(বাঁ দিকে) কফিনে করে নিয়ে আসা হচ্ছে নিহত শঙ্করমোহন দাসের দেহ। নিহত শঙ্করমোহন দাস (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
পছন্দের ট্রেনে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ফুলবাগানের শিবকৃষ্ণ দাঁ লেনের বাসিন্দা শঙ্করমোহন দাস অবশ্য বাড়িতেই ফিরলেন। তবে কফিনবন্দি হয়ে। মঙ্গলবার দুপুরে শঙ্করের দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবারই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তাঁর পরিবার-পরিজনকে সমবেদনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে মানিকতলা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডে।
রেলওয়ে মেল সার্ভিসের কর্মী শঙ্কর সোমবার ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে উঠে বাড়িতে ফোন করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, নিরাপদেই ট্রেনে উঠে গিয়েছেন। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নির্ধারিত সময়েই রওনা দিয়েছিল ট্রেনটি। তার পরই ঘটে বিপত্তি। নীচবাড়ি এবং রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। যে লাইন দিয়ে এক্সপ্রেস চলছিল, সে লাইনেই পিছন থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। ধাক্কার জেরে এক্সপ্রেসের একাধিক কামরা উঠে পড়ে মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপর। লাইনচ্যুত হয় মালগাড়ির কামরাও। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের এক জন হলেন শঙ্কর।
শঙ্করের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানান ফিরহাদ এবং সুপ্তি। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কলকাতার মেয়র। ফিরহাদ বলেন, “দেহ যানজটে আটকে ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দেহ নিয়ে এলাম। রেল দেহ ছেড়ে দিয়েই মুক্ত। রেলের কোনও আধিকারিক আসেননি। এর পরে যে দেহটি আসবে, সেটাও আমরাই নিয়ে আসব। রেলের দয়া চাই না।” শঙ্করের পরিবারও রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ তদন্ত করে দেখা হোক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলওয়ে মেল সার্ভিসের কর্মী শঙ্কর অবসর নেওয়ার পরেও কাজ করছিলেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই তাঁকে জলপাইগুড়ি যেতে হত। রবিবার ভোরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চেপেই নিউ জলপাইগুড়ি গিয়েছিলেন শঙ্কর। ফিরতি ট্রেনে ওঠার পরেই ঘটে দুর্ঘটনা। তাঁর পরিবারের তরফে কেউ উত্তরবঙ্গ বেড়াতে যাবেন শুনলে, শঙ্কর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করার পরামর্শ দিতেন। সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘার পার্সল ভ্যানে ছিলেন শঙ্কর। ওই কামরায় থাকা বাকিরা মোটের উপর সুস্থ থাকলেও মারা যান শঙ্কর। তাঁর পরিবার মনে করছে, শঙ্করের বুকে স্টেন্ট বসানো থাকায় দুর্ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁর হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে যায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ফোন করার চেষ্টা করে শঙ্করের পরিবার। যোগাযোগ করতে না পেরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যান নিহতের পুত্র। সেখানেই শঙ্করের দেহ শনাক্ত করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy