির মতো অতীতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ ওঠা থানাতেও সিসি ক্যামেরা অকেজো। লক-আপ, সেরেস্তা এবং থানার প্রবেশপথের সিসি ক্যামেরাই মূলত কাজ করছে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিঁথি থানায় স্বামীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তুলেছিলেন এক প্রৌঢ়ের স্ত্রী। আদালত সে দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেয়ে পাঠায়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতেও থানায় জেরা চলাকালীন রাজকুমার সাউ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, মারধরের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক শকও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ২০১৫ সালে বড়তলা থানায় বন্দি থাকা ভূষণ দেশমুখ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় আদালতে তাঁকে পেশ করার দিন চারেক আগেই। বলা হয়েছিল, পেটের গোলমালে মৃত্যু হয় ভূষণের। কিন্তু ময়না তদন্তে জানা যায়, মৃত্যু হয়েছে মারধরে।
এ দিকে, তিন বছরের ব্যবধানে সিঁথি থানার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। সিসি ক্যামেরা লাগানো বাধ্যতামূলক করা এবং কী কী নিয়ম মেনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে, তা-ও জারি হয়। চলতি বছরের জুলাইয়েই শীর্ষ আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে থানাগুলিকে ক্যামেরায় ঘিরে ফেলা শুরু হয়। জানা যায়, প্রথম দফায় ২৪টি থানায় ৯১৬টি সিসি ক্যামেরা বসবে।
তার পরেও থানায় বিকল সিসি ক্যামেরা কেন? কলকাতা পুলিশের কোনও কর্তাই মন্তব্য করতে চাননি। লালবাজার শুধু জানিয়েছে, দরপত্র ডেকে দ্রুত ক্যামেরা বসানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy